মার্চের দিনগুলি

অনুচ্ছেদ : ডেঙ্গুজ্বর

ডেঙ্গুজ্বর


সাম্প্রতিককালে এক ভয়ঙ্কর আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুজ্বর। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু এক মহামারী রূপ ধারণ করেছে। ১৯৯৬ সালে গোটা বিশ্বে প্রায় দুই কোটি মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল। ডেঙ্গু এডিস মশা বাহিত এক ধরনের তীব্র জ্বর। ক্লাসিক্যাল এবং হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বরের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। উপসর্গের ওপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা করতে হয়। এডিস এজিপটাই বা এডিস এলকোপিপটাস স্ত্রীজাতীয় মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এতে দেহের তাপমাত্রা ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রিতে উঠে যায়। মাংসপেশি ও হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব থাকে। ৩/৪ দিন পর দেহে এক ধরনের ফুসকুড়ি ওঠে। মাংসপেশির খিঁচুনিতে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। ডেঙ্গু হেমোরেজিক হলে রক্তনালি ও চামড়ার নিচে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। কখনো কখনো দাঁত বা দেহের অন্য স্থান দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এই জ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীকে পুরোপুরি বিশ্রামে থাকতে হয়। মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে হয় চিকিৎসকের পরামর্শমতো। রোগীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার ফল অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। তরল খাবার ও পানীয় এ রোগীর জন্য খুব জরুরি। প্রয়োজনে আইডি স্যালাইন বা রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং দিন-রাত সবসময় মশারি ব্যবহার করতে হয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য এডিস মশা দমনে পানি জমার স্থান ধ্বংস করতেহবে। বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গুরোগের কোনো বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা না থাকায় এডিস মশা থেকে সাবধান থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। 

10 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post