৭ম শ্রেণি : হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : ৭ম সপ্তাহ : অ্যাসাইনমেন্ট : ২০২১

৭ম শ্রেণি : হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : ৭ম সপ্তাহ

তোমার পাঠ্যবইয়ের ২য় অধ্যায় ‘ধর্মগ্রন্থ’ পাঠ করে তুমি কীভাবে নিজ পরিবার ও সমাজ সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবে তার উপর একটি প্রবন্ধ লেখ।

সংকেত :
১। ধর্মাচরণ ও নৈতিকতায় পুরাণ
২। শ্রী শ্রী চন্ডীর মাহাত্ম্য ও ঘটনাসমূহ
৩। পাঠ্যপুস্তকের প্রতিটি পাঠ ভালো ভাবে পড়তে হবে।
৪। বানান ও বাক্য গঠনে সচেতন হতে হবে।
৫। উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য আনতে হবে।

নমুনা সমাধান

ধর্মগ্রন্থগুলো ধর্মের কথা বলে। ঈশ্বরের মাহাত্ম্য, দেব-দেবীর উপাখ্যান, সমাজ ও জীবন সম্পর্কে নানা উপদেশমূলক কাহিনী ধধর্মগ্রন্থের বিষয়বস্তু। বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত, শ্রীমদভগবগীতা, শ্রী শ্রী চন্ডী ইত্যাদি হচ্ছে আমাদের ধর্মগ্রন্থ।

ধর্মাচারণ ও নৈতিকতার পুরাণ: আমাদের প্রাতাহ্যিক জীবনে ধর্মগ্রন্থগুলোর অবদান অপরিসীম। প্রাচীন ঐতিহ্যের পুরাণগুলো ধর্মশাস্ত্রমতে গঠিত। পৌরাণিক ধর্মমতে সতু,অহিংসা,ক্ষমা,শান্তি ও ত্যাগ মানুষকে শ্রেষ্ঠতম আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। আর এসব গুণকে উপজীব্য করেই নানা গল্প,উপাখ্যানের মাধ্যমে জীবনকে সুন্দর করার উপদেশাবলি পুরাণশাস্ত্রে। সে সমস্ত উপদেশাবলি আমাদের নীতিবোধকে সজাগ করিয়ে দেয়। ধর্মের পথে চলতে সহায়তা করে। সবসময় ঈশ্বরকে স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য। তাহলে পাপ আমাদের স্পর্শ করতে পারবে না। পূণ্যপথে থাকল্ব মৃত্যুর পর আমরা স্বর্গের বিষ্ণুলোকে গমন করতে পারব। চিরন্তন বৈদিক আদর্শ, একেশ্বরবাদ, লৌকিক আচারনিষ্ঠ, জাতিভেদের সংস্কার থেকে মুক্তি প্রভৃতি পুরাণে আলোচনা করা হয়েছে। দক্ষযক্ষ অশ্বমেধ যজ্ঞ, মহিযাসুর বধসহ কত বর্ণাঢ্য জীবনের উত্থান পতনের কথা যে পুরাণে বর্ণিত রয়েছে তা বলে শেষ করা যায় না। সেসব বীরত্বপূর্ণ কাহিনী জীবনকে সুন্দর ও পরিপাটি করে গড়ে তুলতে অনুপ্রেরণা দেয়।

শ্রী শ্রী চন্ডির মাহাত্ম্য ও ঘটনাসমূহ: শ্রী শ্রী চন্ডি মার্কন্ডের একটি অংশ। মার্কন্ডের পুরাণের ৮৩ থেকে ৯৫ পর্যন্ত ১৩টি অধ্যায়ের নাম চন্ডী। চন্ডীতে ৭০০ মন্ত্র আছে। শ্রী শ্রী চন্ডিতে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্যের কাহিনী, দেবী মহামায়ার কাহিনী, দেবী অম্বিকা ও দেবী কালিকার উদ্ভব ও মহিমা বর্ণিত আছে। দুর্গাপূজা এবং বাসন্তি পূজায় বিশেষ করে চন্ডি পাঠ করা হয়। মহাভারতে অংশ হয়েও যেমন পৃথক গ্রন্থের মর্যাদা পেয়েছে গীতা তেমনি শ্রী শ্রী চন্ডিও মার্কন্ডের অংশ হয়ে পুরাণের অংশ হয়েছে। গীতার মতো চন্ডিও নিত্যপাঠ।

৩। পুরান ও শ্রীশ্রীচন্ডির শিক্ষার প্রভাব: পুরাণ হলো বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এক শ্রেণির ধর্মগ্রন্থ। পুরাণে সৃষ্টি দেবতাদের উপাখ্যান, ঋষি ও রাজাদের বংশ, পৃথিবীর ভৌগোলিক পরিচিতি, তীর্থমাহাত্ম, দান, ব্রত, তপস্যা, আর্যুবেদ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে বেদভিত্তিক হিন্দুধর্মে সমাজের নানা কথা বলা হয়েছে। পুরাণের গল্প গুলোর মূল উদ্দেশ্যে হলো ধর্মজীবন ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া। মানুষের কল্যাণকর সুন্দর জীবন সম্পর্কে গল্পের মাধ্যমে উপদেশ ও নীতিশিক্ষা পুরাণে রয়েছে। শ্রী শ্রী চন্ডিতে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্যের কাহিনী, দেবী মহামায়ার কাহিনী, দেবী অম্বিকা ও দেবী কালিকার উদ্ভব ও মহিমা বর্ণিত আছে। শ্রী শ্রী চন্ডি অর্থাৎ দেবীদুর্গা মাতৃশক্তিরূপে অধিষ্টিত।  এজন্য সকল প্রকার দুঃখ দুর্গতির অবসানকালে তার আরাধনা করা হয়। এর আরাধনার মাধ্যমে শত্রুর কবল থেকে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করার অনুপ্রেরণা যোগায়। দেবীদুর্গা অন্যায়কে দমন করেন। চন্ডি হলো স্বর্গহারা দেবতাদের ঐক্যের সম্মিলিত তেজ বা শক্তি। যা আমাদের সাহস যোগায়। এখানেই একতাই শান্তি এর প্রমাণ মেলে। এছাড়া হিন্দুধর্মে নারীকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর বন্দনা করে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করা যায়। সকল প্রকার দুর্গতি নাশিনি বলেই শ্রীদুর্গা। এর আদর্শ অনুসরন করে সকলে অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখবে। দেশ ও সমাজ সুন্দর করে গড়ে তুলবে।


আরো দেখুন :
إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم