সম্প্রতি পড়া একটি বই সম্পর্কে দুই বন্ধুর সংলাপ

সম্প্রতি পড়া একটি বই সম্পর্কে দুই বন্ধুর কথোপকথন রচনা করো।


কেয়া : শুভ সকাল শিলা।

শিলা : শুভ সকাল। কেমন আছ কেয়া?

কেয়া : এইতো ভালো। তুমি কেমন আছ?

শিলা : ভালো। জানো কেয়া, অসাধারণ একটি উপন্যাস পড়লাম গতকাল।

কেয়া : কোন উপন্যাস?

শিলা : লালসালু।

কেয়া : ও তাই? এটাতো আমিও পড়েছি। চমৎকার উপন্যাস।

শিলা : সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ কী চমৎকারভাবে ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভণ্ডামির চিত্র তুলে ধরেছেন দেখেছ?

কেয়া : তবে আক্কাসের ভূমিকা কিন্তু প্রশংসনীয়।

শিলা : আর জমিলার?

কেয়া : ও তো অতুলনীয়। মজিদ তথা অন্ধ সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে জমিলাইতো একমাত্র প্রতিবাদী চরিত্র।

শিলা : তবে খালেক ব্যাপারীর বড় স্ত্রী আমেনার জন্য খুব খারাপ লেগেছে।

কেয়া : ওই বদমাশ মজিদের কূটকৌশলের কারণেইতো আমেনার এই পরিণতি হলো।

শিলা : আর খালেক ব্যাপারী বুঝি এর জন্য দায়ী নয়?

কেয়া : অবশ্যই দায়ী। গ্রামের বিত্তশালী ও প্রভাবশালী হয়েও মজিদের প্রতি তার আনুগত্য দেখে অবাক হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে, বল?

শিলা : হ্যা, তা তো বটেই। তবে সর্বোপরি উপন্যাসটা কিন্তু কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের জন্য শক্তিশালী হাতিয়ার।

কেয়া : তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন আরেকটা নতুন উপন্যাস পড়ছি ‘সূর্যদীঘল বাড়ি’৷

শিলা : নাম শুনেছি বইটার। পড়িনি। দিওতো আমাকে।

কেয়া : অবশ্যই দেব।

শিলা : তোমাকে ধন্যবাদ শিলা।

--- এই সংলাপটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেওয়া হল ---

সুমন : কী রে মাসুদ, কেমন আছিস? তোর হাতে ওটা কী বই?

মাসুদ : আছি তো ভালোই। গিয়েছিলাম বইমেলায়। আর এটা ‘শওকত ওসমানের রচনাসমগ্র’।

সুমন : খুব ভালো বই। আমি ‘শওকত ওসমানের রচনাসমগ্র’ সম্পূর্ণ পড়েছি, তবে এর মধ্যে একটি উপন্যাস আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

মাসুদ : কোনটি বল তো? তাহলে সেটিই আগে পড়ব।

সুমন : সেটা হলো ‘ক্রীতদাসের হাসি’। বাস্তবিকই এত ভালো লেগেছে পড়তে!

মাসুদ : তাহলে আমিও এটা প্রথমে পড়ব। বইটি সম্পর্কে কিছু বল তো।

সুমন : ‘ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাসে লেখক রূপকের আড়ালে তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসকের মুখোশ উন্মোচন করেছেন চমৎকারভাবে।

মাসুদ : একটু পরিষ্কার করে বল।

সুমন : শোন, তৎকালীন পাকিস্তানের শাসক আইয়ুব খান ছিল স্বৈরাচারী। বিশেষ করে বাঙালিদের ওপর সে নানা অত্যাচার, অবিচার ও শোষণ চালাত। দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারত না। যার জন্য ঔপন্যাসিক প্রতীকের আশ্রয় নিয়ে রূপকের আড়ালে রচনা করলেন ‘ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাস।

মাসুদ : চরিত্র সম্পর্কে কিছু বল।

সুমন : এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বাগদাদের খলিফা হারুনর রশীদ, যে কিনা স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের প্রতিনিধি। নায়ক চরিত্র হলো হাবসী গোলাম তাতারী এবং নায়িকা মেহেরজান। যদিও মেহেরজানের উপস্থিতি উপন্যাসের অতি অল্প স্থান জুড়ে রয়েছে।

মাসুদ : তাতারীকে কিসের প্রতীক করেছেন লেখক?

সুমন : তাতারী হলো অত্যাচারিত, শোষিত জনগণের প্রতিনিধি।

মাসুদ : অন্যান্য চরিত্র সম্পর্কে কিছু বল।

সুমন : অন্যান্য চরিত্রের মাঝে রয়েছে বুসায়না, যে কিনা বাগদাদ নগরীর সেরা নর্তকী এবং খলিফার হাতের পুতুল। আরও আছে কবি নওয়াস, জল্লদ মশরুফ। কবি ইসহাক প্রমুখ চরিত্র উপন্যাসের কাহিনির প্রয়োজনে ঔপন্যাসিক সৃষ্টি করেছেন।

মাসুদ : ধন্যবাদ বন্ধু। আমি অবশ্যই বইটি পড়ব। আজ আসি।

সুমন : তোকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকিস।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post