মাদকাসক্তির কুফল সম্পর্কে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্যে পত্র

মাদকাসক্তির কুফল সম্পর্কে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্যে সম্পাদক বরাবর একটি আবেদন পত্র লেখো।


১৫ই জুন, ২০১৮

সম্পাদক
ভোরের কাগজ
৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভিন সড়ক
মালিবাগ, ঢাকা। 

জনাব,
আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকা 'ভোরের কাগজ' এক নিরন্তর ও নিরলস ভূমিকা পালন করে চলেছে। বরাবরের মতো এবারও নিমোক্ত জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পত্রটি প্রকাশ করলে কৃতজ্ঞ থাকবো।

বিনয়াবনত
কামাল শিকদাফ
সোনাখালী, চাকুরিয়া, সাভার।

চাই মাদকমুক্ত সুস্থ জীবন

'স্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক অধিকার' - স্লোগানটি আজ নীতিকথায় পর্যবসিত। সুস্থ জীবনের চেতনা বিসর্জন চলছে জীবাণুযুদ্ধ, রাসায়নিক যুদ্ধ। নেশাযুদ্ধ তার সসর্বশেষ সংস্করণ। নেশার কবলে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে মানুষ, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়। অমিত প্রতিভার এ যুব সম্প্রদায়কে নিয়ে চলছে বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র। সুকৌশলে তাদের হাতে নেশাবস্তু ধরিয়ে দিয়ে একটা স্বার্থান্বেষী মহল জাতির মেরুদণ্ড বিনিষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মৃতকল্প, অসাড় করে দেয়ার অশুভ লক্ষ্যকে একটি মহল দেশের সর্বত্র নেশাদ্রব্যকে অবাধলভ্য করতে গড়ে তুলেছে সুবিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেশার ছোবলে ঝুঁকছে হাজারো প্রাণ, ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কবলে। দাবানলের মতো তা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর-শহরতলিতে, গ্রাম-গ্রামান্তরে।

নেশার জগতেও ঘটছে নানা রূপান্তর। এসেছে কোকেন, এলএসডি, ইয়াবা আর হেরোইন। মাদকের মধ্যের সবচেয়ে প্রাচীন হলো 'আফিম'। আফিম থেকে 'মরফিন বেস'। আর আফিম থেকেই বিশেষ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হচ্ছে সর্বনাশা হিরোইন। বাংলাদেশের হিরোইন আজ সব মাদককে ছাড়িয়ে গেছে। বস্তির ঝুপড়ি ঘরে নিরাপদে চলছে হেরোইনের পুরিয়া বিক্রির মহড়া। দেদারসে তা গ্রহণ করছে যুবসমাজ। হারিয়ে ফেলেছে স্বাভাবিক বোধ-বিশ্বাস। নেশামাত্রই স্নায়ুকে দুর্বল করে দেয়। নিঃশেষ করে দেয় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা। ক্রমশ ভোঁতা হয়ে আসে ওদের মেধা-মনন ও প্রজ্ঞাচেতনা। এদের ক্ষিধে নেই, ঘুম নেই, সময়ের বোধ নেই। একটি দেশের নতুন নেতৃত্বকে সমূলে ধ্বংস করা এবং নৈতিক অধঃপতন ঘটানোর জন্যে এ এক গভীর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে গড়ে উঠেছে 'আন্তর্জাতিক ড্রাগ স্মাগলিং নেটওয়ার্ক'। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে খুন, রাহাজানি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ।

এমন অবস্থায় দেশ ও জাতিকে এ দুরারোগ্য মরণব্যাধি নেশার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি প্রচেষ্টায় জনমত গড়ে তুলতে হবে। পুলিশের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের অধীনে একটি স্বতন্ত্র সেল গঠন করতে হবে। মাদক চোরাচালান কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। চোরাকারবারিদের স্বর্গরাজ্য আস্তানাসমূহে সর্বশক্তি নিয়ে আঘাত হানতে হবে। এজন্যে চাই সকলেরই উদার মানসিকতা, সহযোগিতা, সমন্বিত উদ্যোগ এবং সামাজিক সচেতনতা।

কামাল শিকদার
চাকুলিয়া, সাভার।

1 Comments

  1. সুন্দর উপস্থাপন

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post