৮ম শ্রেণি : অ্যাসাইনমেন্ট : ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : ১ম সপ্তাহ : ২০২১

৮ম শ্রেণি এ্যাসাইনমেন্ট : ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : সপ্তাহ ১

এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম :
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ - ১
 
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম
প্রথম অধ্যায়ঃ আকাইদ

পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তু: 
ঈমান, নিফাক, আল-আসমাউল হুসনা

এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ
মনে কর তােমার ঘনিষ্ঠ একজন সহপাঠীর আচরণে মুনাফিকের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়, তাকে প্রকৃত মুমিন বান্দা হতে সহায়তা করার জন্য তুমি কী কী উদ্যোগ নিতে পারে- এ সম্পর্কিত একটি কর্মপরিকলপনা তৈরি করাে।

নমুনা সমাধান

ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাই ইসলাম ধর্মে ভণ্ড, কপটতা, দ্বিমুখী নীতির কোন স্থান নেই। আর যারা এইসব নীতিতে নিজেদেরকে সামিল করে তারা মুনাফিক। মুনাফিকরা প্রকাশ্যে নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবি করে কিন্তু গোপনে তারা ইসলামকে অস্বীকার করে। মুনাফিক সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
وَإِذَا لَقُواْ الَّذِينَ آمَنُواْ قَالُواْ آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْاْ إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُواْ إِنَّا مَعَكْمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِؤُونَ
আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে, তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি। আমরা তো (মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্র। - সূরা আল বাক্বারাহ আয়াত ১৪

আমার এক সহপাঠী রয়েছে, যার চরিত্রে মুনাফিকের লক্ষণ রয়েছে। কারণ সে মিথ্যে কথা বলে। মিথ্যা বলা মুনাফিকের কাজ। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন:
إِذَا جَاءكَ الْمُنَافِقُونَ قَالُوا نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُولُ اللَّهِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّكَ لَرَسُولُهُ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَكَاذِبُونَ
মুনাফিকরা আপনার কাছে এসে বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল। আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। - সূরা মুনাফিকুন, আয়াত ১

তাছাড়া, আমার সহপাঠী ওয়াদা ভঙ্গ করে অর্থাৎ, সে কথা দিয়ে কথা রাখে না। ওয়াদা ভঙ্গ করা মুনাফিকের লক্ষণ। ওয়াদা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَوْفُواْ بِالْعُقُودِ
মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ন কর।

আমার সহপাঠীর মধ্যে মুনাফিকের আরও একটি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় তা হল, সে আমানত এর খিয়ানত করে।

উপরের বর্ণিত তিনটি লক্ষণ মুনাফিকের পরিচয়। কারণ হযরত মুহাম্মদ (স) বলেছেন:
মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং যখন তার নিকট কোন কিছু গচ্ছিত রাখা হয় তার খিয়ানত করে।
(সহিহ্‌ বুখারি, সহিহ্‌ মুসলিম)

আমার সহপাঠীর উক্ত আচরণগুলো দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য ক্ষতিকর। তাই পবিত্র কুরআনে মুনাফিকদের জন্য কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন:
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا
নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না। - সূরা আন নিসা, আয়াত ১৪৫

মিথ্যা সকল পাপের কারণ। মিথ্যা বলা মহাপাপ। ইসলামে মিথার কোন স্থান নেই। একটি মিথ্যা হাজারটি মিথার জন্ম দেয়। নিফাকের ফলে মানুষ অনায় ও অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয় ফলে তাদের নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট হয়। নিফাক সমাজের মধ্যে অশান্তি ও মানুষের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। মুনাফিকরা ইসলামের জন্য চরম শত্রু। এরা গোপনে কাফিরদের হয়ে কাজ করে। মুনাফিকরা ইসলামের গোপন শত্রু। পরকালের এদের জন্য রয়েছে সবচেয়ে কঠোর শাস্তি।

আমি আমার সহপাঠীর মুনাফিকী আচরণ দূর করার জন্য নিচের উদ্যোগগুলো নিয়েছে:
  • সহপাঠীকে সর্বদা সত্য কথা বলার উপদেশ দিয়েছি এবং মিথ্যা পরিহার করার জন্য বলেছি।
  • কাউকে কথা দেওয়ার আগে প্রথমে ভাবতে হবে আমি কথাটি রাখতে পারব কিনা। যদি মনে হয় আমার দ্বারা কথাটি রাখা সম্ভব হবে তবেই অন্যকে কথা দিব।
  • কেউ আমানত রাখতে দিলে তার খেয়ানত করা যাবে না। কারণ আমানত এক প্রকার ঋণ। নবীজি আমানতের খেয়ানত করতেন না।

সহপাঠীকে মুমিন হাওয়ার জন্য আমি নিচের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি:

  • প্রথমে সহপাঠীকে ঈমান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
  • ঈমানের সাথে ইসলামের কি সম্পর্ক তা তুলে ধরা।
  • ঈমানের তিনটি দিক (অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং তদনুসারে আলম করা) সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
  • ইসলামের সাতটি স্তর (আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ইমান আনা, ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস করা, আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস করা, নবি-রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস করা, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস করা, তকদিরে বিশ্বাস করা, মৃত্যুর পর পুনুরুত্থানের প্রতি বিশ্বাস করা) সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং সেগুলোকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করার জন্য তাগিদ দেওয়া।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post