সাধারণ জ্ঞান : আবু ইসহাক

আবু ইসহাক


জন্ম : ১৯২৬ সালের ১লা নভেম্বর, শরিয়তপুর জেলার নড়িয়ায়।

কর্মজীবন : NSI খুলনা বিভাগের ডেপুটি ডাইরেক্টর ছিলেন।

প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থের নাম : সূর্য দীঘল বাড়ি (উপন্যাস)

মূল পরিচিতি : একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে খ্যাত।

তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উপন্যাসটি ১৯৫৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের গ্রামজীবনের বিশ্বস্ত দলিল এই গ্রন্থ। বিশেষ করে গ্রামীণ মুসলমান জীবনের বিশ্বস্ত এবং আন্তরিকতা ঐ সময়ে বাংলা সাহিত্যে পাওয়া খুবই দুরূহ। প্রকাশের পর থেকে এর বাস্তবভিত্তিক চরিত্র ও খুঁটিনাটি প্রকাশভঙ্গি সমালোচক ও পাঠকসমাজে এটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। উপন্যাসে জয়গুনদের বাড়িতে রাতে ঢিল তথা ভূতের ঢিল পড়ে। সেখানে শান্তিতে নির্ভয়ে থাকা যায় না। তাই জন্যে সেই বাড়িকে সূর্য দীঘল বাড়ি তথা অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়৷ অপরদিকে উপন্যাসে গ্রামীণ মানুষের কুসংস্কার, দারিদ্র্যতা, গ্রামের মোড়লদের দৌরাত্ম্য এবং সর্বোপরি একজন হৃদয়হীনা শাশুড়ির বউকে অত্যাচার ইত্যাদি খুবই বিশেষভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মূলত গ্রামীণ মুসলমান সমাজ এবং তৎকালীন সময়ের যুগোপযোগী উপন্যাস হওয়ায় এটি দারুণ ভাবে পাঠকমহলে গ্রহণীয় হয়ে ওঠে। এছাড়া জয়গুন, তার ছেলে হাসু, মেয়ে মায়মুন, শফি, ডাঃ রমেশ চক্রবর্তী এবং গ্রামের মোড়ল গদু প্রধান ইত্যাদি চরিত্র আছে উক্ত উপন্যাসে।

তাঁর অন্যান্য গ্রন্থসকল :
উপন্যাস — পদ্মার পলিদ্বীপ (১৯৮৬); জাল (১৯৮৮)
গল্পগ্রন্থ — হারেম (১৯৬২); মহাপতঙ্গ (১৯৬৩)।

তাঁর ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হল :
‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ ঔপন্যাসিক আবু ইসহাকের দীর্ঘ সময়ব্যাপী একটি উপন্যাস। ১৯৮৬ সালে এটি ঢাকার মুক্তধারা থেকে প্রকাশ পেলেও ঔপন্যাসিক ১৯৬০ সাল থেকে এটি লিখতে থাকেন। উপন্যাসের প্রথম ষোলটি অধ্যায় বাংলা একাডেমি কর্তৃক ‘উত্তরাধিকার’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ১৯৭৪ সালের মে ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। তখন এই উপন্যাসের নাম ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ ছিল না। এটি তখন ‘মুখর মাটি’ নামে প্রকাশিত হয়। পরে লেখক উপন্যাসের আরো ৩২ টি অধ্যায় শেষ করেন এবং তখনই নাম পরিবর্তন করে ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ রাখেন। তবে বর্তমান নামের চেয়ে প্রথম নামটি অধিকতর সাহিত্য গুণসম্পন্ন ও প্রতীকি ছিল। বর্তমান নামটি খুবই সাদামাঠা এবং নাম থেকে উপন্যাসের ধারণা পাওয়া যায়। আমাদের দেশে পদ্মা নদীকে বলা হয় সর্বনাশা তথা ‘কীর্তিনাশা’। কারণ চাঁদরায়–কেদারয়ায় এবং রাজবল্লভদের মতো বারোভূঁইয়াদের কীর্তি এই নদী ধ্বংস করেছে। এ উপন্যাসে পদ্মা নদীতীরবর্তী চর কেন্দ্রিক অধিবাসী এবং তাদের চর দখল, জীবন সংগ্রাম মুখ্য বিষয়। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রব্যমূল্যের দর যে বৃদ্ধি পায় তার প্রভাব থেকে রেহাই পায়নি পদ্মা কেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষের মধ্যে। উপন্যাসে মূল চরিত্র আবুল ফজল। এছাড়া এরফান মাতব্বর, আরশেদ মোল্লা, জঙ্গুরুল্লা, জরিনা, রূপজান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। উপন্যাসটি গতানুগতিক এবং এতে কোনো নতুন ধরনের চমক ছিল না যতটা ছিল ‘সূর্য দীঘল বাড়িতে’

বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত, তাঁর সম্পাদিত অভিধানটির নাম কী?
— সমকালীন বাংলা ভাষার অভিধান। প্রকাশকাল ১৯৯৩ সাল।

তাঁর প্রাপ্ত পুরস্কারসমূহ : বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৩), একুশে পদক (১৯৯৭) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post