বীজগাণিতিক সূত্রাবলী
প্রাথমিক আলোচনা
বীজগাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্যে বীজগণিতের সূত্রাবলি ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে
প্রচলিত পাঠ্যসূচিতে মাধ্যমিক স্তর থেকে মূলত বীজগণিতের যাত্রা শুরু হয়েছে।
উপরন্তু সহজ এবং সূত্র নির্ভর হওয়ায় অধ্যায়টি সহজেই শিক্ষার্থীদের কাছে আনন্দের
সাথে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। শিক্ষানবিস থেকে শুরু করে চাকুরী ব্যবস্থায় প্রশ্ন
কাঠামোতে বীজগণিত একটি কমন ফ্যাক্টর। এই অধ্যায়ে আমরা বীজগাণিতিক সূত্রের
সাহায্যে সমস্যা সমাধান, বর্গ ও ঘনের সম্প্রসারণ এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানে
বীজগণিতিক সূত্রের গঠন ও প্রয়োগসহ বীজগণিতের খুঁটিনাটি বিষয় আলোচনা করব।
পাটিগণিতের মত বীজগণিতে বিভিন্ন প্রতীক ও চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন: a,
b, c, d, p, q, r, m, n, x, y, z ইত্যাদি। যেগুলো কখনো একক অর্থ বহন করে আবার
কখনো বিভিন্নতা প্রকাশ করে। এগুলো কে বলা হয় বীজগাণিতিক রাশি। বীজগণিতিক রাশি
সংবলিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এই সমস্ত বর্ণের ব্যবহার করা হয়।
বীজগাণিতিক রাশি : সংখ্যা নির্দেশক প্রতীক এবং প্রক্রিয়া চিহ্ন এর
অর্থবোধক বিন্যাসকে বীজগাণিতিক রাশি বলা হয়।
খেয়াল করুন :
- পাটিগণিতে শুধু ধনাত্মক সংখ্যা ব্যবহৃত হয়, অন্যদিকে বীজগণিতে ধনাত্মক, ঋণাত্মক এবং শূন্যসহ সকল সংখ্যার ব্যবহার করা হয়।
- আর এজন্য বীজগণিতকে পাটিগণিতের Generalized বা সর্বায়নকৃত রূপ বলা হয়।
- বীজগাণিতিক রাশিতে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলো কন্সট্যান্ট বা ধ্রুবক, যাদের মান নির্দিষ্ট।
- আর অক্ষর প্রতীককে চলক (Veriable) বলে এবং এদের মান নির্দিষ্ট নয়। এরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মান ধারণ করে।
বীজগণিত গণিতের একটি অপরিহার্য অংশ। বীজগণিত শব্দটি ইংরেজি শব্দ Algebra শব্দের
প্রতিশব্দ। এটি আরবি শব্দ 'আল জাবের' থেকে উদ্ভূত এবং গণিতের এই শাখা অর্থাৎ
বীজগণিতজ্ঞ জনক বলা হয় আল খোয়ারিজমিকে। নিম্নে বীজগণিতের গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো
আলোচনা করা হল।
বর্গ এর সূত্রাবলি
বর্গের ক্ষেত্রে:
$\left(a+b\right)^2=a^2+2ab+b^2$
মানে মাইনাস থাকলে:
$\left(a+b\right)^2=\left(a-b\right)^2+4ab$
বর্গের ক্ষেত্রে:
$\left(a-b\right)^2=a^2-2ab+b^2$
মানে প্লাস থাকলে:
$\left(a-b\right)^2=\left(a+b\right)^2-4ab$
মানে প্লাস থাকলে:
$a^2+b^2=\left(a+b\right)^2-2ab$
মানে মাইনাস থাকলে:
$a^2+b^2=\left(a-b\right)^2+2ab$
মানে প্লাস ও মাইনাস থাকলে:
$a^2+b^2=\frac{\left(a+b\right)^2+\left(a-b\right)^2}{2}$
উৎপাদক করতে, সূত্রের সাহায্যে গুণন এবং মানে প্লাস ও মাইনাস
$a^2-b^2=\left(a+b\right)\left(a-b\right)$
নোট: দুইটি রাশির বর্গের বিয়োগফল = রাশি দুইটির যোগফল × রাশি দুইটির বিয়োগফল
রাশি দুটিকে বর্গের অন্তররূপে প্রকাশ এবং মানে প্লাস ও মাইনাস থাকলে:
$ab=\left(\frac{a+b}{2}\right)^2-\left(\frac{a-b}{2}\right)^2$
মানে প্লাস ও মাইনাস থাকলে:
$4ab=\left(a+b\right)^2-\left(a-b\right)^2$
মানে প্লাস ও মাইনাস থাকলে:
$2\left(a^2+b^2\right)=\left(a+b\right)^2+\left(a-b\right)^2$
or, $2a^2+2b^2=\left(a+b\right)^2+\left(a-b\right)^2$
তিনপদের বর্গ নির্ণয়ে:
$\left(a+b+c\right)^2=a^2+b^2+c^2+2ab+2bc+2ca$
or, $\left(a+b+c\right)^2=a^2+b^2+c^2+2\left(ab+bc+ca\right)$
মান এবং বর্গের মান থাকলে:
$2\left(ab+bc+ca\right)=\left(a+b+c\right)^2-\left(a^2+b^2+c^2\right)$
ঘন এর সূত্রাবলি
মান নির্ণয়ে:
$a^3+b^3=\left(a+b\right)^3-3ab\left(a+b\right)$
উৎপাদক নির্ণয়ে:
$a^3+b^3=\left(a+b\right) \left(a^2-ab+b^2\right)$
মান নির্ণয়ে:
$a^3-b^3=\left(a-b\right)^3+3ab\left(a-b\right)$
উৎপাদক নির্ণয়ে:
$a^3-b^3=\left(a-b\right)\left(a^2+ab+b^2\right)$
ঘন নির্ণয়ে:
$\left(a+b\right)^3=a^3+3a^2b+3ab^2+b^3$
মান ও ঘন উভয় নির্ণয়ে:
$\left(a+b\right)^3=a^3+b^3+3ab\left(a+b\right)$
ঘন নির্ণয়ে:
$\left(a-b\right)^3=a^3-3a^2b+3ab^2-b^3$
মান ও ঘন উভয় নির্ণয়ে:
$\left(a-b\right)^3=a^3-b^3-3ab\left(a-b\right)$
এবার গুরুত্বপূর্ণ আরো ৪ টি সূত্র দেখুন যেগুলো দিয়ে বহুপদী রাশির জন্যে ব্যবহার
হয়:
$(x + a)(x + b) = x^2 + (a + b)x + ab$
$(x + a)(x – b) = x^2+ (a – b) x – ab$
$(x – a)(x + b) = x^2+ (b – a) x – ab$
$(x – a)(x – b) = x^2– (a + b) x + ab$
আশাকরি বীজগণিতের সূত্রগুলো আপনাদের কাজে আসবে। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে টপিক বেসড
লেখার সময় আমরা সূত্রগুলো আরো ভালোভাবে জানবো এবং এগুলো দিয়ে কিভাবে অংক করতে হয়
তা দেখব।