রচনা : আত্মকর্মসংস্থানে প্রযুক্তি

ভূমিকা : জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা ও চাহিদার তুলনায় কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগের জন্য বেকার সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশাল কর্মক্ষম বেকার জনগোষ্ঠীকে মজুরি ও বেতনভিত্তিক চাকরির মাধ্যমে কাজে লাগানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন আত্মকর্মসংস্থান। তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে সহজেই আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করা যায়।

তথ্যপ্রযুক্তি : তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় বিষয়। ইংরেজি Information Technology (IT) এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো তথ্যপ্রযুক্তি। ইংরেজি Information শব্দটি ল্যাটিন শব্দমূল Informatio থেকে এসেছে। যার অর্থ- কাউকে কোনো কিছু অবগত করা, পথ দেখানো, শেখানো, আদান-প্রদান ইত্যাদি। আর Technology শব্দটির ব্যবহার বহুমাত্রিক। আধুনিক জীবনযাত্রায় ‘প্রযুক্তি’ হলো ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে গঠিত একটি মিশ্র পদ্ধতি যার মাধ্যমে জীবনযাত্রা পূর্বের তুলনায় আরও সহজ হয়ে ওঠে। সর্বোপরি, তথ্য আহরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তি বা Information Technology বলা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি শুধু জীবনযাত্রার মান উন্নতই করে না, দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রাখতে পারে। বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। শুধু চাকরিমুখী না থেকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গড়ে তোলা যায় আইটি ফার্ম, ই-কমার্স সাইট, অ্যাপভিত্তিক সেবাসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এতে অর্থনৈতিকভাবে নিজে সাবলম্বী হবার পাশাপাশি বহু মানুষের কর্মক্ষেত্র তৈরি হয় এবং দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা যায়।

সরকারি উদ্যোগ : প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসেই প্রযুক্তি শিক্ষা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে ইন্টারনেটের সম্প্রসারণ করে। সরকারের সহযোগী হয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফ্টওয়ার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ কমিউটার কাউন্সিল। এ প্রকল্পের আওতায় ৩৩,৫৬৪ জন আইট প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল তৈরি করা হয়। সরকার জেলা ভিত্তিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে জনগণকে স্মার্ট বাসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, ই-লার্নিং প্লাটফর্ম, ইনফো-লিডার তৈরি করা, আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প, ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ, মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরির প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রামের মানুষও যাতে প্রযুক্তিনির্ভর কাজে যুক্ত হতে পারে সে জন্য সরকার দেশব্যাপী ২৮টি হাইটেক পার্ক তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আইসিটি খাতে রপ্তানি বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে ফ্রিল্যান্সারদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।

মাধ্যমিক স্তর থেকেই পাঠ্যসূচিতে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রামের ছোট শ্রেণিকক্ষেও আজ শিক্ষার্থীরা বই-খাতার পাশাপাশি কম্পিউটারে শিখতে শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন করবে এবং ভবিষ্যতে দক্ষ জনবল হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে।

বেসরকারি উদ্যোগ : সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও তথ্যপ্রযুক্তির মধ্য দিয়ে মানবসম্পদ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জেনেসিস ইনফোসিস, সিনেসিস আইটি, ব্রেইনস্টেশন-২৩, ইক্সোরা, বিজেআইটি, সিসটেক ডিজিটাল, ব্রাক আইট, মাইসফট, মিডিয়াসফট, ইরা ইনফোটেক, ইনআইটিস, টেকনোভিস্তা, আমরা টেকনোলজিস, বি-ট্রাক টেকনোলজিস, এডিএন টেকনোলজিস উল্লেখযোগ্য। ওয়ার্ল্ড আইটি ফাউন্ডেশন দেশের একটি বৃহত্তর বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কারিগরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান উদ্দেশ্য তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা। ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি যে কোর্সগুলো দক্ষতার সাথে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে সেগুলো হলো- ডিপ্লোমা ইন আইসিটি, ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সাইন্স, ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন গ্রাফিক্স ডিজাইন, নেটওয়ার্কিং, অটোক্যাড, বেসিক অ্যাপ্লিকেশন কোর্স, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি।

অন্যদিকে ২০২২ সালের মধ্য বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২ লাখ শিক্ষার্থীকে তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দাতা প্রতিষ্ঠান কোডারস ট্রাস্ট। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে কোডারসট্রাস্টে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, একাউন্টস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও প্রোডাকশন, গেম ডেভেলপমেন্ট, অ্যাডভান্সড জাভাস্ক্রিপটসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

আত্মকর্মসংস্থান : সহজ ভাষায়, নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে। অন্যভাবে বলা যায়, নিজস্ব পুঁজি বা ঋণ করা স্বল্প সম্পদ, নিজস্ব চিন্তা, জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ন্যূনতম ঝুঁকি নিয়ে নিজ চেষ্টায় জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে। মজুরি বা বেতনভিত্তিক চাকরির বিকল্প পেশার অন্যতম উপায় আত্মকর্মসংস্থান। আত্মকর্মসংস্থান বলতে কোনো ব্যক্তির স্বীয় দক্ষতা বা গুণাবলির দ্বারা সেবা দানের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করাকে বোঝায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, একজন দর্জি কোনো প্রতিষ্ঠানে বেতনের বিনিময়ে উপার্জন না করে নিজেই কাপড় তৈরি করে বিক্রি করে এবং এ থেকে যে আয় হয় তা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে। এটিই আত্মকর্মসংস্থান। আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে ব্যক্তির নিজের যেমন কর্মসংস্থান হয়, তেমনি অনেক নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।

