বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচন - প, ফ


পটল তোলা (ফেল করা বা মারা যাওয়া) – এভাবে মূলধন অপচয় করলে শীঘ্রই ব্যবসায়ে পটল তুলতে হবে।

পুঁটি মাছের প্রাণ (ক্ষীণ প্রাণ) – প্রজা জমিদারকে বললো, ‘আমাদের পুঁটি মাছের প্রাণ, আমাদের মারবেন না।’

পথের কাঁটা (গমনে বাধা) – আমার বিদেশ গমনে আমার পিতাই একমাত্র পথের কাঁটা।

পগার পার (পলায়ন) – খুনী এক্ষণে পগার পার হয়ে গেছে, ধরা মুশকিল।

পেটের কথা (মনের কথা) – বড্ড কঠিন লোক, ওর পেটের কথা বের করা কি সহজ?

পেটের শত্রু (যে সন্তান মায়ের দুঃখের কারণ) – এত কষ্ট করে মানুষ করলাম যাকে, বিয়ে করে সে পর হয়ে গেল, এমন পেটের শত্রু কারো হয়?

পেটে খেলে পিঠে সয় (লাভের জন্য কষ্ট সহ্য করা) – সে খেতে পায় বটে কিন্তু প্রচুর অত্যাচার সহ্য করতে হয়, পেটে খেলে তো পিঠে সইবে।

পেটে এক মুখে আর এক (কুটিল আচরণ) – বাবা-মায়ের সঙ্গে অন্তত পেটে এক মুখে আর এক করতে নেই।

পেটে পেটে বুদ্ধি (দুষ্ট বুদ্ধি) – শয়তানের পেটে পেটে এত বুদ্ধি।

পেটে ভাতে (শুধু আহার) – পেটে ভাতে কাজ করো তো আমার বাড়িতে থাকো।

পালের গোদা (সর্দার) - চুনোপুঁটিরাই ধরা পড়ে, আর যারা পালের গোদা তাদের টিকিটি দেখার যো নেই।

পাথরে পাঁচ কিল (উন্নত অবস্থা) – ব্যবসায়-বাণিজ্য করে সে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছে, এখন তার পাথরে পাঁচ কিল।

পুকুর চুরি (বেপরোয়া চুরি) – শাসন দণ্ড শিথিল হলেই কর্মচারীরা পুকুর চুরি করতে সাহস পায়।

পোয়াবারো (সৌভাগ্য) – সাহেব বাড়িতে না থাকলেই ছেলেপিলেদের পোয়াবারো হয়ে থাকে।

পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা (অন্যকে দিয়ে কাজ হাসিল করা) – নিজে উপার্জন না করলে পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া যার অভ্যাস তার আর লজ্জা কি?

পেটে বোমা মারলেও কিছু বের না হওয়া (কোনো বিদ্যা না থাকা) – ছেলে অকাট মূর্খ, পেটে বোমা মালেও কিছু বের হবে না।

পাততাড়ি গুটান (দ্রব্যসামগ্রী গুছিয়ে বাঁধা ও তোলা) – তুমি কেমন দোকানদার যে, এক বছরের মধ্যে লোকসান দিয়ে পাততাড়ি গুটালে?

পই-পই করে (বারবার) – সেখানে যেতে পই-পই করে নিষেধ করা হয়েছে।

পটের বিবি (সেজেগুজে বসে থাকে এমন বিলাসী ও নিষ্কর্মা মেয়ে) – পটের বিবি হয়ে বসে থাকলে চলবে না, কাজে হাত দাও।

পারের কড়ি (পরকালের জন্য সঞ্চিত সম্বল) – এ সুনামটুকুই আমার পারের কড়ি। আর কীই বা আছে?

পুঁটিমাছের প্রাণ (অতি ক্ষীণজীবী লোক) – একটু পরিশ্রমেই আমাদের পুঁটিমাছের প্রাণ যেন যায় যায়।


ফোঁড়ন দেয়া (উত্তেজনাকর টিপ্পনী কাটা) – ঝগড়া-ঝাটি তো ওদের ভাইয়ে ভাইয়ে, তার মধ্যে ফোঁড়ন দেয়া অনুচিত।

ফপর দালালি (গায়ে পরে মধ্যস্থগিরি) – আমাদের উকিলে উকিলে কথাবার্তার মধ্যে তোমাকে আর ফপর দালালি করতে হবে না।

ফাঁপা ঢেঁকির শব্দ বড় (ভেতরে যার কিছু নেই, তার বাইরের শব্দ কিছু বেশি রকম) – স্কুলের দেউড়ি পার না হলে কি হবে, তার মুখের ইংরেজি বুলি বেশ বড়, কারণ ফাঁপা ঢেঁকির শব্দ বড়।

ফতো নবাব (নবাবী চালের দরিদ্র ব্যক্তি) – ওয়ারেশকে দেখে চিনতে পারলে না? সে একজন ফতো নবাব, আসলে ফাঁপা।

ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যাওয়া (অল্পতেই ক্লান্ত হওয়া) – গাফ্ফারকে দিয়ে এ কাজ কি করে হবে, সে তো ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়।

ফাঁদে পা দেয়া (ষড়যন্ত্রে পড়া) – না বুঝে ফাঁদে পা দিয়েছ ভায়া, এখন ঠ্যালা সামলাও।

ফেঁপে ওঠা (বড়লোক হওয়া) – পয়সা এখন কন্ট্রাক্টরদের হাতে, দেখছো লোকটা অল্পদিনের মধ্যেই কেমন ফেঁপে উঠেছে।

ফেন দিয়ে ভাত খায় গল্প মারে দই (মান রাখার জন্য আসল কথা গোপন করে মিথ্যা প্রচার) – সব দেশেই এক শ্রেণির লোক আছে যারা নিঃস্ব কিন্তু ফেন দিয়ে ভাত খায় গল্প মারে দই।

ফাঁটা-কপাল (মন্দভাগ্য) – যা আমার ফাঁটা কপাল, তাতে কোনো আশাই করি না।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post