মার্চের দিনগুলি

প্রতিবেদন : নিরক্ষরতার দূরীকরণের জন্যে তথ্যানুসন্ধান সংবলিত প্রতিবেদন

নিরক্ষরতার দূরীকরণের জন্যে কোনো বিশেষ এলাকার তথ্যানুসন্ধান সংবলিত একটি প্রতিবেদন।


২৬শে জুলাই, ২০১৯

বরাবর
পরিচালক
গণশিক্ষা কার্যক্রম 

বিষয় : নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্যে একটি বিশেষ এলাকার প্রতিবেদন। 

জনাব,
আপনার আদেশপ্রাপ্ত হয়ে (আদেশ নং: গ.শ.ক/২০১৯/৫৩) গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের নিরক্ষরতা দূরীকরণ। 

শিমুলতলী গ্রামের নিরক্ষরতা দূরীকরণ

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও আমরা এখনও নিরক্ষরমুক্ত হতে পারিনি। বাংলাদেশের অনেক এলাকা আছে যেখানে স্বাক্ষরতার হার আশাব্যঞ্জক নয়; তার একটি শিমুলতলী গ্রাম। এ এলাকা পরিদর্শন শেষে তথ্যানুসন্ধান পূর্বক তৈরি প্রতিবেদন নিম্নরূপ:

১. শিমুলতলী গ্রামটি এক বর্গকিলোমিটার এলাকার একটি ছোট গ্রাম। তবে গ্রামটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং এখানে সাক্ষরতার হার শতকরা ১৮ভাগ। শহর থেকে দূরে অবস্থিত গ্রামটি উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। গ্রাম থেকে নিরক্ষতার দূর করা সম্ভব না হলে এখানকার মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। সেজন্যে নিরক্ষতার দূরীকরণের লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।

২. স্বাক্ষরতার সম্প্রসারণের বেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা। শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গ্রামের লোকদের অবহিত করতে হভে। এ ব্যাপারে গ্রামের শিক্ষিত লোকেরা দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন।

৩. গণশিক্ষার জন্যে গণশিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। এর জন্যে বিত্তবান ব্যক্তিদের বাড়ির বৈঠকখানা সাময়িকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিরক্ষর মহিলারা বিকেলবেলায় সেখানে সমবেত হয়ে স্বাক্ষরতার পাঠ গ্রহণ করবেন। নিরক্ষর পুরুষেরা সন্ধ্যার পর পাঠ নেবেন।

৪. গণশিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবে স্কুল কলেজে পড়ছে এমন ছাত্রছাত্রীরা। তারা তাদের অবসর সময়ে বা ছুটির দিনে গণশিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকতার কাজ করবে। গ্রামের যে কজন শিক্ষিত লোক আছেন তাঁরাও এ দায়িত্ব পালন করতে পারেন। তবে শিক্ষকতার কাজটি হবে স্বেচ্ছামূলক এবং এতে কোনো সম্মানী থাকবে না। গণশিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে সাক্ষরতার প্রসার ঘটাতে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থা গণশিক্ষার ওপর কাজ করছে। তাদের উদ্ভাবিত পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ এক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫. স্বাক্ষরতা প্রসারের সাথে সাথে নব্য স্বাক্ষরদের চর্চা অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার পাশাপাশি জনগণকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে স্বাক্ষরতার সার্থকতা সম্পর্কে জনগণ অবহিত হতে পারবে। গ্রামীণ জীবনের উন্নয়নের জন্য সরকারের প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা এ গ্রামেও সম্প্রসারণ করা দরকার। কৃষি, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, জনসংখ্যা সমস্যা ইত্যাদি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে আর্থিক কর্মকান্ডের সাথেও তাদের সম্পৃক্ত করা দরকার। 

৬. শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। আমাদের জীবনে অনগ্রসরতা দূর করার জন্যেও দরকার শিক্ষার। গ্রামের লোকদের শিক্ষিত করে তোলার যে প্রচেষ্টা আজকে সারাদেশে পরিচালিত হচ্ছে, তার সুফল এ প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে দিতে হবে।

ওপরের সুপারিশকৃত পদ্ধতি অবলম্বন করলে স্বল্পসময়ের মধ্যে শিমুলতলী গ্রাম থেকে নিরক্ষরতা দূর করা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা: মঈনুল ইসলাম, মাঠকর্মী, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গাইবান্ধা জেলা শাখা।
প্রতিবেদনের শিরোনাম: শিমুলতলী গ্রামের নিরক্ষরতার দূরীকরণ 
প্রতিবেদনের সময়: সকাল ৯টা।
তারিখ: ২৬/৭/২০১৯

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post