ইভটিজিং প্রতিরোধকল্পে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একখানা পত্র

মনে করো, তুমি পিরোজপুর জেলার অধিবাসী, তোমার নাম দুলাল। ইভটিজিং প্রতিরোধকল্পে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একখানা পত্র লেখো।


২৪শে মে, ২০২১

বরাবর
সম্পাদক
প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫

বিষয় : সংযুক্ত পত্রটি পত্রিকায় প্রকাশের জন্য আবেদন।

জনাব,
আপনার সম্পাদিত ও বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশের জন্য ইভটিজিং তথা যৌন হয়রানি পতিরোধকল্পে গণসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠালাম। চিঠিটির গুরুত্ব বিবেচনা করে অনুগ্রহ করে প্রকাশের ব্যবস্থা করলে কৃতজ্ঞ থাকব।

রাজীব রানা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 
 

ইভটিজিং-এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা

বর্তমান ‘ইভটিজিং’ একটি বহুল প্রচলিত শব্দ, যা কিনা নারীদের প্রতি এক ধরনের নির্যাতনকে বোঝায়। নারীর প্রতি এমন আচরণের মূল কারণ হচ্ছে সমাজের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। বর্তমান বিশ্বে শিশুদের ত্রুটিপূর্ণ মানসিক বিকাশ ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে তা বেড়ে উঠছে বেপরোয়াভাবে। আর এ কারণেই পুরুষরা নারীদের হীন ও দুর্বল মনে করছে। তাছাড়া যন্ত্রচালিত বর্তমান যুগে মোবাইল, ইন্টারনেট, কম্পিউটারের মাধ্যমে তরুণরা সহজেই অশালীন জগতের সংস্পর্শে চলে যাচ্ছে। ফলে পথে-ঘাটে চলতে নারীরা চরম নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আর এ নিপীড়ন থেকে রেহাই পেতে নারীরা বেছে নিচ্ছে আত্মহননের পথ। ইদানিং দেখা যাচ্ছে, উত্ত্যক্তকারীরা সহিংস হয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের হত্যাও করছে। অতীতে সিমি, মহিমা, ফাহিমার আত্মহননের জন্য দায়ীদের পার পেয়ে যাওয়াই অপরাধীদের এতটা বেপরোয়া করে তুলেছে।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ইভটিজিং আমাদের জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর প্রতিরোধে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। গণসচেতনতা গড়ে তুলতে গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য ইভটিজিং প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন, তথ্যচিত্র প্রভৃতি পুনঃপ্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট প্রচার করতে হবে। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, জনসাধারণ যদি এ ব্যাপারে সর্বদা সচেতন ও সজাগ দৃষ্টি রাখে তাহলে অবশ্যই এ অবস্থার উত্তরণ সম্ভব। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ও তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা আবশ্যক। অতএব আসুন আমরা সকলেই যৌন হয়রানি বিষয়ে সচেতন হই এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

রাজীব রানা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

[দ্রষ্টব্য : বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিধান অনুযায়ী ইভটিজিং বিষয়টি ‘যৌন হয়রানি’ হিসেবে অভিহিত হবে।]

2 Comments

  1. প্রতিবেদন টা খুব সুন্দর হয়েছে।

    ReplyDelete
  2. সত্যি প্রতিবেদনটা খুব সুন্দর হয়েছে

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post