অনুচ্ছেদ : পরিবেশ দূষণ

পরিবেশ দূষণ


আমরা যে পরিবেশে বাস করি তা প্রতিমুহূর্তে অনবরত দূষিত হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কলকারখানা ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলো বেশি পরিমাণে বিষাক্ত বাষ্প ও কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপাদন করে বায়ু দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি আমরা যে ভূমিতে বিচরণ করি তাও ময়লা আবর্জনায় দূষিত। শিল্পবর্জ্য, বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থের মাধ্যমে পানি দূষিত হয়। বন-জঙ্গল ও গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে আর এভাবে পারিপার্শ্বিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। মোটরযান, উড়োজাহাজ, গৃহস্থালির যন্ত্রপাতি ইত্যাদি থেকে শব্দ হয়। এগুলো শব্দদূষণ ঘটায় যা অন্যান্য দূষণ থেকে কম ক্ষতিকর নয়। আমরা দূষণ থেকে পুরোপুরি মুক্ত না হতে পারলেও এটি ব্যাপক অংশে কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদেরকে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমি মনে করি, দূষণ কমাতে বিভিন্ন ধরনের দূষণ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হলো প্রথম পদক্ষেপ। বেশি পরিমাণে বৃক্ষরোপণ বায়ু দূষণ কমানোর পূর্বশর্ত এবং কার্যকর নয়ঃনিষ্কাশন প্রণালিও রক্ষণাবেক্ষণ পানিদূষণ অনেকাংশে কমাতে পারে। সর্বাগ্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত এবং রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে সৃষ্ট শব্দ সহিষ্ণু মাত্রায় রাখা উচিত। সর্বোপরি প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে দূষণ থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে।


একই অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো


সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে বশ করে গড়ে তুলেছে নিজস্ব পরিবেশ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ পেয়েছে আরও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। কিন্তু আবিষ্কৃত জিনিসের অপব্যবহার ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশে শুরু হয়েছে দূষণ। মানুষই তার জল-মাটি-হাওয়াকে করে তুলেছে দূষিত। পরিবেশ দূষণ মূলত দুটি কারণে হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে প্রকৃতিগত কারণ, যেমন : ঝড়-বন্যা, জলোচ্ছাস, অগ্নৎপাত, ভূমিকম্প। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মানুষসৃষ্ট বা কৃত্রিম, যেমন : পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, তেজস্ক্রিয়দূষণ। কীটনাশক, গুঁড়ো সাবান, ঔষধপথ্য ও প্রসাধন সামগ্রী, প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলেও পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে সিসা, পারদ, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদির দূষণও ঘটে থাকে। এতসব দূষণের ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষ আজ শঙ্কিত। কেননা মানব সভ্যতার অস্তিত্বই আজ হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশ সংরক্ষণে তাই বিশ্বের সচেতন মানুষ জেগে উঠেছে। গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ কীভাবে কমানো যায়, জলবায়ু মোকাবেলায় করণীয় কী, বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষা, পানিদূষণ, বায়ুদূষণরোধে মানুষ গ্রহণ করছে নানামুখী পরিকল্পনা। বিশ্বের পরিবেশবাদীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সাধারণ মানুষও আজ সচেতন হয়ে পড়েছে পরিবেশ সম্পর্কে। বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের সংবিধানেও যুক্ত হয়েছে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন। তবে জনসংখ্যা রোধ করা ও সর্বস্তরের মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করা ব্যতীত পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব নয়।

5 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post