অনুচ্ছেদ : বৃক্ষরোপণ অভিযান

বৃক্ষরোপণ অভিযান


জীবনের জন্য, বেঁচে থাকার জন্য বৃক্ষ অনিবার্য। বৃক্ষ মানব জীবনের এমন এক বন্ধু, যার কোনো বিকল্প নেই। মানুষ বুঝে অথবা না বুঝে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বৃক্ষ নিধন করছে। বনের পর বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে পরিবেশ দূষণ ঘটছে। পরিবেশ হয়ে উঠেছে ভারসাম্যহীন। তাই ভারসাম্য রক্ষার্থে ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপণ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের বন ভূমি খুবই কম। বাংলাদেশের মোট আয়তনের মাত্র ১৬ ভাগ বনভূমি- যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। তারপরও উপর্যুপরি জনসংখ্যাবৃদ্ধির ফলে কাঠের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে, ফলে বনের পর বন উজাড় হচ্ছে। বনভূমির আয়তন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে যা খুবই উদ্বেগের ব্যাপার। এই অভাব পূরণের জন্য বাংলাদেশ সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন, এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছেন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। আরও বিস্তৃত আকারে এ পদক্ষেপ নেয়া আশু দরকার। মূলত পরিবেশ সংরক্ষণ ও বনায়নের জন্য কার্যকর ভূমিকা আবশ্যক। যে দিন সকলে বুঝবে বৃক্ষ ছাড়া মানুষের একদিনও চলে না, প্রতিটি নিশ্বাসের যে অক্সিজেন, তা বৃক্ষই উৎপাদন করে। সেদিনই কেবল ‘পরমবন্ধু বৃক্ষ’ নিধন রোধ হয়ে বৃক্ষ রোপণ অভিযান দ্রুত সম্প্রসারিত হবে।


একই অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো


প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে ও বেঁচে থাকার তাগিদে বৃক্ষরোপণ করার কোনো বিকল্প নেই। অথচ আমরা বৃক্ষরোপণের পরিবর্তে নির্বিচারে বৃক্ষ কেটে ধ্বংস করছি প্রাকৃতিক বন। ফলে আমাদের দেশের পরিবেশও আজ হুমকির সম্মুখীন। এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে হলে অধিকহারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে সর্বত্র চালাতে হবে বৃক্ষরোপণ অভিযান। একটি দেশে শতকরা ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা আবশ্যক হলে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে বনায়নের শতকরা হার মাত্র ১২ ভাগ। ফলে বনায়ন না হলে মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হবে। কেননা যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, কলকারখানা বাড়ছে তাতে গ্রিনহাউজ ইফেক্ট সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ কারণেই আমাদের দেশে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা বেড়েই চলেছে। ভূমিকম্প, ভূমিধসের মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এভাবে চলতে থাকলে উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ভূপৃষ্ঠে পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে, আর এতে তলিয়ে যাবে সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকাগুলো। এ ভয়াবহ বিপদের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে হলে পর্যাপ্ত বৃক্ষরোপণ করা উচিত। কেননা একমাত্র বৃক্ষরোপণের ফলেই প্রকৃতিতে বিদ্যমান কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই সবাইকে বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করার লক্ষ্যে ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান’ কর্মসূচিটি অব্যাহত রাখা জরুরি।


একই অনুচ্ছেদ আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো


বৃক্ষরোপণ বলতে বোঝায় বড় পরিসরে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো। গাছ আমাদের বন্ধু। গাছ আমাদের ছায়া দেয়, নানা প্রকার ফল দেয়, রান্নার জন্য আমাদেরকে জ্বালানি হিসেবে কাঠ দেয়, আসবাবপত্র, দরজা, জানালা, নৌকা, বৈদ্যুতিক থাম এবং রেলওয়ে পাতের জন্য আমাদেরকে কাঠ দিয়ে থাকে। তারা আমাদেরকে রাবারও প্রদান করে। গাছপালা কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন উৎপন্ন করে। পর্যাপ্ত গাছপালা পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং খরা রোধ করে। রাস্তার পাশের গাছপালা ভূমি ক্ষয় আর উপকূলবর্তী গাছপালা জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধ করে। কিন্তু অনেক অবিবেচক লোক তাদের স্বার্থের জন্য বৃক্ষ নিধন করছে। ফলে, আমরা বৃক্ষ হারাচ্ছি। এজন্য বৃক্ষরোপণকে একটি প্রকল্প হিসেবে নিতে হবে। আমরা যত বৃক্ষরোপণ করব পরিবেশ তত ভারসাম্যপূর্ণ এবং সবুজ হবে। পৃথিবী তখন হয়ে উঠবে শ্যামল, নির্মল ও নিরাপদ। বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ অত্যাবশ্যক কারণ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার মতো প্রয়োজনীয় বনভূমি আমাদের নেই। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে লোকজনকে সচেতন করলে বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল হতে পারে। সংবাদপত্র, টিভি আর বেতার এর মতো গণমাধ্যম জনগণকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করতে পারে। জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করার জন্য বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই।

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post