মার্চের দিনগুলি

সাধারণ জ্ঞান : ফখরুখ আহমদ

ফখরুখ আহমদ

ফখরুখ আহমদ কবে জন্মগ্রহণ করেন? — ১০ ই জুন, ১৯১৮ সালে। 

তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? — মাঝআইল গ্রাম, যশোর। 

তিনি মূলত কী ছিলেন? — ইসলামী স্বাতন্ত্র্যবাদী কবি। 

তাঁর রচিত কবিতাসমূহে কোন বিষয়গুলো অধিকতর প্রাধান্য পেত? — পাকিস্তানবাদ, ইসলামী আদর্শ বিশেষত মুসলিম জাগরণ, এবং আরব–ইরানের ঐতিহ্যের। 

তাঁর রচিত কবিতাগুলো কেন বিশিষ্ট? — আরবি পারসি শব্দের প্রয়োগে নৈপুণ্যতা, বিষয়বস্তু ও আঙ্গিকের অভিনবত্বে। 

তাঁর রচিত কাহিনী কাব্যের নাম কী? — 'হাতেমতায়ী' (১৯৬৬)। 

'হাতেমতায়ী' কাহিনী কাব্য রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কী পুরস্কারে ভূষিত হন? — আদমজি পুরস্কার (১৯৬৬)। 

তিনি 'পাখির বাসা' নামক গ্রন্থের জন্য কী পুরস্কারে ভূষিত হন? — ইউনেস্কো (১৯৬৬)। 

তিনি আর কী কী পুরস্কারে ভূষিত হন? — বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক ইত্যাদি। 

তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের নাম কী? — 'সাত সাগরের মাঝি' (১৯৪৪)। 

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা কী ছিল? — মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ও পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে তাঁর অবস্থান ছিল। এরপরেও তাঁকে একুশে পদক (১৯৭৭) ও স্বাধীনতা পদক (১৯৮০) দেওয়া হয়। 

তাঁর রচিত কাব্যনাট্যের নাম কী? — 'নৌফেল ও হাতেম' (১৯৬১)।

তাঁর রচিত সনেট সংকলনের নাম কী? — 'মুহূর্তের কবিতা' (১৯৬৩)। 

তাঁর রচিত শিশুতোষ গ্রন্থের নাম কী? — 'পাখির বাসা' (১৯৬৫)। 

পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু প্রশ্নে তাঁর অবস্থান কী ছিল? — বাংলা ভাষার পক্ষে। 

পাকিস্তান বেতার–টিভিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তে তাঁর অবস্থান কী ছিল? — তিনি বন্ধ রাখার পক্ষে ছিলেন। 

তাঁর বহুল পরিচিত 'সাত সাগরের মাঝি' গ্রন্থের পরিচয় দাও। 
— বাংলাদেশের বাংলা কবিতার ধারায় ৪০ শের দয়কের কবি ফররুখ আহমদের ১ম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম 'সাত সাগরের মাঝি' (১৯৪৪)। এই কাব্যগ্রন্থে মোট ১৯ টি কবিতা স্থান পেয়েছে। "সাত সাগরের মাঝি" নামে গ্রন্থের সর্বশেষ কবিতাটি আছে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কবিতা হলো— সিন্দবাদ, পাঞ্জেরি, লাশ, আউলাদ, দরিয়ার শেষরাত্রি ইত্যাদি। এই গ্রন্থের কবিতা সমূহ ১৯৪৩–১৯৪৪ সালের মধ্যে রচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিরূপ প্রভাবে সমাজের ছবি যেমন— লাশ, আউলাদ ইত্যাদি সেজন্য কবিতায় পাওয়া যায়। তবে তিনি মূলত মুসলিম জনমনের ভেতর সচেতনতা জ জাগরণের লক্ষ্য মাথায় রেখে এসব রচনা করতেন। সেজন্যে কবি ত্যাগ করেছেন— বঙ্গীয় শব্দ ও অনুষঙ্গ, আরব্য উপন্যাস, ইরান–আরবের সংস্কৃতি ও পুরাণ কথা সমূহ। বাংলা প্রচলিত শব্দসমূহ পরিত্যাগ করে কবি তাই আরবি পারসি শব্দের বহুল প্রচলন করেছেন কবিতায়। এই কাব্যগ্রন্থ পড়লে পাঠক সহজেই ধরতে পারবে তিনি এমন একজন কবি যার জন্ম বাংলায় হলেও তার মনের বিচরণ থাকত আরব ইরান আরব সাহিত্যের দেশগুলোতে। এই কাব্যগ্রন্থের সব শব্দের অর্থ কোনো বাঙালি পাঠকের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাকে সব বুঝতে হলে 'আরবি পারসি বাংলা ডিকশনারি' নিয়ে বসতে হবে। তবেই পাঠক সকল অর্থ অনুধাবণ ও বুঝতে পারবেন। তবে কবিশক্তি থাকায় চমৎকার চিত্রকল্প, প্রতীক সৃজন ও কবি ভাষা নির্মাণ করতে পেরেছেন ফররুখ আহমদ। তাই যথাযথ অর্থ না বুঝলেও কবিতাগুলো পড়তে মন্দ লাগে না পাঠকের।  

তিনি কবে মৃত্যুবরণ করেন? — ১৯ শে অক্টোবর, ১৯৭৪ সালে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post