মার্চের দিনগুলি

রচনা : সুন্দরবনের প্রাণী

ভূমিকা : সুন্দরবন আমাদের জাতীয় বন। পৃথিবীর আশ্চর্য স্থানের মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম। আমাদের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার এ বনের প্রাণী।

সুন্দরবনের অবস্থান : বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ জুড়ে এর বিস্তৃতি। এর দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর।

সুন্দরবনের প্রাণী : সুন্দরবনে নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এগুলোর মধ্যে জলে রয়েছে কুমির, হাঙ্গর প্রভৃতি। স্থলে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, শজারু, শেয়াল, নানান ধরনের পাখি, মৌমাছি, বন মোরগ ইত্যাদি।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার : বিশ্বের কোনো কোনো প্রাণীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে দেশের নাম বা জায়গার নাম। রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামটি পৃথিবীতে সবাই জানে যে এই টাইগার বেঙ্গলে অর্থাৎ একমাত্র বাংলাদেশে দেখা যায়।

হরিণ : হরিণ সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য প্রাণীগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ প্রাণী তৃণভোজী। হরিণ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রিয় খাদ্য।

বানর : সুন্দরবনে প্রচুর বানর রয়েছে। এরা হরিণের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। হরিণকে যখন বাঘ বা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ধাওয়া করতে আসে, তখন বানর, গাছ থেকে চেঁচামেচি করে হরিণকে সতর্ক করে দেয়।

মৌমাছি : সুন্দরবনে প্রচুর মৌচাক রয়েছে। মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।

সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী : নানা রকম প্রাণীর জন্য সুন্দরবন বিখ্যাত। শিকারিদের অত্যাচার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এগুলো আজ প্রায় বিলুপ্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য :

গণ্ডার : গণ্ডারের মাথায় লোম দ্বারা আবৃত একটি শিং থাকে। গণ্ডার ত্রিশ থেকে চল্লিশ মাইল বেগে ছুটতে পারে। একসময় সুন্দরবনে প্রচুর গণ্ডার দেখা যেত, কিন্তু এখন তা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত।

হাতি : হাতি খুব পরিচিত প্রাণী। একসময় সুন্দরবনে অনেক হাতি ছিল এখন একটিও নেই। এখন শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামে হাতি দেখা যায়।

বাঘ : একসময় চিতাবাঘ, ওলবাঘ নামে আরও কিছু বাগ সুন্দরবনে দেখতে পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আর দেখা যায় না।

আমাদের দায়িত্ব : প্রাীণবিদরা বলছেন, সব প্রাণীই সুন্দরবনের জন্য প্রয়োজন। বাঘ, গণ্ডার, হাতি ছাড়াও অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে বলে এখন তাঁরা চিন্তিত। এ ব্যাপারে পরিবেশবিজ্ঞানীদের সতর্ক হতে হবে এবং সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

উপসংহার : সুন্দরবনের বিস্ময়কর জীবজন্তু ক্রমান্বয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রাণিজগৎ বিলুপ্ত হয়ে গেলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

5 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post