সাধারণ জ্ঞান : ভাষা শহীদদের নামে গ্রাম / আওয়ামী মুসলিম লীগ / ৫৪ সালের নির্বাচন / ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৬

ভাষা শহীদদের নামে গ্রাম 

ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের নামে নামকরণকৃত গ্রামের নাম কী? – জব্বারনগর; গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।

জব্বারনগরের পূর্বনাম কী ছিল? – পাচুয়া।

ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদের নামে নামকরণকৃত গ্রামের নাম কী? – রফিকনগর; সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ।

রফিকনগরের পূর্বনাম কী ছিল? – পারিল।

ভাষা শহীদ আবদুস সালামের নামে নামকরণকৃত গ্রামের নাম কী? – সালামনগর; দাগনভূঁইয়া, ফেনী।

সালামনগরের পূর্বনাম কী ছিল? – লক্ষণপুর।

আওয়ামী মুসলিম লীগ 

বাংলাদেশে আওয়ামী মুসলিম লীগ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? – ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন।

আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন? – মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।

আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সেক্রেটারী বা সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন? – শামসুল হক।

আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান কী ছিলেন? – যুগ্ন সম্পাদক।

শেষ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন কবে? – ১৯৫৫ সালে। (১৯৫৫ সালে মুসলিম শব্দ বাদ দেয়া হয়)

৫৪ সালের নির্বাচন 

যুক্তফ্রন্ট কবে গঠিত হয়? – ৪ ডিসেম্বর ১৯৫৩ সালে।

যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠন করে কবে? – ৩ এপ্রিল ১৯৫৪ সালে।

কোন কোন দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়? – আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজাম-এ-ইসলাম, বামপন্থী গণতন্ত্রী দল।

পাকিস্তান সৃষ্টির পর প্রথম কবে পূর্ব বাংলায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়? – ৮-১২ মার্চ, ১৯৫৪।

পূর্ব বাংলায় গণ পরিষদের আসন সংখ্যা কত ছিল? – ৩০৯টি, এর মধ্যে মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসন পায়, যুক্তফ্রন্ড ৯৭% এর চেয়ে বেশি ভোট পায়।

কার নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে? – শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের।

১৯৫৪-এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট কতটি আসন লাভ করে? – মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২২৩টি।

১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক নির্বাচনে কোন শ্রেণীর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়? – মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রেণীর।

পাকিস্তানের প্রথম রাজধানী কোথায় ছিল? – করাচি।

২১ দফার প্রথম দফা কী ছিল? – প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসন।

পূর্ব বাংলায় কত সালে যুক্তফ্রন্ট বাতিল করে পাকিস্তানের সরকার কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে? – ১৯৫৪ সালে।

পূর্ব বাংলার প্রথম গভর্নর কে? – শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক।

কত সালে ফজলুল হক পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত হন? – ১৯৫৬ সালের ২৩ মার্চ।

পাকিস্তানের প্রথম শাসনতন্ত্র কবে গণ পরিষদে গৃহীত হয়? – ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ সাল।

পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র কবে কার্যকর হয়? – ২৩ মার্চ ১৯৫৬।

কবে পাকিস্তানের নতুন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করা হয়? – ২৫ ও ২৬ জুলাই ১৯৫৭ সাল।

কবে মাওলানা ভাসানী কর্তৃক ঐতিহাসিক ‘কাগমারী সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়? – ৭ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল।

পাকিস্তানের সামরিক শাসনের ‘নাটের গুরু’ বলা হয় কাকে? – জেনারেল ইস্কান্দার মির্জাকে।

জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন? – ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানকে।

১৯৬২ সালে কোন শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হলে ছাত্র আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে? – শরীফ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট।

আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সম্মিলিত দলের প্রার্থী কে ছিলেন? – মোহম্মদ আলী জিন্নাহর বোন মিস ফাতেমা জিন্নাহ।

