মার্চের দিনগুলি

বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচন - হ


হস্তিমূর্খ (বোকা) – তোমার মতো হস্তিমূর্খ লোক এমন সাহসের কাজ করতেই পারে না।

হরিষে বিষাদ (আনন্দে দুঃখ) – ঘরের লেলিহান অগ্নিশিখার ভেতর থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করা গেলেও উদ্ধারকর্তার মৃত্যুতে হরিষে বিষাদ উপস্থিত হলো।

হাত পাকান (দক্ষতা) – কেবল ত স্কুলে পড়ছো, এখনই নকল বিদ্যায় বেশ হাত পাকিয়েছ দেখছি।

হাতের পাঁচ (শেষ সম্বল) – হাতের পাঁচ ঐ একশত বিশ টাকা ছিল তাও চোরাবাজারে কাপড় আনতে শেষ হলো।

হাতির পাঁচ পা দেখা (দুঃসাহসী হওয়া) – আমার ছেলে তুমি, আমাকে মান না, হাতির পাঁচ পা দেখছে।

হাড় জুড়ানো (শান্তি পাওয়া) – শেষমেষ মরে দিয়ে বৃদ্ধ গাঁ সুদ্ধ মানুষের হাড় জুড়িয়েছে।

হাতে কলমে (যথার্থ কাজ করে) – হাতে কলমে শিক্ষাই তো প্রকৃত শিক্ষা।

হিতে বিপরীত (উল্টা ফল) – ছেলেটাকে উপদেশ দেয়ার ফলে আরো বেশি উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠল, এ যে হিতে বিপরীত হলো।

হাড়-হাভাতে (হতভাগ্য) – যোগ্য পিতার পুত্র যদি এমন হাড়-হাভাতে হয়, তবে এটা বড়ই দুঃখের বিষয়।

হাঁড়ির হাল (মলিন) – রোদে-পানিতে ভিজে চেহারাটি করেছ হাঁড়ির হাল।

হালে পানি পায় না (অকৃতকার্য হওয়া) – বড় বড় মহারথী হালে পানি পায় না আর উনি দেবেন সমস্যা সমাধান করে, হাসালে ভায়া হাসালে।

হ্রস্ব-দীর্ঘ জ্ঞান (সাধারণ জ্ঞান) – অকাট মুর্খ বলেই তো তোমার মতো হ্রস্ব-দীর্ঘ জ্ঞানের ছেলের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, সবেই আমার নসিব।

হাতটান (চুরির অভ্যাস) – চাকরটির একটু হাতটান আছে, ঘরের জিনিসপত্র সাবধানে রেখো।

হাতির খোরাক (বেশি খোরাক) – এত বড় সংসারের হাতির খোরাক যোগানো আমার পক্ষে অসম্ভব।

হীরের টুকরো (বুদ্ধিমান ও সৎ) – কাইয়ুম সাহেবের ছেলেটি হীরের টুকরো, সে বংশের মুখোজ্জ্বল করেছে।

হ-য-ব-র-ল (বিশৃঙ্খলা) – যা বলতে চাও তা পরিস্কার করে বলো, নইলে তোমার ঐ হ-য-ব-র-ল উক্তি কোনো কাজেই লাগবে না।

হাড়হদ্দ (নাড়ী নক্ষত্র) – কালকের ছোকরা আলতাফ, আমারই ওপর চোখ রাঙায়, আমি ওর হাড়হদ্দ জানি।

হাত ধরা (বশীভূত) – হাত ধরা লোক হলেই বা কি, এমন কাজ আমাকে দিয়ে হবে না।

হাতে পাঁজি মঙ্গলবার (জানার সুযোগ থাকতেও বৃথা তর্ক) – বৃথা তর্কাতর্কি না করে হাতে পাঁজি মঙ্গলবার, পুস্তকখানি খুললেই তো সব পরিস্কার হয়ে যাবে।

হাতে জল না গলা (অতিশয় কৃপণ) – মোড়লের কাছে গিয়ে লাভ নেই, ভাই তার হাতে জল গলবে না।

হাত দিয়া হাতি ঠেলা (অসম্ভবকে সম্ভব করতে চেষ্টা করা) – হাত দিয়ে হাতি ঠেলার মতো দুরাশা আমি করি না।

হাড়ে হাড়ে চেনা (মর্মান্তিকভাবে পরিচয় জানা) – অফিসের বড়কর্তাকে সকলে হাড়ে হাড়ে চেনে, কেননা তার দাপটে তারা অস্থির থাকে।

হালছাড়া (হতাশ হওয়া) – পরীক্ষায় পাসের আশা নেই দেখে আবুল হোসেন হাল ছেড়ে দিয়েছে।

হাড়ে বাতাস লাগা (শান্তি পাওয়া) – ডাকাত দলটি ধরা পড়েছে জেনে সবার হাড়ে বাতাস লেগেছে।

হাত ঝাড় দিয়ে পর্বত (ধনাধিক্য) – কিছু সাহায্য দাও বাবা, তোমার তো হাত ঝাড়া দিলেই পর্বত।

হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা (সুযোগ হেলায় হারানো) – দুর্দিনে চাকরিটি নিলে না, হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেললে, এখন পস্তাও।

হাড়ে দূর্বা গজানো (আলসেমির লক্ষণ) – কাজকর্ম কিছু করবে নাকি, বসে থাকলে যে হাড়ে দূর্বা গজাবে।

হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গা (গোপন কথা ফাঁস করা) – খবরদার, আমার পিছে লেগো না, যদি লাগ তা হলে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেব কিন্তু বলে দিচ্ছি।

হেস্তনেস্ত (মীমাংসা) – তুমি ভেবেছ কি, কালই আদালতে গিয়ে ব্যাপারটার হেস্তনেস্ত করে ছাড়ব।

হতচ্ছাড়া (লক্ষ্মীছাড়া) – আমাকে এখানে বসিয়ে রেখে হতচ্ছাড়া ছেলেটা গেল কোথায়?

হম্বিতম্বি (তর্জন-গর্জন) – সময়মতো টাকা দিতে পারিনি বলে সেদিন তার সে কি হম্বিতম্বি!

হরিঘোষের গোয়াল (নিষ্কর্মা ও অলস লোকদের কোলাহলপূর্ণ আস্তানা) – ওদের বাড়িতে গিয়ে কাজের কাজ কিছু হবে না, ও তো একটা হরিঘোষের গোয়াল।

হাঁটুর বয়স (খুব কম বয়স) – তুমি পারলে না, ঐ হাঁটুর বয়সের ছেলেটা পারল কি করে?

হাত-পা পেটের মধ্যে ঢোকা (অত্যন্ত ভীত হওয়া) – কথা বলব কি, তখন ভয়ে আমার হাত-পা পেটের মধ্যে ঢুকে যাবার জোগাড় হচ্ছিল।

হাপিত্যেশ করা (গভীরভাবে ও দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রত্যাশা করা) – এক কাপ চায়ের জন্য কখন থেকে হাপিত্যেশ করে রয়েছি।

হামবড়া ভাব (অহঙ্কার) – ওদের আর সবই ভালো, কেবল একটা হামবড়া ভাব আছে।

হিমসিম খাওয়া (নাস্তানাবুদ হওয়া) – ঘরে বাইরে এত কাজ সামলাতে গিয়ে ভদ্রলোক একেবারে হিমসিম খেয়ে যাচ্ছেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post