অনুচ্ছেদ : গণতন্ত্র

গণতন্ত্র


বর্তমান বিশ্বে গণতন্ত্র সর্বাপেক্ষা আলোচিত একটি বিষয়। গণতন্ত্র হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আধুনিক এবং সর্বপেক্ষা গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। গণতন্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘Democracy’। গ্রিক শব্দ ‘Demos’‘Kratia’ শব্দ থেকে ‘Democracy’ শব্দের উদ্ভব, যার বাংলা অর্থ গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের শাব্দিক অর্থ জনগণের শাসন। অর্থাৎ যে শাসন ব্যবস্থায় প্রত্যেকের অংশ রয়েছে সেটাই গণতন্ত্র। গণতন্ত্রে কোনো ব্যক্তি বা দলের খেয়াল খুশিমতো শাসন ব্যবস্থা চালানোর অধিকার নেই। জনগণের ইচ্ছাই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। গণতন্ত্রে স্বৈরশাসনের কোনো ভিত্তি নেই। দেশের আপামর জনসাধারণের কল্যাণসাধনই গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য। গণতন্ত্রের একটি দুর্বলতা হচ্ছে এখানে মূল্যবোধের অভাব রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে বিশেষ করে অধিকাংশ দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও সবদেশের গনতন্ত্রের সুফল সমান নয়। উন্নত বিশ্বের গণতন্ত্র ও তৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। গণতন্ত্রকে মর্যাদা দিতে না পারলে দেশের মঙ্গল আসতে পারে না। গণতন্ত্র রক্ষার জন্যই ১৯৭১ সালে এক রক্ষক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা লাভ করেছি এই সোনার বাংলাদেশ। কিন্তু যে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম হয় সেই গণতন্ত্র প্রথমবারের মতো হোঁচট খায় ১৯৭৫ সালে আগস্ট ট্রাজেডির পর। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে রুদ্ধ করা হয় গণতন্ত্র অনুশীলনের পথ। পরবর্তী সময়ে ১৯৯১ সালে দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ ঘটিয়েছে। ফলে গণ মানুষের জয় সূচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গণতান্ত্রিক সরকার, জনগণের সরকার। বর্তমানে সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণ জেগে উঠেছে। আমরা চাই গণতন্ত্রের অধিকার নিয়ে মানুষ বেঁচে থাকুক। যুগ যুগ ধরে আমাদের অস্তিত্বে ও চেতনায় গনতন্ত্র অমর হোক।

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post