সাধারণ জ্ঞান : ডিরোজিও (হেনরি)

ডিরোজিও (হেনরি)

ডিরোজিওর পূর্ণ নাম কী? — হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও।

ডিরোজিওর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। — তিনি ছিলেন ইউরেশীয় তরুণ কবি, যুক্তিবাদী, চিন্তাবিদ এবং শিক্ষক। 

তাঁর কতবছর পৃথিবীতে বেঁচেছিলেন? — ১৮০৯ থেক ১৮৩১ (ডিসেম্বর) মোট ২২ বৎসর।

তাঁর কর্মকান্ড ব্যাখ্যা কর।
— তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে হিন্দু কলেজে (বর্তমান নামঃ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাস পড়াতেন। প্রচলিত সংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্ন না দেওয়া তাঁর মূলকথা ছিল। ছাত্রদের নিয়ে ক্লাসের বাহিরের মুক্ত আলোচনা করতেন তিনি। তরুণ শিক্ষক হওয়ার ছাত্র এবং শিক্ষক হিসেবে সহজেই ছাত্রদের সাথে মিশে তাদের মন জয় করতে পারতেন। সংস্কারপন্থীদের অভিযোগ ও চাপের ফলে ছাত্রপ্রিয় এই তরুণ শিক্ষককে ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে বরখাস্ত করা হয়। 

ডিরোজিও যে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন সেটির নাম কী ছিল? — ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটির নাম 'অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন'। 

ডিরোজিওর অনুসারী মুক্তচিন্তার গোষ্ঠীকে কি বলা হয়? — ইয়ংবেঙ্গল।

ডিরোজিওর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
— ডিরোজিও, হেনরি লুই ভিভিয়ান (১৮০৯-১৯৩১) হিন্দু কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পিতার নাম ফ্রান্সিস ও মাতার নাম সোফিয়া। হিন্দু কলেজের যুবকদের ভেতর তাঁর অত্যন্ত গভীর প্রভাব ছিল। কালীপ্রসাদ ঘোষ, রানতনু লাহিড়ী, প্যারীচাঁদ মিত্র, হরচন্দ্র ঘোষ, মাধবচন্দ্র মল্লিক প্রভৃতি যুবক তার শিষ্য ছিলো। এই ছাত্রদল 'ইয়ংবেঙ্গল' নামে পরিচিত ছিল। তিনি যুক্তি ও তর্কের মাধ্যমে নানা রকম সমাজ সংস্কার, ধর্মের নানা গোঁড়ামি যাচাই করে নতুন এক প্রেরণা সঞ্চার করেছিলেন। তিনি মূলত ইংরেজিতে কবিতা লিখতেন। তার প্রধান গ্রন্থঃ The Fakeer of Jungkeera (1928)। হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর চিন্তাধারায় উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁকে কলেজ থেকে বরখাস্ত করে দেন। বাংলা সাহিত্যের নতুন ভাবমণ্ডল গঠনের ইতিহাসে তাঁর ছাত্রদের দান স্মরণীয়। 
 
‘ইয়ংবেঙ্গল’ এর সংক্ষেপে পরিচয় দাও।
— ‘ইয়ংবেঙ্গল’ হলো ডিরোজিও প্রভাবিত এক তরুণ ছাত্রগোষ্ঠী। এদের মধ্যে প্রধান ছিলেন— কালীপ্রসাদ ঘোষ, রানতনু লাহিড়ী, প্যারীচাঁদ মিত্র, হরচন্দ্র ঘোষ, মাধবচন্দ্র মল্লিক প্রভৃতি যুবক। ছাত্র হিসেবে তারা সকলেই ছিলেন অসাধারন প্রতিভাবান ও ইংরেজি শিক্ষার প্রতি তাদের সকলের আগ্রহ ছিল অনেক পরিমাণ। প্রথম জীবনক হিন্দু ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধাপরায়ণ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক সমালোচনা মুখর ছিলো। প্রচলিত হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল তাদের ঐক্যসূত্র। উনবিংশ শতাব্দীর সাহিত্য, ধর্ম, নীতি গঠনে তাঁদের বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল।

ইংয়বেঙ্গল নিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বিখ্যাত প্রহসনের নাম কী? — একেই কি বলে সভ্যতা।

হিন্দু কলেজের চাকরী থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি কি করতেন? — ডেইলি দি ইস্ট ইন্ডিয়া পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

বাংলা সাহিত্যে ডিরোজিও আলোচিত কেন? — তাঁর ছাত্র ও অনুসারীবৃন্দ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সূচনাতে যুক্তিশীলতা ও মানবিকতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে সাহিত্য রচনা করেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post