ব্যাকরণ : সমাস

সমাস

সমাস মানে সংক্ষেপ, মিলন, একাধিক পদের একপদীকরণ। অর্থসমন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের এক সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।

যেমন:
দেশের সেবা — দেশসেবা
বই ও পুস্তক — বইপুস্তক
নেই পরোয়া যার — বেপরোয়া

বাক্যে শব্দের ব্যবহার সংক্ষেপ করার উদ্দেশ্য নিয়ে মূলত সমাসের সৃষ্টি হয়েছে। সমাস দ্বারা দুই বা ততোধিক শব্দের সমন্বয়ে নতুন একটি অর্থবোধক পদ তৈরি হয়। এটি শব্দ তৈরি ও প্রয়োগের একটি বিশেষ রীতি। সমাসের রীতি সংস্কৃত হতে বাংলায় এসেছে। তবে খাঁটি বাংলা সমাসেরও অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়। সেগুলোতে আবার সংস্কৃতের নিয়ম খাটে না।

সমাসের প্রতীতি পাঁচটি। এগুলো হচ্ছে: সমস্তপদ, পূর্বপদ, পরপদ, ব্যাসবাক্য ও সমস্যমান পদ।

> সমাসের প্রক্রিয়ায় সমাসবদ্ধ বা সমাসনিষ্পন্ন পদটির নাম – সমস্ত পদ

> সমস্ত পদ বা সমাসবদ্ধ পদটির অন্তর্গত পদগুলোকে সমস্যমান পদ বলে।

> সমাসযুক্ত পদের প্রথম অংশ (শব্দ) কে 'পূর্বপদ' এবং পরবর্তী অংশ (শব্দ) কে 'পরপদ বা উত্তরপদ' বলে।

> সমস্ত পদকে ভেঙে যে বাক্যাংশ করা হয়, তার নাম সমাসবাক্য, ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য। উদাহরন—
বিলাত – ফেরত রাজকুমার সিংহাসনে বসলেন।
এখানে, বিলাত – ফেরত, রাজকুমার ও সিংহাসন— এ তিনটি হল সমাসবদ্ধ পদ। এগুলোর গঠন:

বিলাত হতে ফেরত, রাজার কুমার, সিংহ চিহ্নিত আসন – এগুলো হলো ব্যাসবাক্য। এইসব ব্যাসবাক্যে 'বিলাত', 'ফেরত', 'রাজা', 'কুমার', 'সিংহ', 'আসন', হচ্ছে এক একটি সমস্যমান পদ। আর বিলাত–ফেরত, রাজকুমার এবং সিংহাসন সমস্ত পদ।বিলাত, রাজা ও সিংহ হচ্ছে পূর্বপদ এবং ফেরত, কুমার ও আসন হল পরপদ।

সমাস প্রধানত ছয় প্রকার:

[দ্বিগু সমাসকে অনেক ব্যাকরণবিদ কর্মধারয় সমাসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ কর্মধারয় সমাসকে তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এদিক থেকে সমাস আবার মূলত ৪ প্রকার হয়ে থাকে।যথা: দ্বন্দ্ব, তৎপুরুষ, বহুব্রীহি ও অব্যয়ীভাব। এসব ছাড়াও আবার প্রাদি, নিত্য, উপপদ ও অলুক ইত্যাদি কয়েকটি অপ্রধান সমাস রয়েছে।নিচে সেগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।]

Related Links
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post