প্রতিবেদন : ইন্টারনেট প্রযুক্তি বিষয়ক একটি সংবাদ প্রতিবেদন

ইন্টারনেট প্রযুক্তির ওপর একটি সংবাদ প্রতিবেদন রচনা করো।


বিশ্বযোগাযোগ ও ইন্টারনেট


স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা : বিশ্বযোগাযোগ ব্যবস্থার ইন্টারনেট অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধন করেছে। ইন্টারনেট হচ্ছে, নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেটকে নেটওয়ার্কের রাজাও বলা হয়। 'World wide electronic network' হিসেবে ইন্টারনেট আজ চরম বিস্ময়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কী না করা যায়। ইচ্ছে করলে প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে যখন তখন খবর আদান প্রদান করা যায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আপনি ভাবছেন - সুপার মার্কেটে কোনো পণ্যের অর্ডার দেবেন কিংবা কোনো পণ্যের অনুসন্ধান করবেন, এ কাজটিও আপনি সেরে ফেলতে পারেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আপনি ইচ্ছে করলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এও জেনে নিতে পারেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত সবচেয়ে বড় 'লাইব্রেরি অব কংগ্রেস' এ আপনার কাঙ্ক্ষিত বইটি আছে কি না! ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো খেলা বা বিমানের টিকেট ক্রয় ও সংরক্ষন করতে পারেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব কাজ আপনি ঘরে বসে একেবারে কম সময়েই সেরে ফেলতে পারেন। বিদেশি কাউকে বিয়ে করবেন? ইচ্ছে করলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি তাও করতে পারেন। নিঃসন্দেহে এটি একদিকে বিস্ময়কর, অন্যদিকে একটি আমুদে ঘটনা। আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে এই যে, 'ওয়ান স্টপ ওয়েব পেইজে' প্রতিটি বিয়েই আবার সরাসরি সম্প্রচার করা সম্ভব। এরকম ঘটনা সম্প্রতি অনেক ঘটছে।

একটা সময় ছিল যখন বিশ্বের কোনো দেশ থেকে খবর আনা-নেয়া করতে লাগে যেত দিনের পর দিন, সেখানে ইন্টারনেট তথ্য পাঠাতে কিংবা এনে দিতে পারছে চোখের পলকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা সংস্কৃতির সব ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট বিপ্লব এনেছে। বর্তমানে দূরশিক্ষণে ইন্টারনেট যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে। কোনো একটি দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া মুহূর্তের মধ্যেই অন্য একটি দেশ জানতে পারছে। এমনকি কোনো শিক্ষার্থী কোনো একটি বিষয় বুঝতে না পারলে, ইন্টারনেটের বদৌলতে আই আর সি-র মাধ্যমে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নিতে পারছে। আই আর সি এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে যা কিছু বুঝে নিচ্ছে, সেজন্যে কাগজ-কলমের প্রয়োজন নেই। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাক্তারগণ জটিল রোগ নির্ণয় করতে পারছেন। এমনকি রোগীর চিকিৎসা, রোগীর নিরাময় করতে পারছেন ইন্টারনেটে। রয়েছে বিনোদনের হরেক রকম আয়োজন। এর মাধ্যমে খেলা, সিনেমা দেখা, গান শোনা যায়।

ইন্টারনেটের কিছু অপকারিতা এবং বিপদও রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য পাচার হয়ে যায়, অনেক সময় এর মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে জুয়া খেলা, পর্নো ছবি দেখা ইত্যাদির প্রসার বাড়ছে। কম্পিউটারে ভাইরাস বা অশালীন কিছু যাতে না আসে, সেজন্য বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে তা সংরক্ষন করা যায়। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের গোপন ও মূল্যবান তথ্য যাতে কম্পিউটার হ্যাকাররা চুরি করতে না পারে, সেজন্য তা উপযুক্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে সংরক্ষন করা যায়। আমরা জানতে পেরেছি যে, কিছুদিন আগে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রেরিত গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছিল। উপযুক্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে তথ্য না সংরক্ষন করলে এমনটি হতে পারে, আবার এমনও হতে পারে দূতাবাসের কেউ তথ্য ফাঁস করে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের দেশে বাংলাদেশ ইন্টারনেট কমিটি গঠিত হয়েছে। ইন্টারনেটকে জনপ্রিয় করে তোলাই হচ্ছে এর উদ্দ্যেশ। এ কমিটি বাংলা কী-বোর্ডের জন্যে একটি আদর্শ কোড তৈরি করবে, শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার ঘটবে, VSAT দিয়ে সরাসরি ইন্টারনেট আনার ব্যবস্থা করবে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে 'Edu-internet' এর আওতায় আনা জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। 

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক 'ইন্টারনেট ওয়ার্ম' নামক ভাইরাসের সংক্রমন ঘটতে দেখা যায়। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এমনটি হয়েছিল। ভাইরাস বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে - তথ্য ধ্বংসকারী এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম।

ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে হলে দরকার কম্পিউটার, মডেম, টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার। ফাইবার অপটিক্স, নিজস্ব শক্তিশালী কম্পিউটার, কিংবা স্যাটেলাইটের (VSAT) মাধ্যমে দেশ বিদেশের বিভিন্ন ইন্টারনেট সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। এজন্যে অবশ্য মাসিক বা ব্যবহৃত সময়ের ভিত্তিতে চার্জ দিতে হয়।


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post