মার্চের দিনগুলি

বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য বাংলা / বিদায়ী ভাষণ - PDF - Audio - Video

তোমার স্কুলের SSC/HSC পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায় সম্ভাষণ বক্তব্য রচনা কর।


বক্তব্যটি কিভাবে উপস্থাপন করতে হবে তা শুনুন

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 

কি বলিব হায় 
বলার তো ভাষা নাই। 
তবুও আজ
ফেলিয়ে লাজ
বলতে হবে।
সবাইকে সহজ সরল পথে
সততার সাথে 
চলতে হবে। 
আর একটি কথা মনে মনে বলতে হবে 
অসৎ হলে রাত্রি দিন
সোনার খাটেও নিদ্রাহীন
এবং সৎ হলে শূন্য খাটে 
চিন্তা বিহীন রাত্রি কাটে। 

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু। 

সর্বপ্রথম প্রধান শিক্ষক মহাশয় ও সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকা মন্ডলীকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। আমার সহপাঠী বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা, ভাই ও বোনদের জন্য আমার উষ্ণ অভ্যর্থনা। 

আজকের এই মঞ্চে বক্তৃতা দিতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত ধন্য মনে করছি। সত্যি সত্যি আজকের দিনটা আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। কিন্তু ঠিক এই মুহুর্তে আমি যেমন আবেগপ্রবণ হচ্ছি, ঠিক তেমনি এক দুর্বলতা আমাকে যেন ঘিরে ধরছে। কেউই চায় না যে তার স্কুল জীবনের সমাপ্তি ঘটুক, যেহেতু এটা কারোর জীবনে সবচেয়ে সেরা সময় হিসেবে বিবেচিত হয়।

কেউই তার স্মৃতিবিজড়িত স্কুলের দিনগুলি ছেড়ে যেতে চায় না। কিন্তু ঠিক তখনই হঠাৎ মনে পড়ে— 

"Time and tide waits for none" 
"সময় এবং স্রোত কারোর জন্য থেমে থাকে না" 

তাই আমাদের অবশ্যই সম্মুখ পানে অগ্রসর হতেই হবে, যেহেতু আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে।

স্কুল জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে ভালোবাসা, সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য হেড স্যারের পাশাপাশি সমস্ত স্যার ও ম্যাডামদের আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি খুব নিশ্চিত যে তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া জীবনের অমূল্য শিক্ষা আমাদেরকে সফলতার সিঁড়ি আরোহন করতে সাহায্য করবে।

আসলে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, ছাত্র-ছাত্রী, বড় ও ছোট ভাই বোন বন্ধুরা একে অপরের প্রতি খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং একে অন্যের সহায়ক ছিলাম। এই বিশেষ সম্পর্ক ও বন্ধন যেটা আমরা একে অপরের সাথে শেয়ার করেছি সেটা সারাজীবন ধরে আমাদের হৃদয়ের প্রাঙ্গণে গেঁথে থাকবে এবং আমরা অবশ্যই সবসময়ের জন্য কাটানো এই সমস্ত সুন্দর মুহূর্তগুলো স্মরণ করতে থাকবো।

কেউ কখনো জীবনে বিদায় দিতে কিংবা নিতে চাই না কিন্তু এটাই জীবনের চরমতম সত্য একটি ব্যাপার। তাই এই বিষয়টিকে খুব হালকাভাবে নেওয়া উচিত যেহেতু এই বিদায়ের মাধ্যমেই আমরা এক নতুন জগতে প্রবেশ করব। আমাদের খুব বেশি আবেগপ্রবণ না হয়ে বরং খুশি হওয়া উচিত যেহেতু আজকের দিনের মাধ্যমে আমরা অদৃশ্য কে দেখার এবং অজানাকে জানার সুযোগ অর্জন করব।

