সাধারণ জ্ঞান : রণেশ দাশগুপ্ত

রণেশ দাশগুপ্ত

রণেশ দাশগুপ্ত কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? — ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারি; আসামের ডিব্রুগড়ে।

তিনি কিভাবে রাজনীতিতে আসেন? — ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের বাঁকুড়া ক্রিশ্চিয়ান কলেজে পড়ার সময় সশস্ত্র গোপন দলে যোগদানের মাধ্যমে। 

কোথায় তাঁর কর্মজীবন আরম্ভ হয়? — ঢাকায় নলিনীকিশোর গুহ সম্পাদিত 'সোনার বাংলা' পত্রিকায় (এই পত্রিকায় শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতা ছাপা হয়) সহকারী সম্পাদক হিসেবে (১৯৩৮)।

তিনি কোন সংগঠনের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন? — ঢাকায় 'প্রগতি লেখক শিল্পী সংঘ' প্রতিষ্ঠায় (১৯৩৯–৪০)। তাছাড়া এই সংঘের মুখপত্র 'ক্রান্তি' প্রকাশের ক্ষেত্রে। 

রণেশ দাশগুপ্ত কোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? — বামপন্থী রাজনীতি। এ কারণে তিনি বহুবার জেল খেটেছেন, বিনা বিচারে আটক থেকেছেন।

তিনি ঢাকা মিউনিসিপ্যালটির কী ছিলেন? — নির্বাচিত (১৯৫৭) ওয়ার্ড কমিশনার। শাঁখারি বাজার–তাঁতি, বাজার–ইসলামপুর ছিল ছিল তাঁর এলাকা।

রণেশ দাশগুপ্ত রচিত প্রবন্ধগ্রন্থগুলোর নাম কী কী? — 'উপন্যাসের শিল্পরূপ' (১৯৫৯), 'শিল্পীর স্বাধীনতার প্রশ্নে' (১৯৬৬), 'আলো দিয়ে আলো জ্বালা' (১৯৭০), 'আয়ত দৃষ্টিতে আয়ত রূপ' (১৯৮৬), 'মুক্তিধারা' (১৯৮৯), 'সাম্যবাদী উত্থান প্রত্যাশা : আত্মজিজ্ঞাসা' (১৯৯৪)।

তাঁর কোন গ্রন্থ পাকিস্তানি শাসনামলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে 'রেফারেন্স বুক' হিসেবো স্বীকৃতি পায়? — 'উপন্যাসের শিল্পরূপ'। 

'উপন্যাসের শিল্পরূপ'গ্রন্থের পরিচয় দাও।
— রণেশ দায়গুপ্তের প্রবন্ধের বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ সালে। ২৬ টি অনুচ্ছেদে বিভক্ত গ্রন্থটিতে উপন্যাসের উদ্ভব ও বিকাশ, আঙ্গিক ও গঠন, বিষয় ও শৈলী, সর্বোপরি সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে উপন্যাসের সম্পর্ক প্রভূতি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া বাংলা উপন্যাসের 'অভ্যুণ্থানমূলক ধারা' শীর্ষক পাঁচটি পরিচ্ছেদে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাজতাত্ত্বিক উপন্যাসের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বাংলা প্রবন্ধের ধারায় এই গ্রন্থটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত। পাকিস্তানী শাসনামলেই এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রেফারেন্স গ্রন্থ হিসেবে গৃহীত হয়। মার্কসীয় নন্দনতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপন্যাস বিচারের এমন গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ বাংলাদেশেরে আর লিখিত হয় নি। গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণে তিনি একে আরো সমৃদ্ধ করেন।

'আয়ত দৃষ্টিত আয়ত রূপ' গ্রন্থের পরিচয় দাও।
— রণেশ দাসগুপ্ত রচিত প্রবন্ধ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। বইটিতে সংকলিত প্রবন্ধগুলোর মধ্যে রয়েছে দস্তয়েভস্কি, টলস্টয়, পাবলো নেরুদা, গিওনি লুকাচ, শলোকভয়ের সাহিত্য ও কাব্য আলোচনা পাঠকের চিন্তাকে প্রসারিত করে। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নজরুল ইসলাম, জীবনান্দ দাশ, মানিক বন্ধ্যোপাধ্যায়, সত্যেন সেন, সোমেন চন্দ, মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লা কায়সারের সাহিত্য আলোচনার মধ্য দিয়ে লেখক রণেশ দাশগুপ্ত বাংলা সাহিত্যের পাঠকের জন্য নতুন দিক নির্দেশনা ও ভাবনার জগতকে প্রসারিত করেছেন।

তাঁর অনুরোধ রক্ষা করে কে, কোন বিখ্যাত নাটক লেখেন? — মগনূর চৌধুরীর রচিত 'কবর' (রচনা : ১৯৫৩, প্রকাশ ১৯৬৬)।

তিনি কবে মৃত্যুবরণ করেন? — ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর কলকাতায়। ৬ই নভেম্বর ঢাকার শ্যামপুর শ্মশানঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post