অনুচ্ছেদ : বসন্তকাল

বসন্তকাল


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। ঋতুবৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই এ দেশকে বলা হয় রূপসী বাংলা। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এদেশটি যেন ষড়ঋতুর এক অপূর্ব মিউজিয়াম। আর বাংলা বর্ষপঞ্জির সর্বশেষ ঋতুর নাম বসন্ত। ফাল্গুন ও চৈত্র এই দুই মাস বসন্তকাল। বসন্তকে বলা হয় ঋতুশ্রেষ্ঠ বা ঋতুরাজ। শীত শীত মাঘের শেষে শুরু হয় ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী গান। আসে সবুজ কচি কিশলয় শোভিত পুষ্প রাতির পরম লগ্ন। দখিনা হাওয়ায় ভরে যায় মন-প্রাণ। বাতাসে ফুলে ওঠে নৌকার রঙিন পাল। রঙিন হয়ে ওঠে নর-নারীর ঘরোয়া জীবন। নতুন পাতায় রোদ লেগে পান্নার মতো ঝলমল করে। বসন্তের গানের পাখি কোকিল ছড়িয়ে দেয় উদাস করা কুহুতান। ফুলে ফুলে প্রকৃতির নতুন সাজ। সুবাসমাখা বাতাসে মাতোয়ারা বাংলার প্রকৃতি। মন গেয়ে ওঠে ‘ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে.....।’ নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার ফলে সুখকর সময়কাটানো যায় এসময়। এ ঋতুতে অনেক উৎসব হয়, বিশেষ করে হিন্দুদের বাসন্তী পুজা। দোলযাত্রা, চৈত্রসংক্রান্তি প্রভৃতি উৎসব বিপুল সমারোহে অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বসন্তকালের প্রথম দিকেই ‘ভালোবাসা দিবস’ পালিত হয় মহা ধুমধামে এবং নগরকেন্দ্রিক বসন্ত উৎসবও আয়োজন করা হয় মহাসমারোহে। এ সবই ঋতুরাজ বসন্তের উপহার। রূপসী বাংলার এই অপরূপ রূপবৈচিত্র্য শহরবাসী ও শহরমুখী বাঙালিরা আজ খুব একটা অনুভব করতে পারে না সত্য কিন্তু ঋতুরাজ বসন্তের নিমন্ত্রণ ও বসন্তের দূত কোকিলের গান তাদের অন্তরে বেজে চলে নিরন্তর।

5 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post