দ্বিগু সমাস
  
  
    পূর্বপদে সংখ্যাবাচক পদ ও উত্তরপদে বিশেষ্য বাচক পদে যে সমাস হয়। এখানে সমাহার
    বা সমষ্টি বোঝাবে।
  
  
    >> কয়েকটি দ্বিগু সমাসের উদাহরণ <<
  
  চতুরঙ্গ = চার অঙ্গের সমাহার
  ত্রিপদী = ত্রি পদের সমাহার
  সপ্তাহ = সপ্ত অহের (দিবস) সমাহার
  চৌরাস্তা = চৌ (চারি) রাস্তার মিলন
  তেমোহনা = তিন মোহনার মিলন
  শতাব্দী = শত অব্দের সমাহার
  ত্রিফলা = তিন ফলের সমাহার
  ত্রিকাল = তিন কালের সমাহার
  ত্রিপদী = তিন পদের সমাহার
  পসুরি = পাঁচ সেরের সমাহার
  নবরত্ন = নব (নয়) রত্নের সমাহার
  সপ্তর্ষি = সপ্ত ঋঝির সমাহার
  ষড়ঋতু = ছয় ঋতুর সমাহার
  তেমাথা = তে (তিন) মাথার সমাহার
  অষ্টধাতু = অষ্ট ধাতুর সমাহার
  সাতসমুদ্র = সাত সমুদ্রের সমাহার
  তেরনদী = তের নদীর সমাহার
  পঞ্চনটী = পঞ্চ নদীর সমাহার
  
    পঞ্চভূত = পঞ্চভূতের (ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপাদানসমূহ) সমাহার
  
  পঞ্চনদ = পঞ্চ নদীর সমাহার
  অন্যান্য সমাস আলোচনা
১। অলুক সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
      যে সমাসে কখনো পূর্বপদে বিভক্তি লোপ হয়না। অলুক সমাস কোনো স্বতন্ত্র সমাস নয়,
      যে কোনো শ্রেণির সমাস অলুক হতে পারে। উদাহরণ:
    
    যুধিষ্ঠির = যুদ্ধে স্থির যে
    তেলেভাজা = তেলে ভাজা যা
    পরাৎকার = পর হতে পর
    ২। নিত্য সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
      যে সমাসে সমস্যমান পদগুলো সবসময় একসঙ্গে থাকে, ব্যাসবাক্য হয় না, তাকে
        নিত্য সমাস বলে। নিত্য সমাস কোনো স্বতন্ত্র সমাস নয়।ব্যাসবাক্য না থাকলে
        অন্য শ্রেণীর সমাসকেও নিত্য সমাস বলে। উদাহরণ:
    
    
          কাঁচাকলা (ব্যাসবাক্য: এক রকমের কলা যা কাঁচা অবস্থাতেই খাওয়া হয়);
        
        গ্রামান্তর = অন্যগ্রাম;
        
          কৃষ্ণসর্প = এক জাতীয় সাপ যা কৃষ্ণ কালো (কালো);
        
        গৃহান্তর = অন্যগৃহ;
        দর্শনমাত্র = কেবল দর্শন;
        
          কালসাপ = বিষাক্ত কাল (যম) তুল্য সাপ;
        
        বিরানব্বই = দুই এবং নব্বই
        
          আমরা = সে তুমি ও আমি ( 'আমরা' একশেষ দ্বন্দ্বসমাসও হয়)
        
        ৩। প্রাদি সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
          প্র, পরা ইত্যাদি উপসর্গ পূর্বপদে বসে যে তৎপুরুষ সমাস হয়। প্র +আদি =
          প্রাদি। অব্যয়ীভাব সমাস ও প্রাদি সমাস এক পর্যায়ভুক্ত।ব্যাসবাক্য নেই বলে
          প্রাদি সমাসকে নিত্য সমাসের অন্তভুক্ত করা হয়ে থাকে। যেমন:
        
        অনুতাপ = অনু (পশ্চাৎ) তাপ
        উদ্বেল = উৎ (উৎক্রান্ত) বেলা
        ৪। সুপসুপা সমাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
          এই সমাস বাংলা নয়, সংস্কৃতে আলোচ্য।সংস্কৃত ব্যাকরণে সু, ঔ, যস্ প্রভৃতি
          বিভক্তির নাম সুপ্।  বিভক্তিযুক্ত পদকে সুবন্ত পদ বলে। একটি সুবন্ত
          পদের সঙ্গে আর একটি সুবন্ত পদের যে সমাস হয় অর্থাৎ বিভক্তিযুক্ত নামপদের
          সঙ্গে বিভক্তিযুক্ত অন্যপদের যে সমাস হয় তাকে সুপসুপা বা সহসুপা সমাস
          বলে।বাংলায় তৎপুরুষ বা কর্মধারয় পর্যায়ে কিছু এ ধরনের সমাস আছে। উদাহরণ:
        
        ভূতপূর্ব > পূর্বে ভূত;
        পূর্বগত > পূর্বে গত;
        
          প্রত্যক্ষদৃষ্ট > প্রত্যক্ষে দৃষ্ট
        
        ৫। ছদ্মবেশী সমাস কাকে বলে?
          প্রথমে জেনে রাখুন– বাংলা ব্যাকরণে ছদ্মবেশী সমাস বলে কিছু নেই। কোনো
          কোনো সমাসের সমস্তপদ অতি ব্যবহারে খুবই ছোট/সংক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।এমন হয়ে
          যায় যে এদের চেনাই কঠিন হয়ে পড়ে।এই ধরনের সমাসকে অনেকে ছদ্মবেশী সমাস
          বলে। উদাহরণ:
        
        অঘ্রান, বাসর, আমানি, পোলাও।
        অঘ্রান এসেছে অগ্রহায়ণ থেকে;
        বাসর এসেছে বাসগৃহ থেকে;
        আমানি এসেছে অম্লান থেকে
        ৬৷ একই পদের বিভিন্ন সমাস হতে পারে; উদাহরণ?
          পীতাম্বর (কৃষ্ণ অর্থে) > পীত অম্বর যাঁর (বহুব্রীহি)
        
        কিন্তু,
        
          পীতাম্বর (পীতবর্ণ বস্ত্র অর্থে) > পীত যে অম্বর (কর্মধারয়)
        
        আবর,
        
          গরমিল > মিল নেই যাতে (বহুব্রীহি) কিন্তু
        
        
          গরমিল > মিলের অভাব (নঞ্চ তৎপুরুষ / অব্যয়ীভাব)