সাধারণ জ্ঞান : কালিদাস রায় [ বাবুরের মহত্ত্ব ]

কালিদাস রায়

কালিদাস রায় কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? — ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ জুলাই বর্ধমানের কড়ুই গ্রামে কালিদাস রায় জন্মগ্রহণ করেন। 

তিনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন? — ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের বহরমপুর কলেজ হতে বি.এ পাশ করে কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজে দর্শনে অধ্যয়ন করেন।

কর্মজীবনে তিনি কিভাবে জীবিকানির্বাহ করতেন? — রংপুর বিভাগের উলিপুরে প্রথমে শিক্ষকতা এবং পরে সেই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হন। ৭ বছর পর সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বড়িশা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং তারপর দীনেশচন্দ্র সেনের আগ্রহে কলকাতার ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউটে (বিদ্যালয়) সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

তিনি কোন ধারার কবি হিসেবে পরিচিত? — রবীন্দ্র ধারার কবি হিসেবে পরিচিত। তিনি আখ্যানধর্মী বা গল্পের মতো কবিতা লিখে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

কালিদাস রায়ের কাব্যগুন কেমন ছিল? — তাঁর কবিতার ভাষা সহজ সরল, অনাড়ম্বর কিন্তু তা খুব হৃদয়স্পর্শী ছিল।

কালিদাস রায়ের কাব্যগ্রন্থগুলোর পরিচয় দাও। — কুন্দ (১৯০৮), কিশলয় (১৯১১), পর্ণপুট (১ম ভাগ, ১৯১৪ ; ২য় ভাগ, ১৯২১),  ব্রজবেণু (১৯১৫), বল্লরী (১৯১৫), ঋতুমঙ্গল (১৯১৬), লাজাঞ্জলী (১৯২৪), হৈমন্তী (১৯২৪), পূর্ণাহুতি (১৯৬৮) ইত্যাদি। 

কাব্যগ্রন্থ ছাড়া তিনি আর কি কি বই লিখেছেন?
  • প্রবন্ধগ্রন্থ— প্রাচীর বঙ্গসাহিত্য, বঙ্গসাহিত্য পরিচয়।
  • রম্যসাহিত্যগ্রন্থ— চণক সংহিতা, ব্যঙ্গচিত্র ও চালচিত্র ইত্যাদি। 

তিনি কী কী সম্মাননা বা পুরস্কারে ভূষিত হন? — ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে রংপুর সাহিত্য পরিষদ 'কবিশেখর' উপাধি প্রদান করে ; ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় 'জগত্তারিণী স্বর্নপদক' ; ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে 'আনন্দ পুরস্কার' ; ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে 'রবীন্দ্র পুরস্কার'।  তাছাড়া বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় দেশিকোত্তম উপাধি ; রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় 'ডি.লিট' উপাধি প্রদান করে।

তিনি কবে, কোথায় মৃত্যুবরণ করেন? — কলকাতার টালিগঞ্জে 'সন্ধ্যার কুলায়' (এর অর্থ— শেষ জীবনের পাখির বাসা) নামের স্বগৃহে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ২৫ শে নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’
থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু

'বাবুরের মহত্ত্ব' কবিতা কালিদাস রায়ের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত? — পর্ণপুট (২য় ভাগ)।

'পর্ণপুট' অর্থ কী? — পাতার ঠোঙ্গা বা পাতা দিয় বানানো আধার।

ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট কে ছিলেন? — বাবুর।

শুদ্ধ কোনটি— 'মুঘল' নাকি 'মুগল'? — দুটো বানানই ঠিক। এমনকি 'মোগল' বা 'মোঘল' এই বানানেও লেখা যায়। আসলে মঙ্গোলিয়া থেকে এসে যারা ভারতের ক্ষমতার শিখরে আরোহন করেছিলেন তাদের তুর্ক ভাষায় মোগল বলা হয়েছে। 

বাবুরের প্রকৃত নাম কী? — জহিরুদ্দিন মুহম্মদ। 

'বাবুর' অর্থ কী? — বাবুর বা বাবর অর্থ— সিংহ। এটি একটি পারসি শব্দ। আমরা যে 'বাবরি চুল' বলে থাকি, এর অর্থঃ সিংহের কেশরের মতো চুল।

বাবুর কত বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন? — ১১ বছর বয়সে।

বাবুর কখন দিল্লী দখল করেন? — পানি পথের ১ম যুদ্ধ ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে।

পানিপথ কোথায় অবস্থিত? — ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের একটি প্রাচীন শহরের নাম পানিপথ। এই স্থানে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

ইব্রাহিম লোদী কোন বাদশা ছিলেন? — পাঠান বাদশা।

পাঠান বলা হয় কাদেরকে? — পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে অঞ্চলের অধিবাসীদের হিন্দিতে পাঠান বলা হয়।

উত্তর ভারত কিভাবে বিজয় হল? — পানিপথের প্রথম যুদ্ধের মাধ্যমে। 

বাবুরের মহত্ত্ব গুণ কি ছিল? — তিনি ছদ্মবেশে রাতেড় আঁধারে প্রজাদের দুঃখ কষ্ট দেখতে বের হতেন।

প্রজারঞ্জন অর্থ কী? — জনগণের মনঃতুষ্টি বোঝানো হয়েছে।

'করি' অর্থ কী? — করি মানে হাতি। 'করি-শুণ্ড' অর্থ হলো— হাতির শুঁড়।

'সঁপিনু' অর্থ কী? — সমর্পন করছি।

বাদশা বাবুর পর্যটকবেশে কার ছেলেকে হাতির কবল থেকে রক্ষা করলেন? — মেথরের ছেলেকে।

সংগ্রাম সিংহ কে? — রাজপুতনার অন্তর্গত মেবার রাজ্যের অধিপতি।

রণবীর চৌহান কাকে হত্যার উদ্দেশ্য তলোয়ার নিয়ে রাজপথে বের হয়েছিলেন? — মুঘল সম্রাট বাবুরকে।

রাজপুত্র যুবককে কেন রণবীর চৌহান উপাধি দেওয়া হয়? — মুঘল সম্রাট বাবুরের রাজ্য বিজয়ের পর রাজপুত্রগণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। এক রাজপুত্র বাবুরকে হত্যার উদ্দেশ্য খোলা তরবারি নিয়ে পথে প্রান্তরে ঘুরছিলেন। তার এই সাহসিকতার জন্য তাকে রণবীর চৌহান উপাধি দেওয়া হয়।

বিদেশী পুরুষ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন? — সম্রাট বাবুরকে।

বে আকুফ শব্দের অর্থ কী? — যার নিজের কোন হিতায়িত জ্ঞান নেই।

রণবীর চৌহান কখন বিস্মিত হলেন? — বাবুর যখন নিজের জীবন বাজি রেখে হাতির কবল থেকে মেথরের ছেলের জীবন রক্ষা করলেন।

বাবুর কখন রাজপুত্র যুবককে ক্ষমা করে দিলেন? — রাজপুত্র যুবক যখন বাবুরের পায়ে পড়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করলেন।
 
বাবুর রণবীর চৌহানকে কি হিসেবে নিয়োগ দিলেন? — নিজের দেহরক্ষী হিসেবে৷
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post