প্রথম পাক-ভারত যুদ্ধ কবে শুরু হয়? – ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫ সালে।

প্রথম পাক ভারত যুদ্ধের কারণ কী? – পাকিস্তানের ভারত অধিকৃত কাশ্মীর দখলের প্রচেষ্টা।

ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৬ 

লাহোর সম্মেলনের গুরুত্ব কী? – ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা।

শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বিরোধী দল কবে সম্মেলন করে? – ১৯৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি।

ছয় দফা কবে কোথায় ঘোষণা করা হয়? – ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে, লাহোরে বিরোধী দলের সম্মেলনে।

শেখ মুজিব কবে, কোথায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দফা পেশ করেন? – ২৩ মার্চ ১৯৬৬ সালে, লাহোরে সাংবাদিক সম্মেলনে।

ঐতিহাসিক ছয় দফায় কী প্রাধান্য পায়? – জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা আর পূর্ব পাকিস্তানের মহামুক্তির সনদে পূর্ণ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি।

কোন প্রস্তাবের ভিত্তিতে ছয় দফা রচিত হয়? – সিমলা।

‘ছয় দফা’ কোথায় ঘোষণা করা হয়? – লাহোরে।

ছয় দফার প্রথম দফা কী ছিল? – পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন।

“বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ” হিসেবে পরিচিত কোনটি? – ছয় দফা।

ছয় দফা দাবি-এর দাবিগুলো

প্রথম দফা : সরকারের বৈশিষ্ট হবে Federal বা যৌথরাষ্ট্রীয় ও সংসদীয় পদ্ধতির; তাতে যৌথরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন হবে প্রত্যক্ষ এবং সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নির্বাচন জনসংখ্যারভিত্তিতে হবে।

দ্বিতীয় দফা : কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয় এবং তৃতীয় দফায় ব্যবস্থিত শর্তসাপেক্ষ বিষয়।

তৃতীয় দফা : পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটি পৃথক মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যা পারস্পরিকভাবে কিংবা অবাধে উভয় অঞ্চলে বিনিময় করা চলবে। অথবা এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে একটি মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু থাকতে পারে এই শর্তে যে, একটি কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার অধীনে দুই অঞ্চলে দুটি রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে। তাতে এমন বিধান থাকতে হবে যেন এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে সম্পদ হস্তান্তর কিংবা মূলধন পাচার হতে না পারে।

চতুর্থ দফা : রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে। প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ের ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাজস্বের যোগান দেয়া হবে। সংবিধানে নির্দেশিত বিধানের বলে রাজস্বের এই নির্ধারিত অংশ স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে জমা হয়ে যাবে। এহেন সাংবিধানিক বিধানে এমন নিশ্চয়তা থাকবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্বের প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারটি এমন একটি লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে যেন রাজস্বনীতির উপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নিশ্চিতভাবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে থাকে।

পঞ্চম দফা : যৌথরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে, সেই অঙ্গরাজ্যের সরকার যাতে স্বীয় নিয়ণ্ত্রনাধীনে তার পৃথক হিসাব রাখতে পারে, সংবিধানে সেরূপ বিধান থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হবে, সংবিধান নির্দেশিত বিধি অনুযায়ী নির্ধারিত অনুপাতের ভিত্তিতে অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে তা আদায় করা হবে। সংবিধান নির্দেশিত বিধানানুযায়ী দেশের বৈদেশিক নীতির কাঠামোর মধ্যে, যার দায়িত্ব থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে, বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কে চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক সরকারগুলোর হাতে থাকবে।

ষষ্ঠ দফা : ফলপ্রসূভাবে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার কাজে সাহায্যের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে মিলিশিয়া বা আধা-সামরিক বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।

2 Comments

  1. দফা গুলো যদি উল্লেখ করতেন যদি খুব উপকৃত হোতাম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. দফাগুলো যোগ করা হয়েছে। ধন্যবাদ।

      Delete
Post a Comment
Previous Post Next Post