অনুচ্ছেদ : গণিত অলিম্পিয়াড

গণিত অলিম্পিয়াড


আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন প্রতিযোগিতার নাম গণিত অলিম্পিয়াড। গণিত অলিম্পিয়াড মূলত প্রতিযোগিদের বুদ্ধিমত্তা ও গণিতের উপর পারদর্শিতার প্রতিযোগিতা। সর্বপ্রথম ১৯৫৯ সালে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয় রোমানিয়ায়। এরপর থেকে প্রতিবছর এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। শুধু ১৯৮০ সালে মঙ্গোলিয়ার অভ্যন্তরীণ গন্ডগোলের কারণে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয় নি। এই অলিম্পিয়াডে মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে এবং তার বয়স হতে হবে অনধিক ২০ বছর। এই শর্ত সাপেক্ষে যেকোন ছাত্র একাধিক বার গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতে পারে। এ পরীক্ষাটি হয়ে থাকে দু দিন ব্যাপি। প্রশ্নপত্রে ছয়টি সমস্যা থাকে। প্রতিটি সমস্যার জন্য সাত নম্বর বরাদ্দ থাকে। তাই এই পরীক্ষার পূর্ণমান হচ্ছে ৪২। মাধ্যমিক স্তরের গণিত থেকেই এ সমস্যা গুলো নির্ধারণ করা হয়। সমস্যাগুলো থাকে ছোট ও বিচিত্র। ফলে মাধ্যমিক স্তরের গণিত ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলেই এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করা সম্ভব। জ্যামিতি, বীজগণিত, সংখ্যাতত্ত্ব এবং কম্বিনেটরিক্স ইত্যাদি বিভাগ থেকে প্রশ্ন করা হয়। এই সমস্যাগুলো সমাধান প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জ্ঞান দিয়ে করা গেলেও প্রচুর অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়। প্রতিযোগিরা এক এক দিনে তিনটি সমস্যা সমাধান করার জন্য চার ঘন্টা সময় পায়। সমস্যা সমাধান করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিদের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। এই প্রতিযোগিতায় প্রায় ৯৯টি দেশ অংশগ্রহণ করে থাকে। প্রতিটি দলের সদস্য সংখ্যা থাকে ৬জন করে। উল্লেখ্য যে, প্রতিযোগিতায় কোন দলকে নাম্বার না দিয়ে প্রতিযোগিকে নাম্বার দেয়া হয়। প্রতিযোগিদের ব্যক্তিগত নাম্বারের উপর ভিত্তি করে র‍্যাংকিং নির্ধারণ করা হয়। পদকপ্রাপ্তির জন্য নুন্যতম এমন ভাবে নির্ধারণ করা হয় যাতে সোনা, রূপা, ব্রোঞ্জপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর অনুপাত প্রায় ১:২:৩ হয়। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডদের দল প্রেরণ করার জন্য প্রতিটি দেশই দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ, স্থানীয় বিভাগীয়, জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করার মাধ্যমে দল নির্বাচন করে থাকে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post