মার্চের দিনগুলি

অনুচ্ছেদ : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একটি অনিবার্য বিষয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে এদেশের নিরীহ ঘুমন্ত মানুষের ওপর অতর্কিত আক্রমণ শুরু করলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতার এ ঘোষণায় উজ্জীবিত হয়ে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, শিল্পী-সাহিত্যিক, যুবকসহ নানা পেশার মানুষের সাথে বাঙালি সেনা, ই.পি.আর, পুলিশ, আনসারের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এদেশের সর্বস্তরের মানুষ নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য-সহযোগিতায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসে। পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এদেশীয় দোসরদের অত্যাচার-নির্যাতন, নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এ কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণসহ নানাভাবে ভারত আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ সচেতন মানুষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে সহায়তা করেন। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে হানাদারদের বিভিন্ন সেক্টরে হত্যা ও পরাজিত করতে থাকে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যৌথবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে পালাতে থাকে ঢাকার দিকে। অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ৯৩ হাজার সেনা যৌথবাহিনীর কাছে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয় এবং আত্মসমপূর্ণ করে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সম্যকভাবে জানা অবশ্য কর্তব্য।


একই অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো


১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল যে বোধ বা চেতনাকে কেন্দ্র করে তারই নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা তাকে চিরউন্নত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের প্রেরণা জোগাবে চিরদিন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করলেও প্রকৃত মুক্তি আসেনি বাঙালি জাতির। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন। সর্বোপরি ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে। তখনই শুরু হয় স্বাধীনতা আন্দোলন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের বর্বরতা চালায় সারাদেশ জুড়ে। তখন বাংলার মানুষ পাকিস্তানিদের অপতৎপরতা রুখে দেয়। দীর্ঘ নয় মাস ধরে যুদ্ধ চলে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। ৩০ লক্ষ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের চেতনা- একে ভুলুণ্ঠিত করা যাবে না।


আরো দেখুন :

1 Comments

  1. অনুচ্ছেদটি কয়টি শব্দের

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post