ভাবসম্প্রসারণ : শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড

মূলভাব : শিক্ষা অমূল্য সম্পদ। একটি জাতির বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য শিক্ষার ভূমিকা অপরিহার্য। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড ও উন্নতির পূর্বশর্ত। মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে মেরুদণ্ডের অপরিহার্যতা অপরিসীম। মেরুদণ্ড ছাড়া মানুষ যেমন চলাচল করতে পারে না, তেমনি শিক্ষা ছাড়া একটি জাতি উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করতে পারে না। মেরুদণ্ডহীন প্রাণী যেমন পরমুখাপেক্ষী হয়ে জীবন কাটায় তেমনি শিক্ষাহীন একটি জাতি পরমুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে।

সম্প্রসারিতভাব : মানবজীবন তথা জাতীয় জীবনে নিরক্ষরতার মতো নারকীয় অভিশাপ আর নেই। বিদ্যাহীন মানুষ পশু সমতুল্য। তাই কবি বলেছেন- “বিদ্যাহীন মানুষ পশুর সমান”। শিক্ষা মানুষকে সত্যিকার মানুষরূপে গড়ে তুলতে সাহয্য করে। আর শিক্ষাহীনতা মানুষকে অমানুষ করে তোলে। তাই আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করে প্রথমেই জ্ঞান দান করেন এবং শিক্ষার ‍গুরুত্ব প্রতিপন্ন করতে তিনি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর ওপর কুরআনের প্রথম বাণী নাযিল করেন ’ইকরা’ অর্থাৎ ‘পড়’। বিশ্বনবি (স) বলেছেন, “শিক্ষালাভের জন্য সুদূর চীনদেশে যেতে হলেও যাও।” মহানবি (স) আরও বলেছেন- “শহীদের রক্তের চেয়ে বিদ্বানের কলমের কালির মূল্য ও মর্যাদা অনেক বেশি।” নিরক্ষরতা সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, জগতের শত্রু, এবং আল্লাহর শত্রু। দেশমাতৃকার উন্নতির জন্য তাই সর্বপ্রথম প্রয়োজন দেশের আপামর জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলা। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- Education is the backbone of a nation. তাছাড়া যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। সাম্প্রতিক বিশ্ব মানুষের শক্তি ও কর্মের প্রভাবে প্রভাবিত। এ শক্তি মানুষ শিক্ষার সাহায্যে লাভ করেছে। মানুষ বিবেকবান জীব। পশুপাখির চেয়ে সে উন্নততর। এ শিক্ষা ও জ্ঞানের সাহায্যে সে অন্য প্রাণীর ওপর প্রভুত্ব করতে পারছে। জাপান বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। অথচ জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। কিন্তু নিরলস পরিশ্রম, শিক্ষা ও বুদ্ধির দ্বারা আজ তারা উন্নত আমেরিকানরা সারা বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে শুধুমাত্র শিক্ষার দ্বারা। শিক্ষাহীনতা তথা নিরক্ষরতার কারণে সকল দেশের রানি আমার জন্মভূমি জননী আর ভিখারিনী, কাঙালিনী। তাই শিক্ষাকে সহজলভ্য করে প্রতিটি মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার উপায় আমাদের উদ্ভাবন করতে হবে। তবেই দেশের জনগণ শিক্ষিত হবে। আর জনগণ শিক্ষিত হলে দেশ ও জাতি উন্নত হবে।

মন্তব্য : যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। অশিক্ষিত কোনো জাতি বিশ্বের বুকে উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। তাই দেশ ও জাতির উন্নয়নের জন্য সকলকেই শিক্ষিত হতে হবে।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


মূলভাব : মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি শিক্ষাহীন কোন জাতিকেও গণনা করা হয় না।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ মেরুদণ্ডী প্রাণী। এ মেরুদণ্ডের সাহায্যে মানুষ একস্থান হতে অন্য স্থানে সঠিকভাবে চলাফেরা করে। কিন্তু মেরুদণ্ডহীন মানুষের জীবন হয় অর্থহীন। কারণ তারা সমাজের কোন কল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে না এবং অন্যের গলগ্রহ হয়ে জীবন কাটানো ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকে না।

