মার্চের দিনগুলি

রচনা : বাংলাদেশের জাতীয় পাখি : দোয়েল - PDF

ভূমিকা : সজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা চিরসবুজের দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। বাংলার সবুজ প্রকৃতি জুড়ে গাছের ডালে-ডালে, মাঠে-ঘাটে ও নীলাকাশে ডানা মেলে উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজারো রকমের চেনা-অচেনা পাখি। এসবের মধ্যে দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। 

আকার ও প্রকৃতি : দোয়েল পাখি আকারে ছোট। এরা খুবই চঞ্চল ও অস্থির প্রকৃতির। ছোট্ট ও পাখিটি লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। এরা কোথাও স্থিরভাবে বসে থাকে না। এর গলার নিচ থেকে দুধের মতো সাদা পালক রয়েছে, যা বুক পর্যন্ত নেমে এসেছে। এর পা দুটি সরু এবং একটি লেজ ও দুটি ডানা আছে। এর ঠোঁটটি সরু ও সূচালো। পাখা ও লেজের মধ্যে কয়েকটি সাদা পালক ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে, যা সহজেই আমাদের মন কেড়ে নেয়। 

প্রজননকাল : এপ্রিল থেকে জুলাই মাস দোয়েল পাখির প্রজননকাল। তখন স্ত্রী দোয়েল ৩ থেকে ৫টি ডিম দেয়। ডিমের রং লালচে বাদামি আভা ও ছোপযুক্ত নীলাভ সবুজ হয়ে থাকে। স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয় ও বাচ্চা ফোটায়। 

খাদ্য : দোয়েল পাখি সাধারণত ছোট ছোট পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ ধরে ধরে খায় এবং অনেক সময় মাটি হতে ঠোকরিয়ে ঠোকরিয়ে কেঁচো উঠিয়ে খায়। এরা সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। 

গানের পাখি : সাধারণত দোয়েলকে গায়ক পাখি বলা হয়। এরা গান গায় এবং আস্তে আস্তে শিসও দেয়। প্রজনন ঋতুতে পুরুষ দোয়েল খুব ভোরে ও পড়ন্ত দুপুর বেলায় সুরেলা গলায় খুব জোরে গান গায়। 

বাসস্থান : দোয়েল গাছের ডালে বাসা বাঁধতে পারে না। এরা সাধারণত গাছের ফোকরে কিংবা ফাটলে খড়-কুটো জমা করে বাসা তৈরি করে। এরা জোড়ায় জোড়ায় বাস করে। বাংলাদেশের সর্বত্রই এই পাখি দেখতে পাওয়া যায়। 

জাতীয় পাখি হিসেবে দোয়েল : দোয়েল বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। শান্ত নিরীহ, অল্পে তুষ্ট আর সদানন্দ স্বভাবের এ পাখিটি বাঙালি স্বভাবের সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ পাখির রয়েছে সুমধুর কণ্ঠ। এর কণ্ঠের যাদু পাখিপ্রেমী লোকদের সহজেই আকৃষ্ট করে। এর স্বভাব-প্রকৃতি অত্যন্ত সুন্দর ও নির্মল। সুন্দর স্বভাবের জন্য এর যথেষ্ট কদর রয়েছে। পাখিপ্রেমী মানুষের নিকট এটির চাহিদা ব্যাপক। তাইতো দোয়েলকে জাতীয় পাখির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। 

পোষ মানে : শান্ত প্রকৃতির দোয়েল পাখি পোষ মানে। পোষা পুরুষ দোয়েল শিকার ধরতে খুবই পটু। শিকারী যখন খাঁচা থেকে এনে মুক্ত করে সুবিধাজনক স্থানে ছেড়ে দেয় তখন সে শাখায় বসে শিস দেয়। আর তখনি বন্য দোয়েল তার নিকট ছুটে আসে। তখনি শুরু হয় তুমুল লড়াই। এক পর্যায়ে বন্য দোয়েলটি শিকারির ফাঁদে পড়ে যায়। 

উপসংহার : প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিটি পাখিরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দোয়েলও ভারসাম্যপূর্ণ এই প্রাকৃতিক পরিবেশের একটি অন্যতম সদস্য। বাংলার সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির সাথে এ পাখিটি মিশে আছে। এর সুললিত মিষ্টি সুরের গান আমাদের সবাইকে মোহিত করে, আমরা মোহাবিষ্ট হই। তাই দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি।



আরো দেখুন :

7 تعليقات

  1. খুব কঠিন রচনা

    ردحذف
    الردود
    1. আপনাকে কে বলেছে(ন) এটি কঠিন রচনা?

      حذف
  2. Thank you it helped me a lot in exam

    ردحذف
  3. অনেক ধন্যবাদ। রচনাটি অনেক উপযোগী।

    ردحذف
  4. Rocona na ti kub sundor O sohoj amar kub valo lagaca 🥰❤

    ردحذف
إرسال تعليق
أحدث أقدم