জানি আজকের এই দিন বেদনার দিন 
তাইতো বেদনাবিধুর কন্ঠে
বারংবার বেজে ওঠে 
তোমাদের বিদায়বেলায় 
কেঁদে ওঠে প্রাণ
ছিড়ে যায় হৃদয় বীণা
সুরের যত তান। 
সুরের তানকে তো আর
বাঁন দিয়ে রাখা যাবে না 
যাচ্ছ আপন নীড়ে 
জানি আর আসবে না ফিরে 
যেখানেই থেকো ভালো থেকো। 

পরিশেষে আমি আবারো সমস্ত শিক্ষক - শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোনদের তাদের সীমাহীন সহযোগিতা, দয়া ও ভালোবাসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আজকে এ পর্যন্তই আবারও হয়তো জীবনের কোন এক মুহূর্তে কোন এক রঙ্গিন ঘটনার সাক্ষী থাকবো আমরা সবাই মিলে। 

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।
----হুজাইফা


একই ভাষণ আবার সংগ্রহ করে দেওয়া হলো


‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’

‘ক’ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ২০২০ সালের এস,এস,সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাননীয় সভাপতি, প্রধান অতিথি, উপস্থিত সম্মানিত অন্যান্য অতিথিবৃন্দ, শিক্ষক, অভিভাবক এবং মঞ্চের সামনে উপস্থিত আমার বড় ভাই - বোন ও স্নেহের ছোট ভাই এবং বোনদের সকলকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল হতে জানাই অত্যন্ত ভালোবাসা, অভিনন্দন ও সালাম – "আসসালামু আলাইকুম"

অত্যন্ত দুঃখ ও অনেক ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ আমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া হয়তো সম্ভব নয়। তিন অক্ষরের ছোট্ট একটি শব্দমাত্র – বিদায়। মাত্র তিন অক্ষর। কিন্তু শব্দটির আপাদমস্তক যেন বিষাদে ভরা। শব্দটা কানে আসতেই মনটা কেন যেন বিষণ্ণ হয়ে ওঠে। এমন কেন হয়? কারণ এই যে,বিদায় হচ্ছে বিচ্ছেদ। আর প্রত্যেক বিচ্ছেদের মাঝেই নিহিত থাকে নীল এক বেদনার ছাপ! কষ্ট। সে-ই যে জন্ম লগ্ন থেকে বিদায়ের সূচনা, তারপর জীবন পথের বাঁকে বাঁকে প্রতিটা অধ্যায়ে শুরু হয় বিদায়ের পর্ব। আর প্রতিটা ক্ষেত্রেই এই বিদায় যেন অনিবার্য হয়ে আসে...।

দোলনায় দোল খেতে খেতে কিংবা
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে ওঠা আমাদের
শৈশবের কিছুই মনে নেই। নদীর পাশে সেই প্রাইমারি স্কুলটা হয়তো আজো আছে কিন্তু আমি নেই সেখানে। স্কুল জীবনটা যে কিভাবে শেষ হয়ে গেল টের-ই পেলাম না। হারালাম অনেক বন্ধুকে! হারালাম শৈশবের কত প্রিয় আর পরিচিত মুখ। মনে পড়লে বুকের ভেতর কেমন যেন খা খা করে। আজ-ই সম্মুখিন ঠিক সেইরকম এক বিদায়ের। মন চাইছে না তবু বলতে হচ্ছে —

"যেতে হবে বহুদূর
তাই এই ছেঁড়া বাধন
বিরহ-ব্যথা কাতর মনে
রয়েছে হাসি আর কাঁদন
আজ ছেড়ে চলেছে সকল
সকল মায়া সুশাসন
সম্মুখে দাঁড়িয়ে দিতে
বিদায়ী ভাষণ!!"

শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী, আপনাদের বিরক্ত হতে দেখিনি কখনো। একজন মালি কতটা আঘাত সহ্য করে একটা ভালো চারা উৎপাদন করে আর একজন শিক্ষক কতো অনায়াসেই সেটা করে শুধু সমাজে ভালো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য। আজ আমরা সকলে সম্মানিত শিক্ষকদের কাছে আমাদের অতীত জীবনের সেইসকল বিরক্তিকর আচরণের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। একজন মনিষী বলেছেন –
"The mediocre teacher tells, the good teacher explains, the superior teacher demonstrates, the great teacher inspires."
আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সম্পর্ক বলতে গেলে সেরাটাই বলতে হয়। হয়তো এতেও কমতি রয়ে যাবে। থেকে যাবে তাদের অপ্রাপ্তি। সত্যি বলতে জাতির সেরা মানুষ তৈরির কারিগর শিক্ষকদের কোনো তুলনা হয়না। তারা এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।

সম্মানিত অভিভাবক আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রথমে এই যে – আপনারা এমন সুন্দর একটা অনুষ্ঠানে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন শেখার জগতে জ্ঞানী-গুণী মানুষের সাথে মেশার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আমরা নিজ নিজ অভিভাবক কে হারিয়ে আর পেয়েছিলাম ভালো কিছু কর্তা। তাইতো বিদায় শব্দতা ব্যবহার করতে চাইছিনা। তবুও আজ যখন আমরা বিদায় নামক এক শব্দের কাছে বন্দী হয়ে গেছি তখন বলতেই হয়—

SSC বিদায় অনুষ্ঠানের ভাষন / বক্তব্য

প্রিয় অগ্রজ, যারা আমাদের কে সারাক্ষণ সঠিক পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব পালন করেছে তাদের প্রতি থাকলো চিরকৃতজ্ঞতা। অনেক সময় না বুঝে ভুল করেছি। আবার কখনো ইচ্ছাকৃত দোষ করেছি মনের কোনো অজানা ক্ষোভে কিংবা নিছক আনন্দ পাওয়ার জন্য কখনো অনা অহেতুক কোনো কাজ করেছি যা বেয়াদবির সামিল। আপনারা ছিলেন আমাদের আলোকবর্তিকা স্নেহ ভালোবাসার প্রকৃত উদাহরণ। আপনাদের সুশাসন মনে পড়বে বারে বারে। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা ও আপনাদের মত স্বপ্ন শিখরে উঠতে পারি।

আজ অপূর্ণ থেকে গেল সেই ইচ্ছেটি সাম্যের ছবি আঁকা নয়, এক সাথে থাকার ইচ্ছা। চলার পথে দীর্ঘ পথচলা যখন, তখনতো ছোটখাটো ভুলত্রুটি থাকতে-ই পারে। আজ সকল ভেদাভেদ ভুলে গেয়ে তোমাদের নিকট ক্ষমার হাত বাড়িয়ে দিলাম। আর তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম। যদিও ছোটদের ভুল বলে কিছু নেই থাকবেও না।

একটি কথা বলতে হয় আমার বিদায়ী সহপাঠী এবং সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে। এই প্রতিষ্ঠান আমাদের যা দিয়েছে তা অপূরণীয়। তাই জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে ভালো কিছুর চেষ্টা অবশ্যই থাকবে এবং সেইসব ভালোর মধ্য দিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পাবে। তাই জীবনের সবক্ষেত্রেই নিজেকে সেরাটা দিতে দ্বিধা করো না।

পরিশেষে, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, অভিভাবক, ছোট ভাই-বোন, বড় ভাই-বোনসহ সকল শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা আমাদের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

আগামী দিনের সাফল্যের জন্য দোয়া প্রার্থী। আমরা সবাই যেন আশানুরুপ ফলাফল অর্জন করতে পারি।

সর্বোপরি আমরা আমাদের প্রিয় মানুষগুলোর ইচ্ছা পূরণ করতে পারি। দেশ ও দশের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে পারি।

মহান প্রতিপালক রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা জীবনের সর্বাবস্থায় তিনি যেন আমাদের সকলকে ভালো রাখুন আর পূর্ণতা পাক আমাদের সকল চাওয়া পাওয়া এই বলে আমি বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।

----আজিবুল হাসান




5 Comments

  1. those were great...keep on doing good works...that was really helpful...

    ReplyDelete
  2. MashaAllah khob sondor laglo...
    ...Thank you...
    1 /হুজায়ফা
    2 /আজিবুল হাসান

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post