১০ম শ্রেণি : বাংলা : অ্যাসাইনমেন্ট : ১ম সপ্তাহ : ২০২১

১০ম শ্রেণি : বাংলা : অ্যাসাইনমেন্ট : ১ম সপ্তাহ : ২০২১

১। বাক্-প্রতিবন্ধী সুভা তার পরিবার ও সমাজ থেকে যে আচরণ পেয়েছে এর বিবরণ।
২। সুভার প্রতি পরিবার ও সমাজের প্রত্যাশিত ইতিবাচক আচরণ।
৩। তোমার চেনা/জানা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতাসমূহ।
৪। ’একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষেরও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে।’ -মন্তব্যটি সুভা ও তোমার চেনা/জানা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ।

নমুনা সমাধান

[ ১ ]
বাপ্রতিবন্ধী সুভা তার পরিবার ও সমাজ থেকে যে আচরণ পেয়েছে তা তুলে ধরা হলো: ‘সুভা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অনবদ্য সৃষ্টি। বাকপ্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি আমাদের উদার মনোভাব পোশণ করার জন্য মানসিক চেতনা সৃষ্টিই ‘সুভা’ গল্পের মূল উপজীব্য। কিন্তু ‘সুভা’ গল্পে সুভা একজন বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে। বাবামায়ের ঘরে খুশির সংবাদ নিয়ে এলেও সে ছিল একজন সুবিধা বঞ্চিত মেয়ে। বাবা মায়ের নিরব মনের ভার ছিল। কেউ তার সাথে মিশতে চাইত না। তাই পোষ প্রাণীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নিজের জন্য অনন্য একক পৃথিবী গড়ে তুলে। সমাজের কেউ থাকে পছন্দ করেনি। এমনকি তার পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার হুমকি ও দেয়। মা সুভার এই অবস্থাকে নিয়তির দোষ বলে মেনে নিয়েছেন কিন্তু বাবা তাকে ভালোবাসতো। মা সুভাকে নিজের ত্রুটিস্বরূপ, গর্ভের কলঙ্ক মনে করে তার প্রতি বিরক্তি ভরে থাকতেন। কিন্তু পক্ষান্তরে বাবা অন্য দুই ময়ের তুলনায় অধিক ভালোবাসতেন। কিন্তু সমাজের সকলে তাকে নিন্দার চোখে দেখতো।

[ ২ ]
সুভার প্রতি পরিবার ও সমাজের ইতিবাচক আচরণ : প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা ও মানুষ। তাদেরও একজন স্বাভাবিক মানুষের মতো স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। এই অবিচ্ছেদ্য অংশকে বাদ দিয়ে সমাজ তথা জাতির কল্যাণ সম্ভব নয়। সমাজের অংশ হিসেবে তাদের প্রতি আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে এবং এই দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করলে তারা সমাজের বোঝা নয় বরং সম্পদে পরিণত হবে।

সুভা একজন বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রথমত তার পরিবারকে তার পাশে দাঁড়াতে হত। তার মনোবল বৃদ্ধির জন্য তার মায়ের মানসিকতার পরিবর্তন আনা উচিত ছিল। তিনি সুভার যত্ন নিতে পারতেন, ভালোবেসে আগলে রাখতে পারতেন। এছাড়ও সমাজের মানুষেরা সুভার প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে পারতেন। তাদের সন্তানদের সুভার সাথে বন্ধুত্ব করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেনি। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে নি।

আমার জানা একজন সুবিধাবঞ্চিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের বেড়ে উঠার প্রতিবন্ধকতা সমূহ :
আমাদের আশেপাশে এমন অনেক সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আছে যারা আপাতত দৃষ্টিতে সাধারণ শিশু হয় না। তারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয় তাদের দৈহিক গঠন, বৃদ্ধি, চলাফেরা স্বাভাবিক মানুষের মতো হয় না। কোনো না কোনো ত্রুটি থাকে যা তাদেরকে বিশেষ বলে বিবেচিত করে। যেমন অনেকে আছে যারা ঠিক ভাবে কথা বলতে পারে না, কানে শুনে না, চোখে দেখতে পায় না। আবার অনেকে আছে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যারা দৈহিক দিক দিয়ে বড়দের মতো হলেও ব্যবহার ছোটদের মতো।

[ ৩ ]
আমার দেখা একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু হলো লিজা। সে একা একা সময় কাটায়। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কেউ তার সাথে মিশতে চায় না। খেলেনা এমনকি কথা ও বলে না। তার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এসব অবশ্যই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে :
  • বৈষম্য ও কুসংস্কার-কৃপ্রথা একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বেড়ে ওঠার প্রতি সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। সমাজের সর্বস্তরে এরূপ একটি বিশ্বাস আছে যে, প্রতিবন্ধকতা একটি অভিশাপ ও এটি পাপ কাজের শাস্তি। 
  • সমবয়সীরা আরেকটা প্রতিবন্ধকতা। সমবয়সীরা তাদের সাথে মিশতে চায় না, যা তাদের বেড়ে উঠায় বাধা সৃষ্টি করে।
  • এসব সুবিধা বঞ্জিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের এদের প্রথম ও প্রধান কারণ তাদের পরিবার। তাদের শারীরিক ত্রুটির জন্য তাদের মেনে নেয় না।

[ ৪ ]
“একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের ও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে।” -মন্তব্যটি সুভা ও আমার চেনা লিজার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করা হলো :

সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ার স্বত্ত্বেও সে চাইতো তার বন্ধুবান্ধব হোক, সবাই তার সাথে মিশুক, কথা বলুক। কিন্তু কেউ যখন তাকে গ্রহণ করেনি সে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে নিয়েছে। সে চেয়েছিল তার মা তাকে ভালোবাসুক, আদর করে কাছে টেনে নিক। কিন্তু যখন তার ভাগ্যে এসব জুটল না, তখন তার সখ্যতা গড়ে উঠলো প্রকৃতির সাথে। প্রকৃতি যেনো তার সব অভাব পূরণ করত, যেনো তার সাথে কথা বলতো, তার মনের ভাব বুঝত। তার বন্ধুত্ব ছিল প্রাণিদের সাথে। মানুষের সাথে তাদের ভাবের বিনিময় না হলেও, ভাষাহীন প্রাণী আর প্রকৃতির সাথে ঠিকই হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সুভা। তাই বলা যায়, একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ও সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মন আছে মন্তব্যটি সুভা ও লিজার পরিপ্রেক্ষিতে যথার্থ।


আরো দেখুন :
২য় সপ্তাহের নমুনা সমাধান :

১ম সপ্তাহের নমুনা সমাধান :
১০ম শ্রেণি : বাংলা : অ্যাসাইনমেন্ট : ১ম সপ্তাহ

1 Comments

  1. এসাইনমেন্টগুলো আরেকটু বড় এবং সৃজনশীল হওয়া উচিত।এত ছোট লিখলে নাম্বার কম দিবে।

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post