What is Blue Ocean Economy?

‘Blue Ocean Economy’-এর প্রচলিত বাংলা প্রতিশব্দ ‘সমুদ্র অর্থনীতি’। সমুদ্রের অথৈ নীল জলরাশির ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সম্পৃক্ততা হেতু সমুদ্র অর্থনীতি প্রত্যয়ের উদ্ভব। সমুদ্র অর্থনীতির মূল উপাদান হচ্ছে মৎস্যসম্পদ ও সমুদ্রের অভ্যন্তরে বিদ্যমান তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য অফুরন্ত খনিজ সম্পদ। এর সাথে যোগ হয়েছে সমুদ্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। যেমন : আমদানি-রপ্তানিতে সমুদ্র পরিবহন, সমুদ্রভিত্তিক পর্যটন অর্থনীতি, বন্দর অর্থনীতি, তেল-গ্যাস-খনিজ ও সমুদ্র সম্পদের উত্তোলন, উৎপাদন এবং এগুলোর ব্যাপক বাণিজ্যিক ব্যবহারের ফলশ্রুতিতে অর্থনৈতিক গতি, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ইত্যাদি। এক কথায়, সমুদ্রের জলরাশি, সমুদ্র সম্পদ ও সমুদ্রকে ঘিরে গড়ে ওঠা অর্থনীতিকে বলা হয় ‘ব্লু ওশান ইকোনমি’ বা সমুদ্র অর্থনীতি।

Blue Ocean Economy

জাতিসংঘের উদ্যোগে মেক্সিকোর রিও ডি জেনেরিও শহরে ২০১২ সালের ২০-২২ জুন অনুষ্ঠিত হয় টেকসই উন্নয়ন ও ধরিত্রী সম্মেলন (Rio+20)। এ সম্মেলনের মূল এজেন্ডা সবুজ অর্থনীতি হলেও এ সম্মেলন থেকেই উঠে আসে ব্লু ইকোনমি’র ধারণা। অফুরান প্রাকৃতিক সম্পদের এক বিশাল ক্ষেত্রে সমুদ্র। তেল-গ্যাসসহ মূল্যবান খনিজ পদার্থ, যেমন- কোবাল্ট, ম্যাগনেশিয়াম, তামা ছাড়াও বিপুল মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। আধুনিক বৈজ্ঞানিক কারিগরি সাফল্যের কল্যাণে সমুদ্র পরিণত হয়েছে অর্থনৈতিক সম্পদ আহরণের সূতিকাগারে। তাই অর্থনীতির বৃহদাংশ এখন সমুদ্র নির্ভর।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, মানব সভ্যতা সাগরের প্রতিবেশ ব্যবস্থা থেকে যে উপকার ভোগ করছে তার বার্ষিক অর্থমূল্য ৩৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব জিডিপিতে সমুদ্রের বার্ষিক অবদান ৭০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। অক্সিজেনের ৪০ ভাগই উৎপাদিত হয় এ মহা জলরাশির বুক থেকে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের ১.৫ বিলিয়ন জনগোষ্ঠীর ২০ ভাগ প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ করছে সমুদ্র। সাগরের মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী শুধু খাদ্য হিসেবেই নয়, বরং এদের ৪০ ভাগ অন্যান্য বিবিধ বিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সাগরের পানি প্রক্রিয়াজাত হয়ে বার্ষিক ২০০ মিলিয়ন টন লবণ উৎপাদিত হয়ে যোগ হচ্ছে বিশ্ব বাজারে। বিশ্বব্যাপী আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির অন্যতম উৎস সমুদ্রকেন্দ্রিক পর্যটন। বিশ্বে শুধু প্রবালভিত্তিক পর্যটন থেকেই বার্ষিক আয় প্রায় ৯.৬ বিলিয়ন ডলার। সমুদ্র অর্থনীতির মাধ্যমে একদিকে যেমন একটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, অন্যদিকে জিডিপি বৃদ্ধি করে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা যায়। এসব কারণে বিশ্বব্যাপী সমুদ্র অর্থনীতি জনপ্রিয় হচ্ছে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post