প্রতিবেদন : মাদক ব্যবসা চলছে অবাধে

‘মাদক ব্যবসা চলছে অবাধে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।


মাদক ব্যবসা চলছে অবাধে


যশোর প্রতিনিধি : যশোর বাংলাদেশের একটি সীমান্তবর্তী জেলা শহর। সম্প্রতি এখানে চলছে অবাধে ফেন্সিডিল ও মাদক ব্যবসা। মাদক সেবিরা ছিনতাই ও ছিঁচকে চুরিতে সর্বস্বান্ত করছে শহরসহ এলাকাবাসীকে। সাম্প্রতিক সময়ে যশোরের সর্বত্রই ফেন্সিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যের ব্যবসা অবাধে চলছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ-মাদকদ্রব্য এটি নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় পুলীশ প্রশাসনের যোগসাজশে প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে এ ব্যবসা। এটি নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকজন গডফাদার। অনুসন্ধান করে জানা গেছে, জেলা শহরে উঠতি বয়সের তরুণদের একটি অংশ এ নেশার জগতে পা দিয়ে ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে। অনেক অভিভাবক তাঁর মাদকাসক্ত সন্তানকে পুলিশের হাতেও তুলে দিতে কুন্ঠা করছে না। শহরের বারিন্দাপাড়া বস্তিতে প্রকাশ্যে পুলিশের নাকের ডগায় বিক্রি হয় গাঁজা ও হেরোইন। তাছাড়া শহরের দড়াটানা রোডের একটি বাড়িতে প্রতিদিন বসে হেরোইন বিক্রির বাজার। ঐ বাড়ি থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ, ডিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় মাস্তান প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মাসোহারা পেয়ে থাকে বলে সূত্রমতে জানা গেছে।

যশোর মণিহার সিনেমা হল এলাকার ফেন্সিডিল বিক্রির কথা সবার জানা থাকলেও এ কাজে বাধা দেয়ার কেউ নেই। এখান থেকে গোটা দক্ষিণবঙ্গের ফেন্সিডিলের বাজারও নিয়ন্ত্রণ হয় বলে জানা গেছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, বেনাপোলে সীমান্ত এবং সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য দেশে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। এসব অবৈধ মাল প্রথমে সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েকটি চিহ্নিত স্থানে গুদামজাত করা হয়, পরে সুযোগ বুঝে তা বাজারে ছাড়া হয়।

মাঝে মাঝে কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো কিছু অভিযান চালালেও আসলে তা আই-ওয়াশ মাত্র। ঐসব অভিযানে ৭০/৮০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে চালান দেওয়া হয় ভাড়াটিয়াদের কাছে। কিন্তু গডফাদাররা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় মাঝে মাঝেই জেলার মাদক ব্যবসার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে সংশ্লিষ্ট সরকারি এজন্সিগুলো মাসোহারা বাড়ানোর সুবিধা হয় মাত্র।

যশোর জেলায় বর্তমানে অস্বাভাবিক চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিঁচকে চুরি ও অন্যান্য চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অপরাধের পশ্চাতে মূলত মাদকদ্রব্যই দায়ী। মাদকদ্রব্যের বা নেশার টাকা জোগাড় করতে অনেক ভালো পরিবারের সন্তানরাও চাঁদাবাজি, চুরিচামারিতে লিপ্ত হচ্ছে। আশাংকা করা হচ্ছে, অবিলম্বে এ পরিস্থিতি যদি সামাল দেয়া না যায় তাহলে সামাজিক অবস্থার যে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post