৯ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : হিসাব বিজ্ঞান : ৬ষ্ঠ সপ্তাহ : ২০২১

৯ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : হিসাব বিজ্ঞান
৬ষ্ঠ সপ্তাহ

“হিসাব বিজ্ঞান মানুষের মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” এই সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লেখ। (অনুর্ধ্ব-২৫০ শব্দ)

সংকেত :
ক. ভূমিকা
খ. হিসাব বিজ্ঞানের ধারণা
গ. হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য
ঘ. হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি
ঙ. সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাব বিজ্ঞানের সম্পর্ক
চ. হিসাব বিজ্ঞান ও মূল্যবোধ
ছ. হিসাব বিজ্ঞান ও জবাবদিহিতা
জ. উপসংহার

নমুনা সমাধান

৪ জুন, ২০২১

বরাবর
প্রধান শিক্ষিকা
চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

বিষয় : “হিসাববিজ্ঞান মানুষের মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে”।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং সি.স.পা.উ.বি ০৪ জুন তারিখ অনুসারে জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা নিয়ে তুলে ধরছি, একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন।

”জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা”

ভূমিকা : ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থ সম্পর্কিত ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এ সকল ঘটনার সংখ্যা অগণিত ও বৈচিত্র্যময়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল ব্যতীত এ সকল আর্থিক ঘটনার সামগ্রিক ফলাফল ও প্রভাব জানা কঠিন। হিসাববিজ্ঞান হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সংঘটিত আর্থিক ঘটনাসমূহের সামগ্রিক প্রভাব এবং ফলাফল নির্ণয়ের পদ্ধতি ও কৌশল আলোচনা করা হয়।

হিসাব বিজ্ঞানের ধারণা : হিসাববিজ্ঞানকে “ব্যবসায়ের ভাষা” বলা হয়। হিসাব বিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী, প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থান জানা যায়। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় ও নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়। 

হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য :
হিসাববিজ্ঞানের উদেশ্যসমূহ তুলে ধরা হলো :
১। হিসাব বিজ্ঞানের প্রথম উদ্দেশ্য লেনদেনসমূহকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিকভাবে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করো।
২। এটির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপন করা।
৩। ব্যয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করা।
৪। যথাযথ হিসাবরক্ষণের মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধের পাশাপাশি তা নিয়ন্ত্রণ করা।
৫। প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানাস্বত্তের সঠিক নির্ণয়।

হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি :
প্রাচীন কালে মানুষ বিভিন্ন হিসাব গাছের বাকলে, গুহায় ও পাথরে চিহ্ন দিয়ে রাখত। পরে কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ শুরু হলে ঘরে দাগ কেটে ও রশিতে গিঁট দিয়ে ফসল ও মজুদের হিসাব রাখা শিখল। ধীরে ধীরে সমাজ বিস্তার লাভ করে, বিনিময় প্রথা চালু হল, মুদ্রার প্রচলন হয় ও ব্যবসায় বাণিজ্য শুরু হয়। ১৪৯৪ সালে লুকা প্যাসিওলি একটি গ্রন্থ লিখেন ও হিসাবরক্ষণের মুলনীতি ”দুতরফা দাখিলা” উপস্থাপন করেন।

সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাববিজ্ঞানের সম্পর্ক : সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে সমাজ পরিবর্তন হয়। হিসাব বিজ্ঞান শুধু মুনাফা নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার হয় না। মুনাফা নির্ণয়ের পাশাপাশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সমাজ এবং পরিবেশের যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, হিসাববিজ্ঞানকে সেদিকটিতে আবদান রাখতে হয়। যেমন : পরিবেশ দূষণ রোধে অর্থ খচর করা, পণ্য তৈরিতে স্বাস্থ্যস্বম্মত কাঁচামাল ব্যবহার করা ইত্যাদি।

হিসাব বিজ্ঞান ও মূল্যবোধ :
১। সততা ও দায়িত্ববোধ বিকাশে (দুর্নীতি, জালিয়াতি সম্পদ ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ) হিসাব বিজ্ঞান রাখে।
২। হিসাববিজ্ঞান ঋণগ্রহীতার মধ্যে ঋণ পরিশোধের সচেতনতা সৃষ্টি করে। তাদের মূল্যবোধ জাগ্রত করে।
৩। হিসাব বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের সঠিক আয় ও ব্যয় নির্ণয় করা সম্ভব ফলে কর ফাঁকি হ্রাস পায়।

হিসাববিজ্ঞান ও জবাবদিহিতা :
১। হিসাব বিজ্ঞানের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীন জবাবদিহিতা সম্পন্ন হয়।
২। মালিক, ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের নিকট জবাবদিহিতা (প্রতিষ্ঠানের সঠিক, পূর্ণাঙ্গ আর্থিক চিত্র তুলে ধরা) করা যায়।
৩। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন নিয়মনীতি যতাযথভাবে পালন করে প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে কিনা ও কর পরিশোধ করা হচ্ছে কিনা তার জন্য যথাযথ হিসাবরক্ষণের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

উপসংহার : হিসাব বিজ্ঞানের একটি তথ্যব্যবস্থা হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নতির সাথে হিসাববিজ্ঞানের উন্নয়ন সম্পর্কিত। ফলে সময় ও ক্রম লাঘবের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সহজ হয়।


আরো দেখুন :

৬ষ্ঠ সপ্তাহের নমুনা সমাধান :

সকল সপ্তাহের এবং সকল শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট পেতে ক্লিক করুন
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post