প্রতিবেদন : কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবাধে কাঠ চুরি

কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবাধে কাঠ চুরি বিষয়ক একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।


কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবাধে কাঠ চুরি


স্বাগত ঘোষ : কক্সবাজার : কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার মূল্যবান কাঠ প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে। সংঘবদ্ধ কাঠ চোররা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে বনাঞ্চলে প্রবেশ করে কাঠ কেটে নিয়ে গেলেও কেউ প্রতিবাদ অথবা বাধা দেওয়ার সাহস পায় না। চোরদের একেকটি দলে ১০/১৫ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার থাকে। তারা অভিনব কৌশলে নদী ও সাগর পথসহ সড়ক পথে এসব চোরাই কাঠ পাচার করছে। চোরাই কাঠের শতকরা ১৫ ভাগও বন কর্মচারীদের পক্ষে আটক করা সম্ভব হয় না প্রয়োজনীয় সংখ্যাক লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্রের অভাবে। কাঠ চোরদের আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে থ্রি-নট-থ্রি মডেলের পুরনো রাইফেল ও বন্দুক দিয়ে বন কর্মচারীরা তাদের মোকাবিলা করার সাহস পায় না। কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৬টি বনরেঞ্জ অফিসের অধীনে শতাধিক বনকর্মচারী আছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিত্যন্ত কম। প্রায় আড়াই লাখ একর বন এলাকা এ স্বল্প সংখ্যাক বন কর্মচারীর পক্ষে আটক করা সম্ভব নয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এছাড়া উল্লেখিত বন এলাকায় ৯৫টি বৈধ অবৈধ করাতকল রয়েছে। এক শ্রেণির অসাধু বন কর্মচারীরা প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এসব করাতকলে রাতের অন্ধকারে শত শত ঘনফুট চোরাই কাঠ ফাঁড়াই করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। বর্ষা মৌসুমে কাঠ পাচারকারীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।

চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রথম থেকে গত তিন মাস এ অঞ্চল থেকে অর্ধ কোটি টাকার কাঠ পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। ঈদগড়, কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, ভমরিয়াঘোনা, ফাসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খোটাখালী, উখিয়া, ইনানী, টেকনাফ, রেজু ও হোয়াই-কং এলাকার বনাঞ্চল থেকে গত কয়েক মাসে কম করে হলেও ২কোটি টাকার কাঠ চুরি হয়ে গেছে। এদিকে ১০ই এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে স্থানীয় বিশেষ টাস্কফোর্সে ও বন কর্মচারীরা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় এবং প্রায় ৫০ লাখ টাকার চোরাই কাঠ উদ্ধার এবং ১০/১৫ টি অবৈধ করাত কল উচ্ছেদ করেছে বলে বন অফিসসূত্রে জানা গেছে। একই সূত্রে থেকে জানা যায়, বনের কাঠ চুরি বিষয়ক প্রায় ৩ সহস্রাধিক মামলা নিষ্পত্তিহীন অবস্থায় ঝুলে আছে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post