ভাবসম্প্রসারণ : সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই

মূলভাব : আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। এজন্য মানুষের বিবেচনাবোধ গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করা দরকার। 

সম্প্রসারিত ভাব : সবার ওপরে মানুষের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে বিবেচনা করে তার গুরুত্ব অনুধাবন করা দরকার। এ গুরুত্বের প্রেক্ষিতেই সকল সংস্কার, বিভক্ত মতবাদ আর নীতি আদর্শের পার্থক্যের মাধ্যমে মানুষকে বিবেচনা না করে তার শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদার আসন সম্পর্কে সন্দেহমুক্ত থাকা আবশ্যক। 

জগতের সর্বত্র বিভিন্ন নীতি আদর্শ আর বিধিনিষেধের বেড়াজালে মানবজীবন জড়িয়ে আছে। মানুষের কার্যকলাপ বিবেচনা করে নানা রকম ভেদাভেদে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এর ফলে উঁচু-নীচু, ধনী-দরিদ্র এসব পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বর্ণভেদ প্রথা। উন্নত বিশ্ব আর তৃতীয় বিশ্বের মধ্যে পার্থক্য অনেক। শক্তিশালী জাতি শক্তিহীনকে গ্রাস করতে চায়। সভ্যতা সংস্কৃতির আগ্রাসনও মানুষের জীবনকে বিশৃঙ্খল করে দিচ্ছে। এসব অবস্থার প্রেক্ষিতে নিগৃহীত হচ্ছে মানবতা। মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব বিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে প্রাণ দিতে হয় মানুষকেই। আজকে সারাবিশ্বে মানুষের এ অবমাননা চরম আকার ধারণ করেছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিশ্বের মানুষ ক্রমাগতই সংকটে আবর্তিত হতে থাকবে। এ থেকে উদ্ধারের পথ বের করা আবশ্যক। সকল বিরোধ অবসানের লক্ষ্যে মানুষকে মানুষের যথার্থ মর্যাদা দান করতে হবে। মানুষকে ছোট বা হেয় বলে বিবেচনা করা যাবে না। একই স্রষ্টার সৃষ্টির মধ্যে কোন ব্যবধান খুঁজে বের করা অন্যায় বলে বিবেচনা করতে হয়। সকল মতবাদের ওপরে মানুষের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। মানুষের কল্যাণের জন্য সকল প্রচেষ্টা কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই পৃথিবী মানুষের বসবাসের যোগ্য হয়ে থাকবে। মানবতা এবং মনুষ্যত্বকে মানুষ যদি সবার উপরে ঠাই দেয় তবে এ পৃথিবী সুন্দর হবে। মানুষের সব ধরনের বিভেদ ভুলে এ পৃথিবীকে সবার জন্য এক এবং অভিন্ন করে গড়ে তোলা উচিত।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


মানুষের কোনো জাতিভেদ নেই, মানুষের কোনো জাতিভেদ থাকতে পারে না। পৃথিবীর যে কোনো দেশের আদিবাসী হোক, মানুষের একমাত্র পরিচয় হলো -সে মানুষ। সে বাঙালি, ইংরেজ, ফরাসি, জার্মান, রাশিয়ান, চীনা, আমেরিকান যা -কিছুই হোক -সাদা, কালো -যে রঙেরই হোক তার গায়ের বর্ণ, তার সত্য পরিচয় হল -সে মানুষ। 

সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হল মানুষ। তাঁর সৃষ্টিতে নেই কোনো ভেদাভেদ, নেই কোনো ভেদ-বৈষম্যের পার্থক্যরেখা। কিন্তু মানুষ রচনা করেছে মানুষে মানুষে কৃত্রিম জাতি, সৃষ্টি করেছে ঘৃণ্য জাতিভেদ। ভেদবুদ্ধি -প্রণোদিত স্বার্থপর মানুষ সৃষ্টি করেছে মানুষে বিভেদের দুর্ভেদ্য প্রাচীর; এবং জগতের যত দ্বন্দ্ব-সংঘাত, যত কলঙ্কময় রক্তপাত, তার মূলে আছে এই অবাঞ্ছিত মানসিক ভেদ-বৈষম্য। পৃথিবীতে মানুষে মানুষে এই সংঘাত ও রক্তপাতের শুরু অতি প্রাচীনকাল থেকেই। ভৌগোলিক সীমাবেষ্টনীর মধ্যে ভূমিষ্ঠ মানবগোষ্ঠী ক্রমে অপর স্থানের মানবগোষ্ঠীকে ঘৃণা করতে শিখেছে। ফলে গঠিত হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন জাতি ও রাষ্ট্রের। কিন্তু ক্রমেই রাষ্ট্রীয় ভেদ-বিদ্বেষ এবং ধর্মীয় সীমা-পার্থক্য মুছে ফেলে মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করেছে। সভ্যতার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানুষ এই প্রকৃতির উপর ক্রমেই আধিপত্য বিস্তার করেছে। গড়ে তুলেছে গ্রাম, নগরসভ্যতা। সে তার জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়ে অণু থেকে অট্টালিকা, সাগর থেকে মহাসাগর পর্যন্ত জয় করে নিয়েছে। মানুষের আরাম-আয়েসের জন্যে উদ্ভাবন করেছে নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্যে সে সৃষ্টি করেছে শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন। এভাবে আদি থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছে। প্রমাণ করেছে সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে কেউ নেই।

9 Comments

  1. Thanks for making such a wonderful site like this. I am very happy for finding my bubsamprasans.

    ReplyDelete
  2. Ami aita onk din dhore khujchilam . Obsheshe paoa gelo. Tnx ato sundor akta vab somprosaron dawar jonno .

    ReplyDelete
  3. Thanks for making such a beautiful sire.. .. ..

    ReplyDelete
  4. n sir but search er bebosta korle onek valo hooto student der jonne

    ReplyDelete
  5. Ektu simple bhashaye likhle shubidhe hoto
    Otherwise it is good

    ReplyDelete
  6. Second line a 'গুরুত্ব' বানান ভুল।😐😐😐।

    ReplyDelete
  7. Onek proyojon chilo ae ta

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post