খুদে গল্প : রাত জাগার কুফল

"রাত জাগার কুফল" নিয়ে একটি খুদে গল্প রচনা করো।

রাত জাগার কুফল

ল্যাম্প পোস্টে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার দিকে নজর পড়তেই রাজীবের বুকটা কেঁপে উঠলো। রাজীবের দেখতে কোনো ভুল হলো না তো? ভয়ে আরেকবার ল্যাম্পপোস্টের দিকে তাকায়। এবার কিন্তু সে কিছুই দেখতে পায় না। আরও কিছুক্ষণ মূর্তিমান সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে রাজীব। তারপর এক পা, দু পা করে চলতে থাকে। পরক্ষণেই আবার পেছন ফিরে তাকায়। নাহ! এবারো কিছু চোখে পড়ে না। রাজীবের মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে। দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকে। বাসায় আসার পর ধরাম করে খাটে শুয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙে সকালবেলা। রাতে কী ঘটেছিল তার কিছুই মনে নেই রাজীবের। মনে করার চেষ্টাও সে করে না। হাত মুখ ধুয়ে সকালের নাশতা করে সে বেরিয়ে পড়ে। কালকের রাতের জায়গায় এসে রাজীবের পা আটকে যায়। লক্ষ করে ল্যাম্পপোস্টের সাথে ছেঁড়া একটা কাপড় ঝুলছে। নিজেকে খুব ভীতু মনে হতে থাকে রাজীবের। সে আবার বাসায় ফিরে আসে। মাকে জিজ্ঞেস করে তার কোনো পরিবর্তন হয়েছে কিনা? মা দেখে বলে, না তোর কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে না। রাজীব এবার একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যায়। তিনিও কোনো সমস্যা খুঁজে পান না। রাজীব একটু হতাশ হয়। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞও তার রোগ ধরতে পারছে না। এবার রাজীব বন্ধুদের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে। তারাও কিছু বলতে পারে না। রাজীব ধীর পায়ে হাঁটতে থাকে এমন সময় তার একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের সাথে দেখা হয়। রাজীব তাঁর কাছেও সমস্যার কথা খুলে বলে। তিনি বলেন— ‘তোমার অনেক বিশ্রাম ও ঘুম দরকার রাজীব। তুমি অনেক রাত পর্যন্ত রাত জেগে থাকো। যে কারণে তোমার অস্বাভাবিক কিছু ঘটছে । তাই তুমি রাতের বেলা ওই রকম একটা দৃশ্য দেখেছ। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা ভয় পাবার কিছু নেই। তুমি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।' রাজীব শিক্ষকের কথা বুঝতে পারল। তার নিজের দোষেই আজ এ অবস্থা। রাত জেগে ফেসবুক চালানো, ইন্টারনেট ব্যবহার, গেমস খেলার কারণে তার এরকম হয়েছে। রাজীব এসব বাদ দিয়ে ক'দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ করে ।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post