মার্চের দিনগুলি

৮ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : কৃষি শিক্ষা : ৬ষ্ঠ সপ্তাহ : ২০২১

৮ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : কৃষি শিক্ষা
৬ষ্ঠ সপ্তাহ

পল্লব যখন মামার বাড়িতে গিয়েছিল তখন কাজিনদের সাথে অনেক সুন্দর সময় কাটায় পল্লবের মামা কাজিনদের সহযোগিতায় বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ করেছেন। সেখান থেকে টমেটো, বেগুন, আলু, ডাটা নিজ হাতে তুলে এনে পল্লবকে টাটকা সবজির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। কিন্তু পল্লবের নজর এলো সবজি বাগানের কোন কোন গাছের পাতায় বাদামী ও কালো দাগ ফুটে উঠেছে, একটা বেগুন গাছ ঢলে পড়ে আছে এবং আলু গাছের পাতায় ঝলসানো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পল্লব উক্ত সমস্যাগুলো নিচের প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে কীভাবে সমাধান করতে পারে-

১। গাছের পাতা কেন ঝলসে যায়?
২। গাছের চারা কেন ঢলে পড়ে?
৩। গাছের পাতায় বাদামী, কালো বর্ণের দাগে গাছের কি ক্ষতি হয়?
৪। এ ধরণের পরিস্থিতি থেকে কীভাবে গাছের রোগ প্রতিরোধ করা যায়?

নমুনা সমাধান

১। গাছের পাতা কেন ঝলসে যায়?
পল্লবের মামাবাড়িতে সবজি বাগানের গাছের বাদামী ও কালো দাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে ছত্রাকজনিত রোগের কারণে। এসব দেখতে পানিতে ভেজার মতো মনে হয়। এসব দাগ ফসলের পাতায়, কাণ্ডে ও ফলের গায়ে নানা ধরনের দেখা যায়। এসব দাগের রং কালো, হালকা বাদামী, গাড় বাদামীও হয়ে থাকে। গাছের যে কোন অংশে এ রোগ হয়ে থাকে। এসব দাগ বিভিন্ন রোগের কারণে হয়। এদের ঝলসানো রোগও বলা হয়ে থাকে। এ রোগ প্রকোপ হলে গাছ মারাও যায়। এই রোগের প্রধান কারণ ছত্রাক। তাই এটি ছত্রাকজনিত রোগ।

২। গাছের চারা কেন ঢলে পড়ে?
পল্লব তার মামা বাড়িতে ঢলে পড়া যে বেগুণ গাছটি দেখে তা মূলত ছত্রাক জনিত রোগ। অনেক সময় ফসলের কাণ্ড ও শিকড় রোগে আক্রান্ত হলে ফসলের শাখাগুলো মাটির দিকে ঝুঁলে পড়ে। তাই এই অবস্থাকে ঢলে পড়া রোগ বলা হয়। ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। গাছের যেকোনো বয়সে এ রোগ দেখা যায়। এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণই ঝুলে পড়া বা ঢলে পড়া কিন্তু এর মাঝে অন্য কোন পোকামাকড় বা মাটিতে পানির অভাব দেখা পাওয়া যায় না। যখন ডগা ঝিমিয়ে পড়া শুরু করে তখন থেকে গাছটির মরণদশা শুরু হয় এবং গাছটি মারা যায় শুকিয়ে।


৩। গাছের পাতায় বাদামী, কালো বর্ণের দাগে গাছের কি ক্ষতি হয়?
গাছের পাতায় কালো ও বাদামী বর্ণের রং গাছের শরীরে ছত্রাক জনিত রোগ। এই রোগ গাছের মৃত্যুও ঘটায়। পল্লব তার মামার বাড়িতে গাছের শরীরে যে বাদামী ও কালো রঙের দাগ দেখতে পায় তা ছত্রাকের সংক্রমণে হয়ে থাকে। এমনকি গাছের ঢলে পড়াও ছত্রাক দ্বারা আক্রমনের কারণে হয়ে থাকে। ছত্রাক এমন এক জীবানু গাছের শরীরে পাশাপাশি মানুষের শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগ অনেকটা ছোঁয়াছে যা গাছের প্রতিটি শাখায় ছড়িয়ে গাছকে প্রাণহীন করে দেয়। তাই বলা যায় উদ্ভীদের ছত্রাকজনিত বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা যায়।

৪। এ ধরণের পরিস্থিতি থেকে কীভাবে গাছের রোগ প্রতিরোধ করা যায়?
ফসল চাষের সাথে সাথে ফসলের রোগ বালাই আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এর রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ ফসলের গায়ে একবার রোগ আক্রান্ত হলে তার থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায না বরং এর প্রার্দুভাব বেড়ে যায়। রোগের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচে দেয়া হলো-

ফসলি ক্ষেতে সাধারণত ছত্রাক জনিত রোগ ছড়ায়। তাই রোগ হওয়ার আগেই ছত্রাক নাশক ব্যবহার করে এই রোগের উৎপত্তি রোধ করে দেওয়া প্রয়োজন। ফসলি জমি, বাগান, গাছপালা ইত্যাদি পোকামাকড়ের আবাসস্থল। পোকামাকড় এসব স্থান থেকেই বংশবিস্তার করে থাকে। তাউ শুরুতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে এর প্রভাব কমে যাবে এবং জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পাবে।

যেসব ফলে ছত্রাকসহ বিভিন্ন জীবানু দ্বারা আক্রান্ত রোগের লক্ষণ পাওয়া যায় সেসব সাধারণ ছোঁয়াচে হয় এবং সম্পূর্ণ উদ্ভিদ দেহসহ অন্যান্য উদ্ভদি ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এসব ফসল পুড়িয়ে বা মাটিতে পুতে ফেলতে হবে। এতে করে এর সংক্রমণ রোধ করা যাবে।

বীজ শোধনের মাধ্যমেও ফসলে রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এমন অনেক বীজ আছে যা রোপনের ফলে জমির ক্ষতিকারক পোকামাকড় নিধন হয় এবং রোগ ছাড়াতে বাধা দেয়। তাই ফসলের রোগ প্রতিরোধের জন্য বীজ শোধন একটি অন্যতম প্রক্রিয়া।

তাই উল্লেখিত পদ্ধতিসমূহের মাধ্যমে ফসলে রোগ প্রতিরোধ করাতে বিশেষ সহায়তা করে।


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post