৮ম শ্রেণি : হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : ৭ম সপ্তাহ : অ্যাসাইনমেন্ট : ২০২১

‘বংশ মর্যাদা নয় কর্মই মানুষকে সমাজে প্রকৃত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিতত করে’ -তোমার সমাজের কয়েকজন মানুষের উদাহরণ দিয়ে এই মন্তব্যের পক্ষে / বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করো।

নমুনা সমাধান

'বংশ মর্যাদা নয় কর্মই মানুষকে সমাজে প্রকৃত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে'

আমার সমাজের কয়েকজন মানুষের উদাহারন দিয়ে যুক্তি উপস্থাপন করা হলো: 
সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকে সমানভাবে সৃষ্টি করেছেন। তবুও সকলের মাঝে বিশেষ কিছু তফাত রয়েছে। যা জাতভেদ প্রকাশ করে। তেমনি আমাদের সমাজেও চারটি বর্ণের মানুষ পরিলক্ষিত। যেমন: ব্রাক্ষণ, ক্ষত্রিয়, বৈষ্য ও শুধ্র। সমাজের যারা সবচেয়ে বেশি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন, জ্ঞান বুদ্ধিতে যারা সমাজের উচ্চস্তরে আসন গ্রহণ করে আছেন তাদের ব্রাক্ষণ বলা হয়। যারা যুদ্ধ শ্রেণির বা বংশ পরম্পরায় যারা সৈন্য বংশে জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের ক্ষত্রিয় বলা হয়। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বৈশ্য আর শ্রমজীবী সম্প্রদায়কে শূধ্য বলা হতো। এই যে বর্ণভেদ তা কিন্তু জন্মভেদে নয়, মানুষের কর্মে তার বর্ণভেদ হয়। মনুসিংহতায় থেকে জানা যায় য়ে সংসারের প্রয়োজন অনুসারে ব্রক্ষ্মা ব্রাক্ষ্মণকে নিজের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয়কে বাহু হতে, বৈশ্যকে উরু হতে এবং শূধ্যকে পদযুগল হতে সৃষ্টি করেছেন। সংসারের মঙ্গল স্বার্থে ব্রক্ষ্মা এদের কাজ বিভাজন করে দিয়েছেন। যেমন - ব্রাক্ষণদের কাজ ছিল শিক্ষাদান দেয়া, পুরোহিতি কাজ, প্রসাদ দান, পরামর্শ দান, নৈবেদ্য প্রদান ইত্যাদি। ক্ষত্রিয়দের কাজ দেশ রক্ষা করা,দেশের জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে সর্বদা নিয়োজিত থাকা। বৈশ্যের কাজ হলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায় বাণিজ্যে নিয়োজিত থাকা, কৃষি কাজ, গবাদি পশু লালন পালন, দান করা ইত্যাদি। শূধ্যের কাজ উচ্চ বর্ণের মানুষের মন জয় করে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করা। সংসারে কাজ সঠিক ভাবে সম্পাদানের জন্য যার যার দক্ষতা অনুসারে ব্রক্ষ্মা এই বর্ণভেদ তৈরি করেন।

আমার সমাজে নয়ন চাচা কুলফি আইসক্রিম বিক্রি করে। সে ছোট থেকে দেখে আসছি তিনি এই কাজ করছেন এবং সকলে তাকে অনেক সম্মান করে। তার কুলফি অনেক জনপ্রিয়। ছোট একটা দু চাকার গাড়ি নিয়ে তিনি কুলফি বিক্রি করেন। সব সময় পূজা আর্চনা করেন। বড়দের সম্মান এবং ছোটদের আদর ভালোবাসা দেন। একমাত্র মেয়েকে তার উপার্জিত অর্থ দ্বারা আইনজীবী পড়াচ্ছেন। শূধ্য সমাজের হলেও তিনি সকলের কাছে অনেক সম্মানের। অন্যদিকে পল্লব দাদু একজন ব্রাক্ষন সমাজের অধিপতি হলেও তিনি প্রতিনিয়ত মানুষ ঠকানোর কাজ করেন। সুযোগ পেলে অন্যের সমালোচনায় লিপ্ত হন। মেয়েদের বিরুদ্ধে সর্বদা কথা বলেন, অথচ যেখানে আমাদের ধর্মে মেয়েদের অধিক মর্যাদা দিয়েছেন। তাই বলা যায় যে বর্ণভেদ উচু নিচু দিয়ে হয় না, মানুষের কর্ম দিয়ে হয়। অর্থ দিয়ে বিচার করতে গেল সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে, বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। একে অপরের প্রতি সম্মান থাকবে না। তাই মানুষের কর্মে তার প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত।


আরো দেখুন :
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post