ভাষণ : আর্তমানবতার সেবায় তরুণ সমাজ

আর্তমানবতার সেবায় তরুণ সমাজ – তরুণদের সচেতন করার লক্ষ্যে এ বিষয়ে একটি ভাষণ রচনা কর।

অথবা, “আর্তমানবতার সেবায় তরুণ সমাজ”– বিষয়ে একটি ভাষণ রচনা কর।


“আর্তমানবতার সেবায় তরুণ সমাজ” শীর্ষক আলোচনা সভা

শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি উপস্থিত সুধীমণ্ডলী,
সমাজের সর্বাপেক্ষা সতেজ ও সজীবতম অংশ হলো তরুণ সমাজ তাদের চোখে জ্ঞানের মশাল, তাদের হৃদয়ে উদ্বেগ, ভাবাবেগ এবং ‘বাহুতে নবীন বল’, তারাই যুগে যুগে দেশে দেশে সমস্ত অসাধ্য সাধনের রূপকার, সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগামী বীর সেনানী। সবার আগে প্রাণ বিসর্জন দেওয়ার ডাক পড়ে তাদের। তার প্রমাণ মেলে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে, ’৬২ ও ’৬৪-এর আন্দোলনে, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে, ’৯০-এর গণবিস্ফোরণে এবং ’৮৮ ও ’৯৮-এর ভয়াবহ বন্যায় সমাজ যেখানে নানা কুসংস্কারে জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে অচলায়তনে পরিণত কিংবা নানা প্রাকৃতিক দৈব দুর্বিপাকে সমাজ যখন বিপর্যস্ত সেখানে সবার আগে এগিয়ে যায় তরুণ সমাজ।

সর্বদেশে সর্বকালে তরুণ সমাজ আশীর্বাদ না কুড়িয়ে পায় নিন্দা, যিয়ার, তিরস্কার; হয় উপেক্ষার পাত্র। অথচ তারাই যায় এগিয়ে, দেশের সংকটকালে সর্বাগ্রে তারাই প্রাণ দান করে, শহীদ হয়। সমাজের দুঃখ-দারিদ্র্যের অড়ত্বের অভিশাপ ছিন্ন করে অগ্রসরের প্রয়োজন অনুভূত হয়, তখন সমস্ত বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে প্রাণশক্তিতে বলীয়ান তরুণ সমাজই যায় সর্বপ্রথম এগিয়ে। সমাজের সেবায় তারা চির উৎসর্গীকৃত প্রাণ।

প্রিয় সুধী,
যখন কোনো প্রাকৃতিক দৈব-দুর্বিপাকে জনজীবনে ঘনিয়ে আসে দুঃখ-দুর্গতি, রোগ-শোকে জীবন যখন হয়ে ওঠে সংকটাপন্ন, তখন তরুণ সমাজই জীবন তুচ্ছ করে এগিয়ে যায় তাদের সংকট নিরসনে।

সুধীমণ্ডলী,
সমাজের এই সর্বাপেক্ষা প্রাণবন্ত অংশকে সামাজিক নেতৃত্ব সমাজসেবার নব নব পরিকল্পনার রূপায়ণে কোনো কালেই উদ্বুদ্ধ করেনি। তারা যা করে স্বেচ্ছাকৃতভাবেই করে। অথচ তরুণ সমাজের স্বার্থে সমাজকে বিশাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখার জন্য প্রকৃত অর্থ ব্যয় করতে হয়। সে অর্থ সামাজিক অর্থ। এ অর্থ ব্যয়ের জন্য তরুণ সমাজ সমাজের কাছে ঋণী। কাজেই কেবল বিধিনিষেধের জালে তরুণ সমাজকে বন্দি না রেখে অনুপ্রাণিত করা উচিত।

কেবল আত্মদানের জন্যই নয়, নিরক্ষতা দূরীকরণের একটি সুপরিকল্পিত কর্মসূচির রূপায়ণে তরুণ সমাজকে কাজে লাগালে এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে তাদের মতামতকে কার্যে প্রয়োগ করার প্রয়াস পেলে তরুণ সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধের উন্মেষ হবে এবং সমাজও তরুণ সমাজকে তাদের এই নিঃস্বার্থ সেবার জন্য আশীর্বাদ করবে। এই বিশ্বাস রেখে আমি এখানেই শেষ করছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post