অনুচ্ছেদ : মাদকাসক্তি

মাদকাসক্তি


বর্তমানে বিশ্ব যে কয়টি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন তার মধ্যে মাদকাসক্তি অন্যতম। এর ব্যবহার ও অবৈধ বিস্তারে বিশ্ববাসী শঙ্কিত। মাদকদ্রব্য হচ্ছে সেসব বস্তু যা গ্রহণের ফলে স্নায়বিক বৈকল্যসহ নেশার সৃষ্টি হয়। সুনির্দিষ্ট সময় পরপর তা সেবনের আসক্তি অনুভূত হয়। এর কুপ্রভাব ভয়াবহ ও মারাত্মক। আমাদের দেশেও মাদকের ভয়াবহতা সাংঘাতিক। আমাদের দেশে যেসব মাদকদ্রব্যের সেবন সর্বাধিক তা হচ্ছে- গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, মদ, বিয়ার, তাড়ি, ঘুমের ঔষধ, প্যাথেড্রিন ইনজেকশন, ইয়াবা ইত্যাদি। এসব মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে নেশা সৃষ্টি করাকে মাদকাসক্তি বলা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাদকাসক্তি হচ্ছে চিকিৎসা গ্রহণযোগ্য নয় এমন দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা ও তার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া। বিভিন্ন কারণে মানুষ মাদকাসক্ত হয়। এর মধ্যে সঙ্গদোষ, কৌতুহল, পারিবারিক কলহ, ধর্মীয় মূল্যবোধের বিচ্যুতি ও মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা উ।উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে যুবসমাজই মাদকাসক্তিতে সবচেয়ে বেশি আচ্ছন্ন। বিশ্বব্যাপী মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং চোরাচালানের মাধ্যকে এর ব্যাপক প্রসার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। মাদকের নিষ্ঠুর ছোবলে অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু তাজা প্রাণ এবং নষ্ট হচ্ছে বহু তরুনের সসম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারজনিত সমস্যা আজ বিশ্বব্যাপী। লাভজনক এ ব্যবসায়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক চোরাচালানি চক্র। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য মাদকাসক্তি নিরাময় ও প্রতিরোধ আন্দোলনে সকল জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সমাজকর্মীসহ সকল শ্রেণির মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে মাদকমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে।


একই অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেওয়া হলো


মাদক সাধারণত রোগ নিরাময়ে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু মানুষ এটাকে আমোদ অথবা ব্যথা থেকে মুক্তির জন্য অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করে। ক্ষতিকর মাদকের এ অপব্যবহারকে মাদকাসক্তি বলা হয়। মাদকাসক্তি আধুনিক সভ্যতার অভিশাপ। বর্তমানকালে এটা সমগ্র বিশ্বের সমস্যা। মাদকাসক্তি আমাদের দেশের যুব সমাজকে গ্রাস করেছে। যারা মাদক গ্রহণ করে তারা এটা বন্ধ করতে পারে না। মাদকে আসক্ত হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। কিছু লোক তাদের বেদনাদায়ক অতীত বা বর্তমান ভোলার জন্য মাদক গ্রহণ করে। আবার কেউ কেউ আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মাদক গ্রহণ করে। যুবকসমাজ প্রথমে মজা করার জন্য মাদক গ্রহণ করে, কিন্তু পরবর্তীকালে এটা নেশায় রূপান্তরিত হয়। মাদকাসক্তির পরবর্তী ফলাফল ভীষণ ক্ষতিকর ও মারাত্মক। মাদকাসক্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। তারা মানসিক ও শারীরিক শক্তি হারিয়ে ফেলে। তারা সামাজিক মর্যাদা এবং নিকটজনের ভালোবাসাও হারায়। সবাই তাদের অবহেলা বা ঘৃণা করে। নানা রোগ তাদের গ্রাস করে। তারা রক্তস্বল্পতা, অনিদ্রা, বমিভাব, শারীরিক দুর্বলতা, রক্তচাপ এবং অন্যান্য মারাত্মক রোগে ভোগে। তাদের ফুসফুস, কিডনি ও যকৃতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাদক ব্যয়বহুল। তাই, অর্থ যোগানোর জন্য আসক্ত ব্যক্তি চুরি, ছিনতাই, হত্যাসহ সব ধরনের খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। এজন্য, যেকোনো উপায়ে এটা থামানো উচিত। সামাজিক সচেতনতা জাগরণের মাধ্যমে মাদকাসপ্তি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। মাঝে মাঝে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলোচনা এবং বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। সরকার একা এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। জনগণের অবশ্যই সহযোগিতা করা উচিত। সর্বোপরি, ধর্মীয় নীতি এ ব্যাপারে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post