মার্চের দিনগুলি

অনুচ্ছেদ : মাদার তেরেসা

মাদার তেরেসা


মানব কল্যাণের মহান ব্রতকে যাঁরা বেছে নিয়েছেন, জীবনকে উৎসর্গ করেছেন মানব সেবায়- মাদার তেরেসা তাঁদের অন্যতম। মাদার তেরেসার জন্ম ১৯১০ সালে ২৭শে আগস্ট। যুগোশ্লাভিয়ার স্কোপেজ শহরের এক স্বচ্ছল কৃষক পরিবারে তার জন্ম। জন্মের পর বাবা-মা তাঁর নাম রাখেন অ্যাগনেস। তাঁর বয়স যখন ১২ বছর, তখন তাঁর মনে প্রথম জেসুইট মিশনারিদের সম্বন্ধে কৌতুহল জাগে। স্কোপেজ শহরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে জেসুইটদের চিঠি পড়িয়ে শোনানো হতো। তাতে কলকাতার মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা লেখা থাকত। আর্ত মানুষের সেবা ও মিশনারী জীবনের প্রতি প্রচন্ড টানে তিনি ১৮ বছর বয়সে সব সংশয় কাটিয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েন। ১৯২৮ সালে যুগোশ্লাভিয়ার জেসুইট সংস্থা তাঁকে পাঠালেন আয়ারল্যান্ডের লোরেটো সংঘে। সেখানে থেকে শিক্ষকতার পেশা নিয়ে তিনি ভারতবর্ষ পাড়ি জমান। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি দারিদ্র্য ক্লিষ্ট, রোগ-ব্যাধিতে জর্জরিত মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। শোনাতেন আশার বাণী। ১৯৩১ সালে তিনি সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। তাঁর অ্যাগনেস নামটি হারিয়ে গেল চিরতরে। তিনি আবির্ভূত হলেন মাদার তেরেসা নাম নিয়ে। এবার বৃহৎ জীবনের আহবানে দরিদ্র মানুষের সেবায় নিজেকে সসম্পূর্ণ উৎসর্গ করলেন। ১৯৫০ সালে কলকাতার কালীঘাটে প্রতিষ্ঠা করলেন 'নির্মল হৃদয়' আশ্রম এখানে অসহায় নরনারী পেল মমতাময়ী জননীর স্নেহস্পর্শ। অনাথ শিশুদের জন্য তিনি প্রতিষ্টা করেন 'নির্মলা শিশুভবন'। হাওড়ায় গড়লেন কুষ্টাশ্রম। তাঁর তত্ত্বাবধানে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে ৬০টি স্কুল, ২টি দাতব্য চিকিৎসালয়, ৫৫টি কুষ্ঠ চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উদ্ধারাশ্রম। শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে তাঁর বিশাল কর্মকান্ড। ভারত সরকারের পদ্মশ্রী ও ভারতরত্ন পুরষ্কার ছাড়াও ফিলিপাইনের ম্যাগসেসাই পুরষ্কারসহ অসংখ্যা পুরষ্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। শান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭১ সালে পেলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সম্মান নোবেল পুরষ্কার। ১৯৯৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর এই মহীয়সী নারী চিরনিদ্রায় শায়িত হন।

1 Comments

  1. highschool er admission er jonno bangla ki porbo?

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post