আউটসোর্সিং : আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি বৃহৎ ক্ষেত্র হলো আউটসোর্সিং। একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেরা না করে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে করিয়ে নেওয়াকে আউটসোর্সিং বলা হয়। গতানুগতিক চাকরির বাইরে স্বাধীনভাবে কাজ করা হলো ফ্রিল্যান্সিং। একজন ফ্রিল্যান্সার কোনো দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি ছাড়া কাজ করতে পারেন। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি যেকোনো জায়গায় বসেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো করতে পারেন। হতে পারে তা ওয়েবসাইট তৈরি, থ্রিডি এনিমেশন, ছবি সম্পাদনা, ডাটা এন্ট্রি বা লেখালেখি করা।

ডাটা এন্ট্রি : ডাটা এন্ট্রি একটি উৎকৃষ্ট আয়ের মাধ্যম। ডাটা এন্ট্রি মূলত টাইপ করাকে বোঝায়। বর্তমানে ডাটা এন্ট্রি মূলত ফিডিএফ ফাইল দেখে কিছু টাইপ করাকে বোঝায়। এছাড়া ডাটা এন্ট্রির আরেক ধরনের কাজ হলো কোনো জায়গা থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তা শ্রেণিবদ্ধ করা বা অডিও বা ভিডিও ফাইল দেখে ডকুমেন্ট তৈরি করা।

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং : গ্রাফিক্স ডিজাইনিং হলো একটি ডিজাইন বা কোনো আকৃতিতে কাম্পিউটারের মাধ্যমে রূপ দেওয়া। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোনো বিজ্ঞাপন, ব্যানার, টি-শার্ট ডিজাইন, ফার্নিচার ডিজাইন, প্রোডাক্ট ডিজাইনের কাজগুলো কম্পিউটারের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে ক্রিয়েটিভ আইডিয়া দিয়ে নিত্য নতুন ডিজাইন করার নামই গ্রাফিক্স ডিজাইনং। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ জানা থাকলে একজন সহজেই নিজের কর্মক্ষেত্র তৈরি করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

ওয়েব ডেভেলেপমেন্ট ও অ্যাপস তৈরি : ওয়েব সার্ভারে জমা রাখা তথ্য ইন্টারনেট ও ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে দর্শনযোগ্য করার প্রক্রিয়াই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বা কাজের সফ্টওয়্যার অ্যাপস তৈরি করেও উপার্জন করতে পারে।

কনটেন্ট রাইটিং : কনটেন্ট রাইটিং বর্তমানে অনলাইন সেক্টরের একটি সম্মানজনক পেশা। কনটেন্ট বর্তমানে অনলাইন সেক্টরের একটি সম্মানজনক পেশা। কনটেন্ট রাইটিং একটি বিষয়ে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে গুছিয়ে লেখা। লেখালেখির আগ্রহ এবং সহজ ভাষায় গুছিয়ে লেখার দক্ষতা থাকলে কনটেন্ট রাইটার হওয়া সম্ভব।

ফেসবুকিং ও ইউটিউবিং : ফেসবুক এবং ইউটিউবের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। আকর্ষণীয় বিষয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলে বা ফেসবুকে পেইজ তৈরি করে বিজ্ঞাপন ও ভিউ প্রাপ্তির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়।

ভিডিও এডিটিং : ভিডিও এডিটিংয়ের মাধ্যমে সফল ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা ব্যাপক। এক্ষেত্রে খ্যাতি, সুনাম ও পরিচিতির সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও রয়েছে। চিত্রগ্রাহকদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ এডিটিং সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে কাটছাঁট করে দর্শকদের দেখার উপযোগী করে তোলাই ভিডিও এডিটরের কাজ।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি :
বাংলাদেশ : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর এ অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে তরুণদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টায়। লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে ছোটা অনেক তরুণেরই পছন্দ নয়। অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার আগেই তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর হন এবং অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন।

বৈশ্বিক : প্রযুক্তির সফল ব্যবহার মানুষের হাতে এনে দিয়েছে অভাবনীয় অর্জন। যে দেশের প্রযুক্তি যত উন্নত, সে দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে তত উন্নত। তথ্যপ্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নতির মধ্য দিয়ে উন্নত দেশগুলো আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, সিঙ্গাপুর, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানিসহ আরও বেশ কিছু দেশ। দেশুগলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নতির মধ্য দিয়ে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করছে, নিজেদের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করছে, পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি করে প্রচুর বৈদেশি মুদ্রা অর্জন করছে, এমনকি এ খাতের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

উপসংহার : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান। তথ্যপ্রযুক্তির বিশেষ বিষয়গুলোতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অনেকেই আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। এতে তারা অর্থনৈতিক দিক থেকে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছে তেমনই একই সাথে বহু মানুষের কর্মসক্ষেত্রও তৈরি করছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই অগ্রগতি দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post