শিক্ষা জাতীয় জীবন তথা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব বিস্তার করে। বর্তমানে পৃথিবীর সামগ্রিক উন্নতির একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে শিক্ষা। এ শিক্ষার ফলেই মানুষ নিত্য নতুন আবিষ্কার করছে অকল্পনীয় জিনিস পত্র। তাই বলা হয়ে থাকে, ‘কোন দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করতে হলে প্রথমে তার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে হবে।’ কোন জাতিকে শক্তিশালী করার পিছনে একমাত্র শিক্ষাই বেশি প্রভাব বিস্তার করে। কারণ শিক্ষার ফলেই মানুষ কুসংস্কার ও হীনতা মুক্ত হয়। তাই শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মানুষের জ্ঞানের উদ্ভব ঘটে। মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্য জ্ঞানের সহায়তা অপরিহার্য।


এই ভাবসম্প্রসারণটি অন্য বই থেকেও সংগ্রহ করে দেয়া হলো


ভাবসম্প্রসারণ : পৃথিবীতে মানুষকে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। জীবনে চলার পথে পদে পদে রয়েছে নানা বাধাবিঘ্ন। এসব বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়। মানুষ তার অন্তরের ইচ্ছাশক্তি দ্বারা সকল বাধাকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে। যে মানুষের ইচ্ছাশক্তি প্রচণ্ড শক্তিশালী, সকল বাধা তার কাছে নতিস্বীকার করে। মানবজীবনে বাধা আসবেই, সেজন্যে প্রয়ােজন। আত্মশক্তিতে বলীয়ান হওয়া। মানব চরিত্রে একাগ্রতা, ধৈর্য, অধ্যবসায় ও আগ্রহ ইচ্ছাশক্তির দ্বারাই পরিপূর্ণতা লাভ করে। মানব সভ্যতার যে দুত অগ্রগতি ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে- এর মূলে কাজ করেছে মানুষের ইচ্ছাশক্তি। ইচ্ছার বলেই মানুষ আকাশ-পাতাল এমনকি সমগ্র পৃথিবীকে জয় করেছে। ইচ্ছা না থাকলে মানবজীবন এত সুন্দর ও সার্থক হতাে না। ইচ্ছাহীন জীবন অর্থহীন। ইচ্ছাশক্তি প্রবল হলে জীবনে সাফল্যও তত দ্রুত হয় । ইচ্ছাশক্তিই মানুষকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছে দেয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে জনগণের প্রবল ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তির কারণে। দেশের আপামর জনগণ দৃঢ় প্রতিজ্ঞতাবদ্ধ হয়েছিল শত্রুকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে। সেই জন্যে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল এবং জীবন বিসর্জন দিতে দ্বিধা করেনি। আত্মশক্তিতে বলীয়ান ইচ্ছাশক্তির কাছে সেই দিন শত্রুরা মাথা নত করেছিল। প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে পরাধীন জাতি সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে দেশকে স্বাধীন করেছে । ইচ্ছা থাকলে যেকোনাে অসাধ্য কাজ সহজে করা সম্ভব। পৃথিবীতে আজ যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের জয়জয়কার তার পেছনের চালিকাশক্তি প্রবল ইচ্ছা।

ইচ্ছাশক্তিই হচ্ছে মানুষের সকল কাজের ও সাফল্যের মূল শক্তি। মানুষের প্রবল ইচ্ছাশক্তির সাহায্যেই পৃথিবী উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে। তাই ইচ্ছাশক্তি যত প্রবল হবে সফলতা অর্জন তত নিকটে।

13 تعليقات

  1. খুব সুন্দর হয়েছে ।

    ردحذف
  2. Thank you very much... actually I am a little 9 years old girl,who doesn't knows how to write this. Thank you very much uncle

    ردحذف
  3. Dhonnobad
    Thank you ��������������������������������������������������������������������

    ردحذف
  4. just wow☺️

    ردحذف
  5. Hello I am Abdullah Anwar15 مارس 2023 في 12:13 ص

    Thank you so much

    ردحذف
إرسال تعليق
أحدث أقدم