ভাবসম্প্রসারণ : আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর / আপন করিতে কাদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।

আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর
আপন করিতে কাদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।

মূলভাব : মহানুভবতা ও সহনশীলতা মানবজাতির বিশেষ গুণ। এই গুণের প্রভাবে মানুষ অন্যের দেওয়া দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে, পরকে ভালোবেসে আপন করে পৃথিবীকে সুন্দর ও শান্তিময় করে গড়ে তোলে।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো সে ভাবতে পারে, যেকোনো বিষয়ে চিন্তা করতে পারে। এই চিন্তা ও ভাবা মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীদের বেশি কিছু ভাবতে হয় না। তাদের চিন্তাভাবনা, বাঁচা-মরা ও আহার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে হলে অনেক গুণের অধিকারী হতে হয়। কেননা মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে সবার সঙ্গে মিলেমিশে বাস করতে হয়। সমাজের বাইরে থেকে কেউ সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারে না। তবে সমাজের সব মানুষই একই মানসিকতার থাকে না। তাদের কেউ বদমেজাজি হতে পারে, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে পারে, ব্যক্তি বা সমাজের বড়ো রকমের ক্ষতি সাধন করতে পারে। তখনই সহনশীলতা গুণটির বিশেষ প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কেননা ধৈর্য ও ক্ষমাই মানুষকে মহোত্তম পর্যায়ে উন্নীত করতে পারে। পারস্পরিক শত্রুতা পরিহার করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে দিতে পারলেই সমাজজীবনে নেমে আসবে শান্তি। আপন পর ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একে অপরকে ভালোবাসতে পারলে সুন্দর সমাজ গড়ে উঠবে।

মহানুভবতা মানুষের শ্রেষ্ঠ গুণ। সমাজের সর্বক্ষেত্রে মহানুভবতার পরিচয় দিতে পারলেই সমাজজীবন সার্থক ও সুন্দর হবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post