একটি বর্ষণমুখর সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা

একটি বর্ষণমুখর সন্ধ্যার অভিজ্ঞতা বর্ণনা কর।

বাস গোয়ালন্দ অতিক্রম করার পরই মনে হলো কেমন একটা স্বব্ধ পরিবেশ। আকাশে দু চারটা কালো মেঘ ছড়ানো। কাশিয়ানি ঢুকতেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলো। আমি একা। একটু একটু ভয় পাচ্ছিলাম। প্রথমবার যাচ্ছি গোপালগঞ্জ শহরে। মুষলধারা বৃষ্টি শুরু হলো কীভাবে যাব, বাড়ি খুঁজে পাব কিনা, কোথায় কী করব ইত্যাদি ভাবনা উঁকি দিচ্ছে মনে। একটা কাগজে লেখা ছিল ঠিকানা আর টেলিফোন নম্বর, সেটাও ফেলে এসেছি বাসায়। তবে ভদ্রলোকের নাম মনে আছে, আর কোথায় জিজ্ঞেস করতে হবে সেটাও মনে আছে। এটুকুই ভরসা। মনকে সাত্বনা দিলাম, একটা কিছু ব্যবস্থা হয়েই যাবে। পুলিশ লাইনের কাছাকাছি আসতেই মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হলো। গাড়ি থামল সামনেই। ঘন্টাখানেক পর বৃষ্টি কমে এলো। নামছে অনেকেই। কিন্তু পানি জমে গেছে। রাস্তার পাশে অনেক দোকান। দোকানের ভেতরেও পানি। আমি নেমে ভারী ব্যাগটা হাতে নিলাম উঁচু করে। একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে বসে রইলাম। পথে রিকশা, স্কুটার কিছু নেই। রাত প্রায় ৯টা বাজে। বেশ কিছুক্ষণ পর একটা রিকশা এলো ব্যাটারিচালিত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তখনও হচ্ছে। রিকশাটাকে থামিয়ে উঠে পড়লাম। গন্তব্য সম্পর্কে ধারণা দিলাম, রিকশাওয়ালা বুঝল। রাস্তায় পানি। ঘোরানো পেঁচানো পথ পাড়ি দিয়ে একজায়গায় এসে থামল। আঙুল দিয়ে দেখাল এইতো মসজিদ, আপনি কার বাড়িতে যাবেন? নাম বললাম। সে বলল, 'উঠেন স্যার আপনেরে উনার বাড়ির সামনে নামাইয়া দিমু।' বাড়িওয়ালা বেরিয়ে এলেন। আমি তাকে চিনলাম না। বাড়িওয়ালা জানতে চাইলেন কার বাড়িতে যাব। আমি তার বর্ণনা দিয়ে পুরো নাম বললাম। তিনি চিনলেন এবং কীভাবে যেতে হবে রিকশাওয়ালাকে ভালো করে বুঝিয়ে দিলেন। রিকশাওয়ালা যখন আমাকে নামিয়ে দিল তখন রাত প্রায় এগারোটা এবং বর্ষণও থেকে গেছে।
إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم