ভাষণ : সঞ্চয়ের অভ্যাস গঠন

সঞ্চয়ের অভ্যাস’ শীর্ষক সেমিনারে তুমি একজন বিশেষ বক্তা হিসেবে তোমার বক্তব্য উপস্থাপন কর।

অথবা,
বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস উপলক্ষে একটি বেতার ভাষণ তৈরি কর।


সঞ্চয়ের অভ্যাস

আজকের সেমিনারের মাননীয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি এবং উপস্থিত সুধীমণ্ডলী, গ্রামেই থাকুন বা শহরেই থাকুন, আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন দারুণ গরমে আপনি যখন হাঁপাচ্ছেন, তখন আপনার ঘরের দেয়াল বেয়ে সারি দিয়ে উঠে যাচ্ছে অসংখ্য পিঁপড়া। তাদের কারও মুখে ধানের বীজ, কারও মুখে একটা চাল, কারও মুখে একটা মরা ফড়িং। আপনি একটু ভেবে দেখলেই বুঝতে পারেন— বর্ষা আসন্ন বলে এরা আগে থেকেই সঞ্চয় করার কাজে ব্যস্ত।

সুধীবৃন্দ,
মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ জানে না, কিন্তু তার জীবনে যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্ত আসতে পারে। অসুখবিসুখ যেকোনো সময়ে হতে পারে। তখন রোগীর ওষুধের প্রয়োজন, পথ্যের প্রয়োজন, আর তার পরিবার-পরিজনের প্রয়োজন খাদ্যের। এক হাতে কামাই করে যারা দুহাতে ওড়ায় হয়তো তারা এটা ভেবে দেখেন না। ফলে এ ধরনের লোকের ওষুধ-পথ্য জোটে না, এদের পরিবারের লোকেরা নানা প্রকার অসুবিধায় পড়ে। অথচ ঐ ব্যক্তিই যদি নিজের আয় থেকে প্রতিদিন কিছু কিছু সঞ্চয় করতেন, তাহলে অসুখবিসুখে তার কোনো অসুবিধেই হতো না। ভবিষ্যতে ছেলেমেয়েরা বড় হবে, তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা- এসব প্রশ্নও আছে। তাই প্রথম থেকেই যদি কিছু সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে প্রয়োজনের সময় আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হয় না।

সুধীমন্ডলী,
আমাদের ব্যক্তিগত সঞ্চয় সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রকে সহায়তা করতে পারে। আপনি, আমি এবং আরও পাঁচজন মিলেই তো রাষ্ট্র। আমরা যদি সঞ্চয় করি, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমরা যেরূপ ধনী হয়ে উঠি, রাষ্ট্রও তেমনি ধনী হয়ে ওঠে। সঞ্চয়ের মাধ্যমে আমাদের গরিব দেশ শিল্পোন্নয়ন ও অন্যান্য খাতে ব্যয়ের জন্য বিপুল পরিমাণ মূলধন সংগ্রহ করতে পারে।

সুধী,
জনসাধারণের সঞ্চয়ের অভ্যাস বাড়ানোর জন্য সরকারি উৎসাহ প্রচুর। প্রাইজবন্ড, সঞয় সার্টিফিকেট, বোনাস সার্টিফিকেট ইত্যাদির ব্যাংকিং ব্যবস্থা তো আছেই। ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের লক্ষ্যে পিঁপড়া, মৌমাছি, কাঠবিড়ালি পর্যন্ত যখন সঞ্চয় করছে, তখন মানুষ হয়ে আপনি আমি সঞ্চয় করব না কেন? আসুন আমরা সবাই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলি। ধন্যবাদ।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post