ভাবসম্প্রসারণ : ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ

ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ
অথাব,
ভোগে প্রকৃত সুখ নাই, ত্যাগেই মনুষ্যত্বের প্রকাশ

মানুষের যথার্থ মনুষ্যত্বের পরিচয় তার ভোগ-লালসার মাধ্যমে প্রকাশ পায় না। পরের জন্যে ত্যাগের মাধ্যমেই মানুষের মনুষ্যত্বের মহত্ত্ব ফুটে ওঠে। নিজের জীবনকে ভোগবিলাসিতায় নিমজ্জিত রাখার মধ্যে হয়তো মাদক আনন্দ পাওয়া যায়, তাতে জীবনের প্রকৃত সুখ ও সার্থকতা আসে না। বরং পরের মঙ্গলের জন্যে কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে পারলে প্রকৃত মানবোচিত সুখ অনুভব করা যায়। বস্তুত, পরের জন্যে স্বার্থ ত্যাগ করার মধ্যেই মানুষের মানবিক গুণাবলির শ্রেষ্ঠ প্রকাশ ঘটে।

সংসারে যারা কেবল ভোগ-লালসায় আত্মমগ্ন থাকেন তারা একান্তই স্বার্থপর। পরের মঙ্গল-অমঙ্গল নিয়ে তারা ভাবেন না। পরের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা তাদের হৃদয়ে বিন্দুমাত্র ঝড় তোলে না। এই ভোগপ্রবণ লোকদের ভোগ-লালসা অন্তহীন। যতই ভোগ করুক এদের ভোগের নেশা শেষ হয় না। বরং ক্রমাগত ভোগের আকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে যায়। এই ধরনের মানুষের চাহিদারও কোনো শেষ নেই। এরা যত বেশি পায় তত বেশি চায়। এ ধরনের স্বার্থান্ধ ও আত্মকেন্দ্রিক মানুষ সমাজে বরণীয় হতে পারে না। বরং ত্যাগী মানব ব্রতী মানুষই সমাজে স্বরণীয়-বরণীয় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হন। কারণ, মনুষ্যত্বের প্রকৃত মহিমা উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে ত্যাগের মধ্যে। নিজের স্বার্থকে বড় করে না দেখে পরের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করাতেই মানুষের মহত্ত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। এ পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গেও রয়েছে পরার্থপরতার যোগ। মানুষ একলা বাঁচতে পারে না। সবাইকে নিয়ে তাকে বাঁচতে হয়। তাই নিজের সুখের জন্য কেবল হা-হুতাশ করে, সুখ সুখ করে ক্রন্দন করে সুখ পাওয়া যায় না। বরং দেশের ও সমাজের জন্যে কিছু ত্যাগ করার মধ্যেই প্রকৃত সুখ। ত্যাগের মনোভাব মানুষকে মহৎ করে তোলে, অন্তরকে অপার আনন্দে পূর্ণ করে দেয়। অসহায়, বিপন্ন ও দুর্দশাগ্রস্ত, মানুষের কল্যাণে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারলে অন্তরে অনির্বচনীয় শান্তি ও সুখের ধারা বয়ে যায়। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিত ত্যাগের মাধ্যমে মানুষ, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা। পরের জন্যে, দীন-দুঃখীর সেবায় সাধ্যমত ব্রতী হওয়া। এ ধরনের ত্যাগের সুখ অলূল্য। তা জীবনকে মনুষ্যত্বের মহিমায় উদ্ভাসিত করে তোলে।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


মূলভাব : ভোগ বিলাসিতায় প্রকৃত সুখ পাওয়া যায় না। প্রকৃত সুখ আসে আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে।

সম্প্রসারিত ভাব : ভোগ ও ত্যাগ মানবের আত্মবনতি ও আত্মমুক্তির রক্তাক্ত দলিল। ভোগাকাঙ্ক্ষা মানবের সীমাহীন দুঃখের কারণ। ত্যাগ মানুষকে রিক্ত করে না, পূর্ণতাই এনে দেয়। দুনিয়ার মঙ্গলের জন্য যিনি নিজের জীবন বিলিয়ে দেন, মৃত্যুর পরে তিনি আরো বড় হয়ে বেঁচে উঠেন। কবির কথায়, ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তাঁর ক্ষয় নাই।’

আমরা যখন ভোগের জীবন যাপন করি তখন শুধু নিজের জন্য বাঁচি। এ বাঁচা মৃত্যুর সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায়। যখন ত্যাগের জীবন যাপন করি তখন পরের জন্যও বাঁচি। জীবনে ত্যাগ থাকলে জীবন অর্থবহ হয়। তাই ত্যাগ আমাদের চরিত্রের সর্বোচ্চ আদর্শ হওয়া উচিত। ত্যাগের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ অমরত্ব লাভ করতে পারে। ত্যাগ মহাশক্তি। অপরদিকে ভোগ হচ্ছে লক্ষ ফণা সাপ। তাকে পদদলিত করা আমাদের কর্তব্য। ভোগাকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা সার্থক মানুষ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পাবো না। যে ত্যাগ করতে জানে ভোগের অধিকার তারই জন্য। অতএব সপ্রমাণ হয় যে, “ভোগ নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।”

মন্তব্য : নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে অপরের জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়ার মাঝেই জীবনে আসে চরম সার্থকতা। তাই ভোগকে পরিহার করে ত্যাগকে স্বাগত জানানো উচিত।

9 تعليقات

  1. অনেক কিছু'ই ভুলে থাকি এই ১ টা কথার কারনে।।।৷



    Real truth it.

    100%

    ردحذف
  2. thanks a lot...emergency time amon akta sobida kore dewar jonno..😊

    ردحذف
    الردود
    1. Sobida= সবিদা,subida = সুবিদা, kindly banan vhul na kore lekhar chesta korba

      حذف
  3. আরক জনর লাগি আমি তেগ করতাম কেনে

    ردحذف
  4. print korar option thakle onek upokar hoto :)

    ردحذف
  5. vai not thsnks but i repet thsnks

    ردحذف
إرسال تعليق
أحدث أقدم