৯ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : রসায়ন : ৪র্থ সপ্তাহ : ২০২১

৯ম শ্রেণি : এ্যাসাইনমেন্ট : রসায়ন : ৪র্থ সপ্তাহ

এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম :
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ - ১

এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ :
“প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রসায়ন পরীক্ষাগারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক” - এ বিষয়ে একটি প্রিতিবেদন লিখতে হবে।

প্রতিবেদনে অবশ্যই পাঁচ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের ঝুঁকির মাত্রা ও সংশ্লিষ্ট সতর্কতামূরক সাংকেতিক চিহ্ন উল্লেখ করে তা থেকে নিরাপদ থাকার উপায় উদাহরণ হিসেবে লিখতে হবে।

নমুনা সমাধান

২৫ মে, ২০২১ ইং

বরাবর,
প্রধান শিক্ষক
‘ক’ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী।

বিষয় : প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রসায়ন পরীক্ষাগারে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা আবশ্যক সম্পর্কিত প্রতিবেদন।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং রা.স.উ.বি ২০২১—৫ তারিখ: ২৫ মে, ২০২১ অনুসারে "প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রসায়ন পরীক্ষাগারে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা আবশ্যক" শীর্ষক প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করছি।

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রসায়ন পরীক্ষাগারে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা আবশ্যক

যেখানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় তাকে পরীক্ষাগার বা গবেষণাগার বলে। সুতোর যেখানে রসায়নের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় তাকে রসায়ন পরীক্ষাগার বা গবেষণাগার বলে। রসায়ন পরীক্ষাগারের প্রায় প্রত্যেক দ্রব্যই আমাদের জন্য কিংবা আমাদের পরিবেশের জন্য কমবেশি ক্ষতিকর। কোনো কোনো রাসায়নিক দ্রব্য বিস্ফোরক জাতীয়, কোনো রাসায়নিক দ্রব্য দাহ্য (সহজেই যাতে আগুন লেগে যায়), কোনোটি আমােদর শরীর কিংবা পরবেশের ক্ষতি করে। রসায়ন পরীক্ষাগারে যে সকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তার বেশিরভাগ কাঁচের তৈরি। তাই রসায়ন পরীক্ষাগারে ঢোকার পর থেকেই আমাদের অত্যন্ত সাবধানে সকল কাজ করা উচিত।

অসর্তক হলেই যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমন— এসিড গায়ে পড়লে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, পোশাকে পড়লে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া রসায়ন পরীক্ষাগারে অগ্নিকাণ্ড বিস্ফোরণ সহ ছোট বড় নানানরকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই শরীরকে রক্ষা করার জন্য নিরাপদ আপ্রোন বা পোশাক পড়া উচিত। রসায়ন পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত অ্যাপ্রোনের হাতা হবে হাতের কব্জি পর্যন্ত এবং নিচের দিকে হাঁটুর নিচ অবধি থাকবে। হাতকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য হ্যান্ডগ্লোভস এবং চোখের জন্য সেফটি গোগলস ব্যবহার করতে হয়।

যে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করার আগে তার সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তার প্রকৃতি কিংবা সেটি বিষাক্ত, দাহ্য না বিস্ফোরক তা আমাদের প্যাকেটের লেবেল কিংবা বোতলের গায়ের সাংকেতিক চিহ্ন কিংবা প্রোপারটাইস থেকে দেখে নিতে হবে। রাসায়নিক পদার্থের বোতল বা কৌটার গায়ে সাংকেতিক চিহ্নের প্রচলন সংক্রান্ত একটি সর্বজনীন আইন আছে। এর ফলে এখন সহজেই রাসায়নিক পদার্থ সম্পর্কে তার গায়ের চিহ্নের মাধ্যমে বোঝা যায়।

নিচে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের ঝুঁকি, ঝুঁকির মাত্রা ও সাবধানতা সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হলো—

নং সাংকেতিক চিহ্ন সাংকেতিক চিহ্নবিশিষ্ট পদার্থের ঝুঁকির মাত্রা ও সাবধানতা
দাহ্য পদার্থ - ছবি
দাহ্য পদার্থ
(Flammable substance)
অ্যালকোহল, ইথার ইত্যাদি দাহ্য পদার্থ। এসব পদার্থে দ্রুত আগুন ধরে যেতে পারে। তাই এদের আগুন বা তাপ থেকে দূরে রাখতে হয়।
বিষাক্ত পদার্থ - ছবি
বিষাক্ত পদার্থ
(Toxic substance)
বেনজিন, ন্যাপথালিন ইত্যাদি হলো বিষাক্ত পদার্থ। তাই শরীরে লাগলে কিংবা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এ ধরনের পদার্থ ব্যবহার করার সময় অ্যাপ্রোন, হ্যান্ড গ্লোভস ও সেফটি গোগলস ব্যবহার করতে হয়।
উত্তেজক পদার্থ - ছবি
উত্তেজক পদার্থ
(Irritant substance)
সিমেন্ট ডাস্ট, লঘু এসিড, ক্ষার, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি উত্তেজক পদার্থ ত্বক, চোখ, শ্বাসতন্ত্র ইত্যাদির ক্ষতি করে থাকে। তাই এ ধরনের পদার্থ ব্যবহারের সময় অ্যাপ্রোন, হ্যান্ড গ্লোভস ও সেফটি গোগলস ব্যবহার করতে হয়।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ - ছবি
তেজস্ক্রিয় পদার্থ
(Radioactive substance)
এসব পদার্থ থেকে ক্ষতিকর রশ্মি বের হয়। যা ক্যান্সার সহ নানা রকম মরণঘাতী রোগ এবং আজীবনের মতো মানুষকে পঙ্গু করে দিতে পারে। তাই এসব পদার্থ ব্যবহারের সময় বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন— ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম ইত্যাদি হলো তেজস্ক্রিয় পদার্থ।
স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ - ছবি
স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ
(Health risk substance)
এ ধরনের পদার্থ ত্বকে লাগলে বা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের দেহের ভেতরে প্রবেশ করলে তা স্বল্প মেয়াদে কিংবা দীর্ঘসময়ের জন্য আমাদের শরীরের ক্ষতি করতে পারে। এগুলো ক্যান্সার কিংবা শ্বাসতন্ত্রের অনেক জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের পদার্থের উদাহরণ— বেনজিন, টলুইন, জাইলিন ইত্যাদি। তাই এগুলো খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহারের সময় অ্যাপ্রোন, হ্যান্ড গ্লোভস ও সেফটি গোগলস ব্যবহার করতে হয়।

তাই সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাগারে অ্যাপ্রোন যেটার হাতা হবে হাতের কব্জি পর্যন্ত এবং লম্বায় হাঁটুর নিচ অবধি। এটি সাধারণত সাদা রঙের হয়ে থাকে। চোখের সুরক্ষার জন্য সেফটি চশমা বা গোগলস এবং হাতে হ্যান্ড গ্লোভস অবশ্যই পরিধান করে পরীক্ষাগারে ঢোকা উচিত।

মো : আ ইসলাম
ক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী।

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : আ ইসলাম
ক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রসায়ন পরীক্ষাগারে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা আবশ্যক।
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ১১ টা।
প্রতিবেদন তৈরির তারিখ : ২৫ মে, ২০২১ ইং।


আরো দেখুন :

1 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post