ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে তোমার সঞ্চিত অভিজ্ঞতা

ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে তোমার সঞ্চিত অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও।



ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। ছিনতায়ের গল্প আমি অনেক শুনেছি। কিন্তু নিজে কখনো ছিনতাইকারীর কবলে পড়িনি। নিজে কখনো কারো জিনিস ছিনতাই হতে দেখিনি। তাদের চেহারা আকৃতি কেমন তাও জানতাম না। এবার প্রথম ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অভিজ্ঞতা হল।

রিক্সায় যাচ্ছিলাম আদাবর। বড় আপা ওখানে নতুন বাসা ভাড়া নিয়েছে। আমাকে বিশেষভাবে যেতে বলেছে, তাই যাচ্ছি। শ্যামলী দিয়ে আদাবরের দিকে রিকশা ঢুকেছে। কিছুদূর যেতেই দুজনে এগিয়ে সে রিক্সার গতিরোধ করল। রিক্সাওয়ালা প্রতিবাদ করতেই একজন বড় একটা ধারালো ছুরি বের করে রাগত স্বরে বলল- "শব্দ করলে একদম পেটের মধ্যে হান্দাইয়া দিমু।" আর একজন আমার রিক্সায় কাছে এসে এমন ভাবে কথা বলতে শুরু করল যে, মনে হল আমার সাথে তার বহুদিনের পরিচয়। সে আমাকে বলল, 'ভাইয়া, তুমি ভালো আছো?' এদিকে কোথায় যাবে? আমি ধরে জবাব দিচ্ছি তার প্রশ্নের। আবার প্রশ্ন-তুমি কি কলেজ পাশ করে গেছ? রেজাল্ট কেমন হলো? আমি 'না' সূচক শব্দ করলাম। এবারে আমার আপত্তি সত্ত্বেও আমার পাশে বসলো। বল্টুর হাতে কি আছে তা দেখেছো তো? এবার এখানে হাতটা দাও (আমার হাত ধরে তার কোমরের রাখা পিস্তলের বাঁটে ছোঁয়াল) কিছু বুঝলে? হ্যাঁ, মনে হলো পিস্তল। এখন লক্ষ্মী ছেলের মত পকেটের যা আছে দিয়ে দাও, তাড়াতাড়ি করো, আমাদের হাতে একদম সময় নেই। একজন রিকশাওয়ালা কে রিক্সাটা সাইড করতে বলল।

আমি কি করবো বুঝতে পারছিনা। কান্না পাচ্ছে। আমাকে রিকশা থেকে টেনে নামিয়ে কষে একটা চড় দিলো। তারপর পকেটে হাত দিয়ে ৩০০ টাকা আর মোবাইলটা নিয়ে নিল। আমি চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলাম। ওরা আমার মুখ চেপে ধরে রিকশা উঠিয়ে দিলো। বলল চিৎকার করলে একদম ভুড়ি বের করে দেব। তারপর গলির মধ্যে ঢুকে মুহূর্তের মধ্যে উধাও হয়ে গেল। আমি কাঁদছিলাম। রিক্সাওয়ালা দরদী গলায় বলল- 'কাইন্দেন না, কোন দিকে যাবেন কন, আমি পৌঁছাইয়া দিমু।' আপার নির্দেশমতো গিয়ে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে রিকশা ভাড়া দিলাম। তারপর আপার কাছে সব খুলে বললাম। আপা ভয় পেয়ে কাঁদতে লাগল। আমরা দুজনেই কিছুক্ষণ কাঁদলাম।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post